বোর্ড পরীক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রামের পাসের হার হ্রাস পাওয়ায় পিসিপির উদ্বেগ প্রকাশ অবিলম্বে শিক্ষার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা ও শিক্ষক সংকট নিরসনের দাবি

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১৪৮ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- বোর্ড পরীক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রামের পাসের হার হ্রাস পাওয়ায় পিসিপির উদ্বেগ প্রকাশ অবিলম্বে শিক্ষার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা ও শিক্ষক সংকট নিরসনের দাবি
২০২৩ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় বোর্ড পরীক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রামে পাসের হার হ্রাস পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)। শিক্ষার বিপর্যয় রোধে শিক্ষা মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা, শিক্ষক সংকট নিরসন, বিশেষ শিক্ষা বোর্ড গঠন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ছাত্রাবাস চালু করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর ২০২৩) পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অঙ্কন চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গত ২৬ নভেম্বর ২০২৩ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফলে দেখা গেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাসের হার গত বছরের তুলনায় অনেক পিছিয়েছে। এর আগে মাধ্যমিক বোর্ড পরীক্ষায়ও এ অঞ্চলে পাসের হার কমেছে। প্রতি বছর দেশের অপরাপর অঞ্চলের চেয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পাশের হারে পিছিয়ে থাকলেও সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সমাধান বা উত্তরণের জন্য উপযুক্ত কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষার বেহাল অবস্থা ও দিন দিন বিপর্যয়ের পথে ধাবিত হচ্ছে। তাই আমরা পাহাড়ে শিক্ষার বিপর্যয় রোধকল্পে শিক্ষার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা, শিক্ষক সংকট নিরসন, বিশেষ শিক্ষা বোর্ড গঠন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ছাত্রাবাস চালু করার দাবি জানাচ্ছি।

পাহাড়ে শিক্ষা ব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরে নেতৃদ্বয় বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্যে চলছে। এর সাথে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, এমপি, মন্ত্রী এবং সরকারে প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই জড়িত রয়েছে। পাহাড়ে একদিকে শিক্ষার গুণগত মান নেই, অপরদিকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে অদক্ষ-অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার এই বেহাল অবস্থার কারণে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হারও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রথম আলোর (০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩) এক অনুসন্ধানী প্রতিবদনে পাহাড়ে প্রাথমিকের পর ৪০ শতাংশ শিশু ঝরে পড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যুগান্তরের (১৯ নভেম্বর ২০২৩) এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজে ‘‘সাড়ে ০৫ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র ২৩ জন শিক্ষক” নিয়ে পাঠদান চলছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও বান্দরবান-রাঙামাটি সদরের কলেজগুলোতেও ব্যাপক শিক্ষক সংকট এবং ছাত্রাবাস, অবকাঠামো ও পর্যাপ্ত লোকবলের অভাব রয়েছে। নেই বিজ্ঞান বিভাগের পর্যাপ্ত শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের গবেষণাগার ও পর্যাপ্ত উপকরণ।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ, পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে চলমান এসব সংকট নিরসনে সরকার ও শিক্ষামন্ত্রণালয়কে যথাপোযুক্ত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার মুখে উন্নয়নের বুলি আওড়ালেও দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার শিক্ষা-স্বাস্থ্যর মতো বিষয়গুলো উপেক্ষা করে রাখা হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে জাতিসত্তাগুলোর মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হলেও পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের অভাবে আলোর মুখ দেখছে না। নিজস্ব মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণে প্রতিবন্ধকতা, বাংলা ভাষায় শিক্ষা গ্রহণে দুর্বোধ্যতা, পাহাড়ে অর্থনৈতিক দারিদ্র্যতা, পর্যাপ্ত স্কুল-কলেজ ও ছাত্রাবাস সংকট এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় বোর্ড পরীক্ষার ফলাফলে বিপর্যয় তৈরি করেছে। কাজেই, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ মনে করে, দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে পিছিয়ে পড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষার বিপর্যয় রোধ করার বিশেষ শিক্ষা বোর্ড চালু করা জরুরী।প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions