শিরোনাম
বিশ্বব্যাংক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক এখনো বহাল,ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মা সচিবদের ক্ষমতা! ৯ কারাগারে ৭৫ ভিআইপি বন্দী,আসাদুজ্জামান নূর ও কামাল মজুমদার হাসপাতালে জাতীয় ঐক্যের ডাক সশস্ত্রবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাদের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদসহ গুরুত্ব পাচ্ছে ২০ বিষয় রাঙ্গামাটি পৌর প্রাঙ্গণে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ বন্ধ, পৌর সম্পদ দখলের ষড়যন্ত্র, ১২ কোটি টাকার টেন্ডারের কাজ পেতে চাপ সৃষ্টি করছে বিএনপি খাগড়াছড়িতে ঘরে ঢুকে নারীকে নৃশংসভাবে হত্যা,স্বর্ণালঙ্কার চুরি শেখ হাসিনা আবারো রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছেন! ‘ছাত্র-জনতার ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে পুলিশকে নতুন করে দেশ গড়ার সুযোগ করে দিয়েছে’–খাগড়াছড়িতে রেঞ্জের ডিআইজ রাঙ্গামাটি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও ডিজিএফআই এর কর্নেলের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত অবশেষে আপন নীড়ে অসহায় সেই বৃদ্ধ

খাগড়াছড়িতে পাঁচ বছর বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও মাসিক বেতন তুলেছেন শিক্ষক

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৪৬ দেখা হয়েছে

খাগড়াছড়ি:- খাগড়াছড়ি’র পানছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার দেব। সবার কাছে পরিচিত বিজয় মাস্টার নামে। রাজনীতিগত পরিচয়ের বাইরেও কাগজে কলমে তিনি পানছড়ির পুজগাং মুখ উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক।

তবে গত পাঁচ বছর ধরে বিদ্যালয়ের কোনো শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ ছিলো না তার। বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও মাসে মাসে ঠিকই বেতন উত্তোলন করেছেন তিনি। মাঝে মাঝে কেবল বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশ নেন উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার দেব।

বছরের পর বছর শিক্ষার্থীদের পাঠদান না করে বেতন উত্তোলন করলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ইন্দ্র লাল চাকমা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিজয় কুমার দেব ১৯৯৪ সালের দিকে পুজগাঙ মুখ উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তখন বিদ্যালয়টি বেসরকারি ছিল। বর্তমানে এমপিওভুক্ত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হিসেবে প্রতিমাসে সরকারি কোষাগার থেকে ৩২ হাজার ৩৯০ টাকা বেতন উত্তোলন করেন বিজয় কুমার দেব। এ ছাড়াও বিদ্যালয় কোষাগার থেকে প্রতিমাসে উত্তোলন করতেন ৭ হাজার ১০০ টাকা। যদিও প্রধান শিক্ষক বলছেন গত তিনমাস ধরে বিদ্যালয় কোষাগার থেকে দেওয়া সম্মানি বন্ধ করেছেন তিনি।

বিদ্যালয়ে যোগদানের পর নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিতেন বিজয় কুমার দেব। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও ছিলেন বেশ সক্রিয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক তৎপরতা আরও বাড়িয়ে দেন। ধীরে ধীরে বিদ্যালয়ের উপস্থিতি কমতে থাকে তার। ২০১৯ সালে তিনি পানছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ে আসা একেবারেই বন্ধ করে দেন। গত পাঁচ বছরে একদিনের জন্যেও কোনো শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেননি তিনি।

সরেজমিনে পুজগাং মুখ উচ্চ বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বসার কক্ষের দেওয়ালে টানানো সেশন রুটিনে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে বিজয় কুমার দেবের নাম থাকলেও তাকে কোন শ্রেণি পাঠদানে যুক্ত করা হয়নি। অন্য সকল শিক্ষকদের নামের পাশে শ্রেণী পাঠদানের সময় ও বিষয় উল্লেখ থাকলেও বিজয় কুমার দেবের নামের পাশে ফাঁকা রাখা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া নিক্সন চাকমা, উজ্জ্বল চাকমা এবং ৯ম শ্রেণি পড়ুয়া রিমঝিম চাকমা জানায়, তারা এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত শিক্ষক বিজয় কুমার দেবকে কখনোই তাদের কোনো ক্লাস নিতে দেখেনি। তারা জানেও না যে বিজয় কুমার দেব তাদের বিদ্যালয়েরই শিক্ষক।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নির্ণয় চাকমা, দেবাশীষ চাকমা ও তথো মনি চাকমা জানান, বিজয় কুমার দেব শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ না নিলেও বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাকে অতিথি হয়ে উপস্থিত থাকতে দেখেছেন তারা।

গত পাঁচ বছরে একদিনও বিদ্যালয়ে ক্লাস নেননি স্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্র লাল চাকমা বলেন, তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তিনি বেতন উত্তোলন করতেন। এমপি, মন্ত্রীর কাছের লোক হওয়ায় আমাদের কথার পাত্তা দিতেন না তিনি।

তিনি আরও জানান, সরকার পতনের পর থেকে বিজয় কুমার দেব চিকিৎসা ছুটিতে রয়েছেন। তার পা ভাঙা বলে ছুটির আবেদনে উল্লেখ করেছেন।

এ বিষয়ে পানছড়ি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অরূপ চাকমা ও পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌমিতা দাশ’র নিকট জানতে চাইলে তারা কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হননি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকার পতনের পর পানছড়িসহ জেলার বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত পাঁচটি মামলা হয়েছে। তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নাম্বারটিও বন্ধ রয়েছে। মূলত গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে গত তিনমাস ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions