শিরোনাম
কক্সবাজারের টেকনাফে অস্ত্রের মুখে পাহাড় থেকে দুই কৃষককে অপহরণ, গুলিবিদ্ধ ৩ বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ হাসিনা সবকিছু ধ্বংস করে গেছে, শূন্য থেকে শুরু করেছি : ড. ইউনূস ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৭৩ আসামিসহ এখনও পলাতক ৭০০: কারা মহাপরিদর্শক ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক সাভারে দাফন করা ব্যক্তিই হারিছ চৌধুরী : হাইকোর্টে প্রতিবেদন রাঙ্গামাটির সাজেক থেকে ফিরছেন আটকে পড়া পর্যটকরা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ কর্তনে ক্ষোভ,অর্থ ফেরতে আন্দোলনে নামার হুমকি মুন্নী সাহার স্থগিত ব্যাংক হিসাবে মাত্র ১৪ কোটি টাকা শেখ পরিবার ও ৯ গ্রুপের সম্পদের খোঁজে ১০ টিম

দেশে বড় সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা, সীমান্তে সতর্ক বিজিবি

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৪৭ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে চলমান সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে রাজধানীসহ সারা দেশে গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এদিকে সীমান্তে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি কিংবা অপতৎপরতা রোধে সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যও বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা করে এ দেশে তাদের নাগরিকদের সতর্ক থাকতে বলেছে।


গোয়েন্দা সূত্রে এ খবর জানা গেছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সূত্রগুলো বলেছে, ক্রমেই সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে। পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটাতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে হত্যার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কাও রয়েছে।

ব্যবহৃত হতে পারে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রসহ সন্ত্রাসীদের কাছে থাকা অবৈধ অস্ত্র। সেই সঙ্গে বোমা হামলার আশঙ্কাও রয়েছে। এ অবস্থায় সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দেশে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্র বলেছে, বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার বিষয় মাথায় রেখে ঢাকাসহ সারা দেশে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নজরদারি বাড়িয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক খুদে বার্তায় বিজিবি সদর দপ্তর সূত্র জানায়, সীমান্তে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি কিংবা অপতৎপরতা রোধে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এতে বলা হয়, ভারতের ত্রিপুরার আগরতলা থেকে আখাউড়ামুখী লং মার্চ কর্মসূচি ঘিরে সীমান্তে উত্তেজনা থাকায় আখাউড়া সীমান্তে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনসহ কূটনৈতিকপাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের ভেতরে বিক্ষোভ ও হামলার ঘটনার পর ঢাকার গুলশান এলাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ নূরে আলম এ তথ্য জানান।

পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দেয় বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি নামের একটি সংগঠন।
এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল থেকে ভারতীয় দূতাবাস ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়।

গতকাল দুপুরে সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা ভারতীয় দূতাবাসে প্রবেশের বিভিন্ন রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন। শাহজাদপুর বাঁশতলা থেকে ভারতীয় দূতাবাসগামী রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। দূতাবাসের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন সেখানে। ওই এলাকায় নিয়মিত তল্লাশি চৌকিও রয়েছে।

ঢাবিতে বিক্ষোভ
আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার রাতে ঢাবি শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর একটি মিছিল বের করা হয়।

ইসকন নেতা গ্রেপ্তারের পর সংঘর্ষ বাড়ছে
গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। এ নিয়ে সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। বাড়তে পারে হতাহতের ঘটনা। এ জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সাইবার স্পেসও মনিটরিং করা হচ্ছে। পুলিশ সদর দপ্তরের (এআইজি মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর বলেন, চলমান সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের পর পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যায়। অবশ্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা চলছে। তবে তৃতীয় পক্ষও এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে পারে।

দেশে ইসকনের মন্দিরে নজরদারি

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সারা দেশে ইসকনের মন্দিরগুলোতে নজরদারি চলছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে কারা এতে অর্থায়ন করছে তার একটি তালিকা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা এরই মধ্যে সেই তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। একই সঙ্গে বাইরে থেকে কোনো অর্থায়ন হয় কি না তারও অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।

সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করল যুক্তরাজ্য

বাংলাদেশে সন্ত্রাসীরা হামলার চেষ্টা চালাতে পারে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাজ্য। গতকাল ঢাকায় যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়নবিষয়ক দপ্তর বাংলাদেশ ভ্রমণবিষয়ক পরামর্শে এই সতর্কতা জানিয়েছে।

হালনাগাদ ভ্রমণ পরামর্শে বলা হয়েছে, নির্বিচার সন্ত্রাসী হামলা চালানো হতে পারে। জনাকীর্ণ এলাকা, ধর্মীয় স্থাপনা ও রাজনৈতিক সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন জায়গায় এই হামলা হতে পারে। কিছু গোষ্ঠী এমন ব্যক্তিদের টার্গেট করেছে, যাদের ইসলাম পরিপন্থী জীবনাচরণ ও মতামত রয়েছে বলে তারা মনে করে।

ব্রিটিশ ভ্রমণ পরামর্শে বলা হয়েছে, মাঝেমধ্যে সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হামলা হয়েছে এবং পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে টার্গেট করা হয়েছে। প্রধান শহরগুলোতে এসব হামলায় বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিত এসব হামলা নস্যাতে কাজ করে যাচ্ছে। স্বল্প সময়ের নোটিশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর উপস্থিতি বৃদ্ধি এবং চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হতে পারে।

বাংলাদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ‘চারপাশ সম্পর্কে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে পুলিশের স্থাপনাগুলোর আশপাশে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বড় ধরনের সমাবেশ এবং পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর উপস্থিতিসংবলিত অন্যান্য জায়গা এড়িয়ে চলুন।’

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে বাংলাদেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা হয়, যাতে অনেক মৃত্যু ও বহু আহত হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিস্থিতি এখনো অস্থির রয়েছে উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যের ভ্রমণ পরামর্শে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক মিছিল ও সমাবেশ এখনো অব্যাহত রয়েছে। এগুলো দ্রুত সহিংস হয়ে উঠতে পারে, যা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে। দেশজুড়ে শহর ও নগরে বিক্ষোভ ও ধর্মঘটের সময় সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে পারে। এসব ঘটনা প্রাণঘাতীও হয়ে উঠতে পারে।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতার একটি প্রভাব পুলিশের ওপর পড়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে ব্রিটিশ ভ্রমণ পরামর্শে। সেখানে বলা হয়েছে, দেশজুড়ে কিছু থানায় উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেগুলোর বেশির ভাগ আবার সচল হয়েছে। তবে সব পুলিশ সদস্য কাজে ফেরেননি।

ঢাকা ও অন্যান্য শহরে অপরাধীচক্রের তৎপরতা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে যুক্তরাজ্যের ভ্রমণ পরামর্শে। বাংলাদেশে ডাকাতি, সহিংস অপরাধ ও ধর্ষণের ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions