রাঙ্গামাটি:- রাঙ্গামাটির কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দেওয়ানি বিরোধ জোর করে মীমাংসার অভিযোগে ঘটনার তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা পুলিশ সুপারকে (এসপি) লিখিতভাবে চিঠি দিয়েছেন জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগটি দেওয়া হয়। রাঙ্গামাটি জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকতা ও সিনিয়র সহকারী জজ মো. জুনাইদ নিজেই অভিযোগ দায়েরের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওই অভিযোগের একটি কপিও এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, জেলা শহরের তবলছড়ি এলাকার বাসিন্দা নিপু মায়া ছেত্রী গত ৩ জুন সম্পত্তির সীমানা বিরোধ সংক্রান্ত একটি এডিআর দায়ের করেন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে। এ ঘটনার পর লিগ্যাল এইড অফিস দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলে মীমাংসার জন্য শুনানি করতে ৩০ জুন দিন নির্ধারণ করেন। ওই দিন বাদী নিপু মায়া ছেত্রী ও বিবাদী রিতা চাকমাকে উপস্থিত হতে বলেন। লিগ্যাল এইড অফিসের কার্যক্রম চলমান থাকার মধ্যেই গত মঙ্গলবার (১১ জুন) কোতোয়ালি থানার ওসি মুহাম্মদ আলী চার-পাঁচজন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে বিরোধপূর্ণ জায়গায় গিয়ে থানার মাধ্যমে আপসের প্রস্তাব দেন।
অভিযোগে বলা হয়, থানায় চা খাওয়ার দাওয়াত দেওয়ার পাশাপাশি ওসি বলেন, জেলা লিগ্যাল এইড অফিস কিছুই করতে পারবে না। থানার মাধ্যমেই আপস করতে হবে। অথচ গত ৩ জুন বাদীর আবেদনের পর ৪ জুন বিকেলেই স্থানীয় কাউন্সিলর পুলক দের উপস্থিতিতে সরেজমিন পরিদর্শক করে মীমাংসা সভা করা হয়। বিষয়টি আপস-মীমাংসার স্বার্থে এক পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে মীমাংসার প্রস্তাব করলে আরেক পক্ষ মতামত জানানোর জন্য ৩০ জুন পর্যন্ত সময় নেন।
থানায় বসিয়ে নালিশি সভার আয়োজন করা পুলিশের এখতিয়ার বহির্ভূত এবং বিরোধীয় বিষয় নিয়ে এরই মধ্যে লিগ্যাল এইড অফিসে একটি আপস মীমাংসা প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে উল্লেখ করে আরও অভিযোগে বলা হয়, উভয় পক্ষের বক্তব্যে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়, ওসি কোতোয়ালি লিগ্যাল এইডের অফিসের দেওয়ানি প্রি-কেইস এডিআর বেআইনিভাবে আপসের চেষ্টা করেছেন। এ অবস্থায় চলমান দেওয়ানি বিরোধ জোর করে মীমাংসাচেষ্টার বিষয়ে তদন্ত করে কোতোয়ালি থানার ওসি মুহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপারকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
ওসির বিরুদ্ধে থানার অভিযোগ করে রিতা চাকমা বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে লিগ্যাল এইড অফিসে অভিযোগ দেওয়ার পর আমরা লিগ্যাল এইড অফিসের মধ্যস্থতায় আপস-মীমাংসার দিকে যাচ্ছি। সেখানে থানার ওসি একটি পক্ষ নিয়ে আমাদের থানায় ডেকে নালিশের প্রস্তাব দেন।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ওসি মুহাম্মদ আলী বলেন, ‘তাদের মামলাটি এডিএম কোর্টে ছিল। পরে লিগ্যাল এইড অফিসেও গিয়েছে। জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিষয়ে থানায় বসে মীমাংসা করার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। দুপক্ষ চাইলে স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে সমাধান করতে পারেন। আমাদের ঘটনাস্থলে যাওয়ার অভিযোগটি সঠিক নয়। তবে জায়গা সংক্রান্ত ঘটনা হলেও যদি আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়, সেটা তো আমাদেরই দেখতে হয়।’
জানতে চাইলে রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। দেখে বলতে হবে।’সারা বাংলা