সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার: দুদু

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৭৯ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যার বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায় মুক্তির সময়। যদি তারা এই দায় কাঁধ থেকে নামাতে চায়, তাহলে সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার।’

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) উদ্যোগে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সব কালাকানুন বাতিল, সাগর-রুনিসহ সব সাংবাদিক হত্যার বিচার ও সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবিতে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘সাগর-রুনিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। যে সরকারের সময় হত্যা করা হয়েছিল, সেই সরকারের অনেক প্রিয়ভাজন ব্যক্তি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে অনেক মানুষ মনে করে। এ কারণে দীর্ঘ সময় এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হয়েছে, কিন্তু চার্জশিট দেয়া হয়নি। এখন এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায় মুক্তির সময়। যদি তারা এই দায় কাঁধ থেকে নামাতে চায়, তাহলে সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার। তারা বলেছে, এটি তারা করবে। আমরাও বিশ্বাস করি এটি তারা করবে। কিন্তু সময় থাকতে তা শেষ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। সেই বিবেককে যদি মুক্ত না করা হয়, কালাকানুন যদি বাতিল করা না হয় তাহলে দেশের কি পরিস্থিতি এটি তুলে ধরা সাংবাদিকদের জন্য খুব কঠিন। এই সরকারের সাংবাদিকরা যে দাবি জানিয়েছে, আমি আমার দলের পক্ষ থেকে সেটি সমর্থন করছি।’

দুদু বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা এদেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারবো, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। এটাকে আমরা সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে জরুরি কাজ বলে মনে করি।’

বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ যেসকল হত্যাকাণ্ড হয়েছে তাদের বিচারের দাবিতে আমার এখানে দাঁড়িয়েছি। সাংবাদিকদের জন্য সুরক্ষা আইন করতে হবে। মুক্তভাবে সাংবাদিকতা করার সুযোগ করে দিতে হবে। যে সকল সাংবাদিকরা হাসিনার কুকর্মে সমর্থন দিয়েছে আমরা তাদেরও বিচার চাই। আমাদের দাবিগুলো অবিলম্বে মেনে নিতে হবে। সাগর-রুনির হত্যার বিচার অবিলম্বে করতে হবে।’

জাতীয় প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ বলেন, ‘এখনো কালাকানুনগুলো দূর হয়নি। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এখনো নিরঙ্কুশ হয়নি, নিশ্চিত হয়নি। অনেক সাংবাদিক হত্যার বিচার হয়নি। সেগুলোর বিচারের জোর দাবি জানাচ্ছি। কালাকানুনগুলো যেনো রোধ করা হয়। সাগর-রুনির প্রকৃতি খুনিদের যেনো চিহ্নিত করা হয় এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়। একটি অন্তর্বর্তী সরকারের এখন দেশ চালাচ্ছে। তারা একটি সংস্কারের কাজ করছে। আমাদের দেশপ্রেমিক নাগরিকদের প্রত্যেকের দায়িত্ব তাদের সহায়তা করা, সংস্কারের ক্ষেত্র তৈরি করা এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সুগম করা। সেক্ষেত্রে আমাদের সবার দায়-দায়িত্ব আছে।’

সভাপতির বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলাম। আমরা তিনটা দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছি। প্রথম দাবি ছিল এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ এবং একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা। দ্বিতীয় দাবি ছিল সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার। তৃতীয় দাবি ছিল সকল বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিতে হবে। দীর্ঘ আন্দোলন এবং সংগ্রামের পরে সর্বশেষ জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতার রক্তের উপর দিয়ে আজকে এই ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও এখনো দুটি দাবি আদায় হয়নি। আমরা ১৬ বছর ধরে যে দাবি করে আসছি, সেটার থেকে এক চুলও নড়বো না। সাগর-রুনিসহ ৬৫ জন সাংবাদিক হত্যার বিচার করতে হবে। এরপরে সকল বন্ধ গণমাধ্যমগুলোকে খুলে দিতে হবে।’

ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন-বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, সহসভাপতি রাশেদুল হক ও বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions