ডেস্ক রির্পোট:- বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকা পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। সেখানে তিনি ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। রাষ্ট্রদূত হাস অঞ্চলটিতে নিজ দেশের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা-ইউএসএআইডি, মার্কিন দূতাবাস এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী- ইউএনডিপি’র অর্থায়ন ও তত্ত্বাবধানের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন।
রবিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পেইজ থেকে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বান্দরবান সফর প্রসঙ্গে লেখা হয়েছেঃ প্রধান অর্থকরী ফসলের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার কীভাবে কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ এবং কৃষক ও বিভিন্ন কৃষি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে বেশী আয়-উপার্জনে সহায়তা করছে সেটা প্রত্যক্ষ করতে এবং স্থানীয় চাষী ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাতের জন্য রাষ্ট্রদূত হাস সৌন্দর্যমণ্ডিত বান্দরবান সফর করেছেন। রাষ্ট্রদূত কিষাণঘর অ্যাগ্রোর কাজু কারখানা পরিদর্শন করেন। কফি চাষের মাধ্যমে বাংলাদেশের বর্ধিষ্ণু কফি শিল্পে সহায়তাকারী চাষীদের সাথে সাক্ষাৎসহ শান্তি উৎসাহিতকরণ ও জনসমাজের জন্য জীবিকা উন্নয়নের সুযোগ বাড়াতে সহায়তার লক্ষ্যে আমাদের অংশীদারিত্বকে আরো জোরদার করার উপায় বিষয়ে আলোচনার জন্য তিনি স্থানীয় পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন।
এছাড়া, সূত্রে জানা যায়: গত বুধবার (০৮ মার্চ) বান্দরবান সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নের দলবুনিয়া পাড়ায় খেয়াং সম্প্রদায়ের মৎস্য খামার পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রদূত হাস। সেখানে তিনি এবং ইউএসএআইডি’র অন্যান্য কর্মকর্তারা চাষীদের জন্য উন্নত পদ্ধতিতে মাছ চাষ প্রশিক্ষণ পর্যবেক্ষণ, কার্পজাতীয় মাছের নার্সারি ও একজন চাষীর পুকুরে মাছ আহরণ পর্যবেক্ষণ করেন, তাদের সাথে মতবিনিময় করেন।
এছাড়াও, রাষ্ট্রদূত হাস সম্প্রতি এশিয়ান কারাতে চ্যাম্পিয়নশিপে বেশ কয়েকটি স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক জয়ী বান্দরবানের কারাতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একদল মেয়ের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, “এই সুপার-ক্যারাটে-গার্লদের মতো তরুণী ও মেয়েদের সহায়তা প্রদানে গুরুত্ব দিয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি ও শ্রদ্ধা উৎসাহিত করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইউএসএআইডি বাংলাদেশ’র মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে যুব ক্ষমতায়ন কার্যক্রমে অর্থায়ন করে থাকে।”
বান্দরবানের আগে রাষ্ট্রদূত হাস আরেক পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি সফর করেন। তিনি সেখানে মার্কিন দূতাবাসের অর্থায়ন ও ইউএনডিপি এর তত্ত্বাবধানের বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন। ওই সফর নিয়ে তিন দিন আগে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ফেসবুক পেইজে লেখা হয়েছিলঃ রাষ্ট্রদূত পিটার হাস পার্বত্য অঞ্চলের রাঙ্গামাটি জেলা পরিদর্শন করে দেখেছেন কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগসমূহ এই সুন্দর অঞ্চলে বসবাসকারী লোকেদের জীবনযাত্রার উন্নতির পাশাপাশি বন ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় সহায়তা করে আসছে। রাষ্ট্রদূত বেশ কয়েকটি সাইট পরিদর্শন করেছেন যেখানে ইউএসএআইডির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ওয়াটারশেড কো-ম্যানেজমেন্ট সরকার এবং স্থানীয় কমিউনিটির সাথে প্রায় ৭০,০০০ হেক্টর বন রক্ষা এবং পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করে আসছে।
জানা গেছে, রাষ্ট্রদূত হাস গত রবিবার (০৫ মার্চ) বিকেলে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ওই সময় তিনি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উন্নয়ন কার্যক্রম, পরিষদগুলোর কার্যপ্রণালী, হস্তান্তরিত বিভাগগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক এবং পার্বত্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে পরিচালিত বিদেশী সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে ওইদিন সকালে রাঙামাটি সফরের অংশ হিসেবে তিনি বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জের আওতাধীন ব্যঙছড়ি বনফুল রেস্ট হাউসে যান। সেখানে উক্ত প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে রাষ্ট্রদূত বনফুল রেস্ট হাউস প্রাঙ্গনে একটি বকুল ফুল গাছের চারা রোপণ করেন। এরপর জীবতলী আর্মি ক্যাম্প হয়ে দুলুছড়ি পাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে ক্যারেট পাড়ায় গিয়ে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সাথে মতবিনিময় সভা করেন।