ডেস্ক রির্পোট:- মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৭৯ সদস্যকে ১১-বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ক্যাম্প সংলগ্ন বর্ডার গার্ড প্রাথমিক বিদ্যলয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত সোমবার (১১ মার্চ) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মিয়ানমারের বিজিপির মোট ১৭৯ জন সদস্য
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের আশারতলী গ্রামের জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরে বিজিপি সদস্যদেরকে নিরস্ত্রীকরণ করে রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়।
তবে এসব আশ্রয় নেওয়া বিজিপির সদস্যদের পরবর্তীতে কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে এ বিষয়ে এখনো জানা যায়নি।
আশ্রয় নেওয়া বিজিপির সদস্যের মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ ও একজন আহত রয়েছে। তাদের বিজিবির তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্যদের খাদ্যসহ অন্যান্য সহায়তা দিচ্ছে বিজিবি।
স্থানীয়রা জানান, ৪৫ নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকার জামছড়ি দিয়ে সকালে ২৯ জন বিজিপি সদস্য প্রবেশ করে। তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ জায়গায় রাখা হয়েছিলো। পরে রাতে নতুন করে আরো ১৫০ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এদের মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ ও একজন আহত রয়েছে।
অন্যদিকে সোমবার (১১ মার্চ) সকাল থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে ছোঁড়া গুলিতে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার সাবের আহামেদ আহত হয়েছেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার দিতে কক্সবাজার সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেঅস্ত্রোপচার (অপারেশন) মাধ্যমে কোমরে আঘাত করা বুলেটটি বের করা হয়েছে বলে তার পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার (১১ মার্চ) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের (১১ বিজিবি) দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকা দিয়ে এখন পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী, বিজিপির ১৭৯ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো. মুজাহিদ উদ্দিন বলেন, গতকাল সকালে ২৯ জন ও রাতে ১৫০ জন মিলে সর্বমোট ১৭৯ জনকে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে’ রাখা হয়েছে। বর্তমানে পরিচয় সনাক্তকরণ কাজ চলছে। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর পরবর্তী সিদ্বান্ত মোতাবেক কার্যক্রম চলবে।
এছাড়া ১৭৯ জনকে সংকুলান হওয়ায় একই স্থানে অস্থায়ী আশ্রয় হিসেবে রাখা হয়েছে। তবে শিক্ষার যেন ব্যাঘাত না ঘটে এমন কোনো স্থানে না রাখতে তিনি নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দিয়েছেন। যাবতীয় প্রক্রিয়ার পর আগের মতো তাঁদের ফেরত পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকারিয়ার নিকট সরাসরি জানতে চাইলে তিনি সীমান্তের বিষয় নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যসহ (বিজিপি) ৩৩০ জন। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার উখিয়ার ইনানী নৌ-বাহিনীর জেটিঘাট দিয়ে তাদের মিয়ানমারে পাঠানো হয়।