নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৩৬ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ইন্টার্ন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (আইসিসি) যদি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের জন্য শুক্রবারু গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি না করত, তাহলে বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে বিবেচিত একটি বৈশ্বিক আইনি ব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখা সম্ভব হতো না।ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ মাত্রা ব্যাপক, অন্তত ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের দ্বারা, যাদের মধ্যে অনেকেই তাদের পরিবার সহ ইসরায়েলের হাতে নিহত হওয়ার আগে গাজা হত্যাযজ্ঞে বিশ্বের চোখ এবং কান হিসাবে কাজ করেছিল। আধুনিক ইতিহাসে খুব কম অপরাধই অপরাধীদের দ্বারা গর্বের সাথে স্বীকৃত হয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ অবশেষে আইসিসির আইসিসির শর্ত পূরণ করতে পেরেছে।আইসিসির ন্যায়বিচারের সামনে শুধু নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্টই নয়, পাশাপাশি, অন্যান্য ইসরায়েলি নেতা এবং সৈন্যদের, পশ্চিমা সরকাগেুলোর দোষী পুরুষ ও নারীদেরও দাড় করানো উচিত। কেউ কেউ গ্রেপ্তারের সম্ভাবনাকে সুদূর পরাহত মনে করতে পারেন। কারণ, অভিযুক্তরা আইসিসিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর অন্তর্ভুক্ত নয়। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্র, এবং নেতানিয়াহু।তবে, নটিংহাম ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক আইনের সহকারী অধ্যাপক ভিক্টর ক্যাটান বলেছেন, ‘আজকের পদক্ষেপটি নজিরবিহীন, কারণ আমরা কখনোই ইসরায়েলিদেরকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি গত ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে কোনো কিছু করার জন্য জবাবদিহিতায় আনতে পারিনি, যা বিচারকরা উপলব্ধ প্রমাণগুলিতে মূল্যায়ন করেছেন এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পরপরই গ্যালান্ট ঘোষণা করেছিলেন যে ইসরায়েল গাজার জনসংখ্যার উপর সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করবে, যাদের তিনি ‘মানব জন্তু’ বলে অভিহিত করেছিলেন। এটি গ্যালান্টের দ্বারা প্রতিধ্বনিত হয়েছিল, যিনি বেসামরিক জনগণের উপর নরক নাযিল করার হুমকি দিয়েছিলেন। এর পরের দিনগুলিতে, গ্যালান্ট ইসরায়েলি সৈন্যদের নিশ্চিত করেছিলেন যে, তিনি তাদের ওপর থেকে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা এবং বিধিনিষেধগুলো সরিয়ে নিয়েছেন। এই সৈন্যরা অভিভূত হয়ে প্রায়শই অনলাইনে তাদের নৃশংস ক্রিয়াকলাপগুলো পোস্ট করেছে এবং জয় তুলে ধরেছে।ইসরায়েলি আক্রমণে শুধু জুলাই পর্যন্তই ১লাখ ৮০হাজার ফিলিস্তিনির মৃত্যু ঘটেছে। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো স্বেচ্ছায় ইসায়েলের প্রতিশ্রুত অপরাধকে সশস্ত্র করার কারণে বহু পশ্চিমা মিডিয়া গণমাধ্যম ইসরায়েলের উদ্দেশ্যের স্পষ্ট ঘোষণার পরেও সত্য খবরগুলো প্রচার করেনি, বা এড়িয়ে গেছে। যারা ইসরায়েলি নেতা এবং কর্মকর্তাদের সমালোচনা করেছে, তাদের মানহানি ও ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে, এবং মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।বাইডেন প্রশাসন ৭ অক্টোবর থেকে ১২.৫শ’ কোটি ডলার মূল্যের সাহায্য অনুমোদন করেছে।

এই সপ্তাহে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে ভেটো দিয়েছে। হোয়াইট হাউস ইতিমধ্যে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার সিদ্ধান্তকে মৌলিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।তবে, এখন সময় এসেছে ফিলিস্তিনের নিপিড়িত জনগণকে যথাযথ স্বীকৃতি দেয়ার। মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ড. আলন্সো গুর্মেন্দি যেমন বলেছেন, ‘আজকের সিদ্ধান্তটি এক সমুদ্র পরিবর্তন হিসাবে প্রমাণিত হতে পারে, যেখানে পশ্চিমাদের দ্বিমুখি চরিত্র ও আন্তর্জাতিক আইনের শর্তযুক্ত প্রতিশ্রুতি একটি উদীয়মান বৈশ্বিক দক্ষিণের হাতে সর্বোচ্চ পরীক্ষায় পড়বে।

‘আইসিসিতে দক্ষিণ আফ্রিকার নেতৃত্বে একটি পৃথক মামলা রয়েছে, যা প্রমাণ করতে চাইছে যে ইসরায়েল গণহত্যা করছে। এখন, গাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে যাই উন্মুক্ত হবে, তা ইসরায়েলের গণহত্যাকে পশ্চিমা আধিপত্য কীভাবে বিভৎস ভ-ামিতে পরিণত করেছে, তার সবচেয়ে অশ্লীল উদাহরণ হিসেবে পেশ হবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions