রাঙ্গামাটি:- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে দেশত্যাগের খবর শোনার পর সারাদেশের মতো উল্লাসে মেতে উঠে পার্বত্য শহর রাঙ্গামাটির মানুষজনও। শহরের বিভিন্ন স্থানে মিছিল শ্লোগান মিষ্টি বিতরণ রু ছিটিয়ে রাস্তায় নেমে আসে নানান শ্রেণীপেশার মানুষ। বিএনপি,জামাত,বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন,ইসলামী আন্দোলনসহ নানা সংগঠন পৃথক পৃথক মিছিল বের করে। এইসব মিছিল থেকে আওয়ামীলীগ,শেখ হাসিনার বিপক্ষে নানান শ্লোগান দেন তারা।
একই সময় শহরজুরে জিঘাংসায় মেতে উঠে একদল মানুষ। আগুন দেয়া হয় রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে। আগুন দেয়ার পর দরজা ভেঙে বিভিন্ন জিনিসপত্র বাইরে এনে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। কার্যালয়ে ভেতরে চলে লুটপাট। দীর্ঘ কয়েকঘন্টা ধরে আগুন জ¦ললেও আগুন নেভাতে আসতে পারেনি ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা। পুলিশ কিংবা সেনাবাহিনীর কাউকেই আগুন নেভাতে কোন তৎপরতা চালাতেও দেখা যায়নি। ফলে কয়েকঘন্টার আগুনে কার্যত নিঃশেষ হয়ে যায় জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়টি। আগুনের ছবি তুলতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলার স্বীকার হন একুশে টিভি ও সমকালের সাংবাদিক সত্রং চাকমা। এসময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও কেড়ে নেয় তারা। এসময় সাংবাদিকদের ছবি ও ভিডিও করতেও দেয়নি তারা।
বিকাল থেকে শহরের বিভিন্নস্থানে হামলা চালানো হয়। ঢিল ছুঁড়ে কাঁচ ভাঙ্গা হয় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মুছা মাতব্বরের বাসভবন,পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরীর ব্যক্তিগত অফিসের। বিভিন্ন উপজেলাতেও হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয় অফিস,বসত। ভাংচুর করা হয় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ,বনরূপা ট্রাফিক পুলিশ বক্স।
রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এইসব হামলা ভাংচুররের জন্য বিএনপি-জামাতকে দায়ি করে বলেন, তারা এখনো সরকারই গঠন করে নাই,তাতেই এইসব অপকর্ম শুরু করেছে,জনগণ তাদের উপর কিভাবে আস্থা রাখবে ? এসব তো বর্বরতা। আমরা প্রতিটি ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করছি।’
রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাকিল হামলা ভাংচুরের ঘটনার সাথে বিএনপির জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এইসব ঘটনার সাথে বিএনপির কোন সম্পর্ক নাই। কিছু বখাটে,নিন্মশ্রেণীর মানুষ ও অপরিচিত ছেলেপুলে এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এটা দুঃখজনক ঘটনা এটা। আমরা সবাইকে অনুরোধ করি,রাঙ্গামাটির শান্তিপূর্ণ পরিবেশ যেনো কেউ নষ্ট না করে। আমাদের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাক্রা অনুরোধ করছি।’
রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ বলছেন, রাঙ্গামাটি অন্যান্য জেলার তুলনায় মোটামুটি ভালোই আছে। আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে আগুন দেয়ার ঘটনাটি দুঃখজনক। নিরাপত্তাসহ নানান কারণে পুলিশকে পুরোমাত্রায় কাজে লাগাতে পারিনি আমরা। এখন পরিস্থিতি মোটামুটি ভালো। সবাইকে অনুরোধ করব রাঙ্গামাটির শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখায় ভূমিকা রাখতে।’পাহাড়২৪