বান্দরবান:- বান্দরবান জেলার থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণের ওপর অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজির স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি স্থানীয় ও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হলো। জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে রোয়াংছড়ি, রুমা এবং থানচি উপজেলা ব্যতীত অন্যান্য উপজেলায় পর্যটকেরা ভ্রমণ করতে পারবেন।
এর আগে গত ১৮ অক্টোবর বান্দরবান জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এরপর গত ২৩ অক্টোবর জেলার থানচি ও আলীকদম উপজেলায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এরপর গত ৩০ অক্টোবর দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়। তৃতীয় দফায় ৪ নভেম্বর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ৮ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। চতুর্থ দফায় ৮ নভেম্বর ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা এবং ১২ নভেম্বর পঞ্চম দফায় নিষেধাজ্ঞা মেয়াদ বাড়ানো হয়। এ ছাড়া ১৬ নভেম্বর ষষ্ঠ দফায় বাড়ানো মেয়াদ ২০ নভেম্বর শেষ হয়। সপ্তম দফায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত ছিল। পরে অষ্টম দফায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়ে ২৭ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর করা হয়। ওই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থানচি ও আলীকদম উপজেলা ছিল না। তবে পরে ৪ ডিসেম্বর ফের ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সে সময় থানচি উপজেলাকেও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রাখা হয়। গত ৭ ই ডিসেম্বার ২০২২ হতে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহা. আবুল মনসুর বলেন, জননিরাপত্তা বিষয়ে চিন্তা করে পর্যটকদের সাময়িক অসুবিধা জন্য প্রশাসন পক্ষ থেকে আমরা অনুতপ্ত। উপজেলা প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী থানচিতে পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করার পর এখন থানচি উপজেলায় নতুন করে পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী কোনো নির্দেশনা পাওয়া না পর্যন্ত থানচি রুমা ও রোয়াংছড়ি তিন উপজেলাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বলবৎ থাকবে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সাল থেকে পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বম সম্প্রদায়ের কিছু বিপথগামী যুবক কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র সংগঠন গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে তাদের আশ্রয়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণে যুক্ত হয় সমতল থেকে আসা নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার বেশ কিছু সদস্য। তাদের নির্মূলে গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে পাহাড়ে অভিযান চালাচ্ছেন যৌথ বাহিনীর সদস্যরা।