শিরোনাম
রাঙ্গামাটির চম্পকনগরে অগ্নিকান্ডে ক্ষয়ক্ষতিদের পাশে জীবন ইয়ুথ ফাউন্ডেশন সীমানা জটিলতা ৬২ আসনে,এসব আসনের পরিবর্তন এসেছিল ২০০৮ সালে, নির্বাচনের আগেই সমাধান চেয়ে অর্ধশত আবেদন পটিয়া প্রেসক্লাবের নির্বাচন স্থগিত রাঙ্গামাটির সাজেকে পর্যটকদের ঢল, খালি নেই কোনও রিসোর্ট খাগড়াছড়িতে জিপ উল্টে নিহত ১ সাড়ে ১২ বছরের কম বয়সী মুক্তিযোদ্ধা ২১১১, বাদ যাচ্ছে নাম হদিস নেই ১৬৩টি অস্ত্র ও ১৮ হাজারের বেশি গুলির,লুণ্ঠিত অস্ত্রের বেশীর ভাগ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠনের হাতে জেলা পর্যায়ে বিজয় মেলা ছয় দিন ও উপজেলা পর্যায়ে এক দিন : ডিসি র‌্যাব বিলুপ্তিসহ পুলিশ সংস্কারে বিএনপির ৫ সুপারিশ মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষা ১৭ জানুয়ারি, আবেদন শুরু মঙ্গলবার

তিন সন্তানই বিসিএস ক্যাডার

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ২১৯ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ১৯৭১ সালে দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলেই ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ালেখা করা অবস্থায় বন্ধ করতে হয় স্কুল। তারপর দেশ স্বাধীনের তিন বছরের মাথায় অল্প বয়সেই হারান বাবাকে। পড়ালেখা বন্ধ করে সেই বয়সেই পাড়ি জমান স্বামীর সংসারে। কোল আলো করে এক এক করে জন্ম নেয় দুইকন্যা সন্তান। কিন্তু মায়ের ভরা কোল খালি করে দুই জনই মারা যায়। আদরের সন্তানদের হারিয়ে ভেঙে পড়েন অসহায় মা। তবে তার খালি কোল আবার ভরে উঠে। জন্ম নেয় দুই মেয়ে এক ছেলে। নানা প্রতিকূলতার কারণে নিজে পড়ালেখা করতে না পারলেও তিন সন্তানকে করেছেন উচ্চ শিক্ষিত। তাঁরা তিনজনই হয়েছেন বিসিএস ক্যাডার। লড়াই করে এতো দূর আসা এ সফল জননীর নাম রোকেয়া বেগম।

গর্বিত এ মা ২০২৩ সালের মা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নির্বাচিত হয়ে চট্টগ্রাম জেলায় সেরা পাঁচ জয়িতার একজন হয়েছেন। সফল জননী ক্যাটাগরিতে আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন, তৈলারদ্বীপ গ্রাম থেকে জয়িতা সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। আলাপকালে রোকেয়া বেগম বলেন, আমার জন্ম ১৯৬১ সালে। এক ভাই তিন বোনের মধ্যে আমি দ্বিতীয়। ১৯৭১ সালে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ালেখা করছিলাম। তখনই দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। যেকারণে ইচ্ছে থাকলেও আর পড়াশোনা করা হলো না। তারপর ১৯৭৫ সালে বাবা মারা যায়। একই বছর বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসাইনের সাথে আমার বিয়ে হয়। ১৯৮০ সালে আমার ১ম কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। এক বছরের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। তার দুই বছর পর ২য় কন্যা সন্তান হয়। সেও টাইফয়েড জ্বরে মারা যায়। দুঃখ যেন আমার পিছু ছাড়ছে না। এরপর ৩য় কন্যা সন্তান হয়। আবার ছেলে সন্তান এবং ৫ম কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। তার ঠিক কয়েক বছর পর স্বামী স্ট্রোক করে প্যারালাইজড হয়ে মারা যায়। ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে তখন অনেক বিপদে পড়ি। সংসারে অভাব অনটন দেখা দেয়। কারণ সন্তানদের পড়ালেখার খরচ, ভরনপোষণ, আনুষঙ্গিক সব মিলিয়ে দুর্দশাগ্রস্ত আমি। যে কারণে আমার বড় মেয়েকে মাত্র উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলেই বিয়ে দিয়ে দিই। এদিকে ছোট ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে চরম কষ্টে দিন কাটাই।

তিনি বলেন, এমন দুর্দিনে আমার আত্মীয় স্বজনদের অনেককেই পাশে পেয়েছি। পাশাপাশি নিজের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যাই। এরপর ধরা দেয় সুদিন। ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছেলে এমবিএ এবং বড় মেয়ে এমএসএস পাশ করে। দু’জনই ৩৫তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে নির্বাচিত হয়। বড় মেয়ে আইরিন আক্তার, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (রাজস্ব, জেনারেল সার্টিফিকেট শাখা) রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত আছে। ছেলে মোহাম্মদ মঈনুল হোসেন চৌধুরী সিনিয়র সহকারী কমিশনার (উন্নয়ন শাখা) বিভাগীয় কমিশনার অফিস চট্টগ্রামে কর্মরত আছে। এছাড়া ছোট মেয়ে ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এসবিবিএস পাশ করে ৩৯তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে কর্মরত আছে। বর্তমানে সে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের রেডিওলজি বিভাগে এমডিএমএস কোর্সে অধ্যয়নরত আছে। স্বামী মৃত্যুর পর ১০-১২ বছরের সংগ্রাম দুঃসহ বেদনা যা ভুলার মত নয়। আমার সন্তানদের এই অবস্থায় নিয়ে আসার জন্য আমার পরিশ্রম ও আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতায় আল্লাহর মেহেরবানিতে সম্ভব হয়েছে।

রোকেয়া বেগম বলেন, আমি সমাজের অন্য মায়েদের বলবো যেকোনো পরিস্থিতিতে মনোবল শক্ত রেখে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। যদি উদ্দেশ্য ভালো হয় তবে কষ্ট একদিন সফল হবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions