ডেস্ক রির্পোট:- সাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যমূলক উপজাতি কোটা বাতিলের দাবিতে আজ ১০ জুলাই বুধবার সকালে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখা।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো: হাবীব আজম, রাঙ্গামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক মো: তাজুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক মো: শাখাওয়াত হোসেন, রাবিপ্রবি নেতা মো: নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
সাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যমূলক উপজাতি কোটা বাতিলের দাবিতে আজ ১০ জুলাই বুধবার সকাল ১১ টায় বান্দরবান জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি বান্দরবান জেলা শাখা।
এসময়ে পিসিসিপি বান্দরবান জেলা সভাপতি আসিফ ইকবাল এর নেতৃত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন পিসিসিপি বান্দরবান জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর হোসেন ইমন, দপ্তর সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক মাহীর ইরতিসাম।
বৈষম্যমূলক উপজাতি কোটা সংস্কার করে জনসংখ্যা অনুপাতে পূনর্বিন্যাস অর্থাৎ পার্বত্য কোটা চালু করার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে পিসিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।
আজ ১০জুলাই,২০২৪খ্রিঃ বুধবার বিকাল ৩:০০ঘটিকায় খাগড়াছড়ি জেলার সম্মানিত প্রশাসক মহোদয়ের নিকট স্মারকলিপি দেন পিসিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি সুমন আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক মো মেহেদি হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো সোহেল রানা,
সদর উপজেলা সভাপতি মো মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ উপজাতি কোটার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে বলেন,
পার্বত্য চট্টগ্রামে সুষমা উন্নয়ন ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূলস্রোতে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য উপজাতি কোটা সুবিধা রাখা হলেও এই অঞ্চলের ছোট ছোট জাতিগোষ্ঠীর লোকজন প্রত্যাশিত সুবিধা পাচ্ছে না। পার্বত্যাঞ্চলে পার্বত্য বাঙালিসহ ১৩টি জাতিগোষ্ঠীর সমান উন্নয়ন নিশ্চিত করতে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বিদ্যমান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা কি নতুন করে বৈষম্য তৈরি করছে? তাহলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে কী আরও প্রান্তিক করে ফেলছে? একচেটিয়া চাকমা সম্প্রদায় কোটাসহ সর্বোচ্চ সকল সুযোগসুবিধা পেয়ে আসছে। আর বঞ্চিত থাকা বাঙালিসহ ১৩টি সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এই কারণে পার্বত্য অঞ্চলে নতুন করে সশস্ত্র সংগঠন সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে বম জনগোষ্ঠী কেন্দ্রিক কেএনএফও চাকমাদের দ্বারা বৈষম্যের কারণে সৃষ্টি হয়েছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করে।পার্বত্য চট্টগ্রামে বৈষম্য দূর করে শান্তি ও সম্প্রীতি স্থাপন করতে হলে একতরফা উপজাতি কোটা সম্পূর্ণভাবে বাতিল করতে হবে।
দেশের এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবীও শুধুমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের অধিকার, অনগ্রসরতা ও পশ্চাত্পদতা নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করছে। অগ্রাধিকারের নামে একচেটিয়া ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থীদের নিয়োগের ফলে বঞ্চিত হচ্ছে বাঙালি শিক্ষিত যুবকেরা। শান্তিচুক্তির আগে ও পরে হাজার হাজার পদে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোককে নিয়োগ দিয়েছে সরকার, যার মধ্যে একজন বাঙালিও নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত উপজাতিদের মধ্যে শুধু চাকমা সম্প্রদায়ের হাজার হাজার ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী, সেনা অফিসার, প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পর্যন্ত রয়েছে। বিপরীত দিকে পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালিরা শতগুণে পিছিয়ে আছে। জেলা পরিষদের অধীনে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের নামে একচেটিয়া উপজাতীয় অদক্ষ যুবক নিয়োগের ফলে যোগ্যতা থাকার পরেও বঞ্চিত হচ্ছে বাঙালি শিক্ষিত যুবকেরা।
তাই সাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যমূলক উপজাতি কোটা সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে। যদি সংস্কার করে কোটা চালু রাখতেই হয়, তাহলে কোটা সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠী-সম্প্রদায়ের মধ্যে বৈষম্য দূর করে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল বাসিন্দাদের জনসংখ্যা অনুপাতে সমান কোটা সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।
কোটা প্রথা চালুর পর থেকে অদ্যাবধি পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন সম্প্রদায়ের কতজন কোটা সুবিধা পেয়েছে তার বিস্তারিত তথ্য জনগণের জ্ঞাতার্থে মিডিয়ায় প্রকাশ করতে হবে।
একতরফা বৈষম্যমূলক উপজাতি কোটা বাতিলের দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনায় আজ তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে।
এছাড়াও আগামীকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও উক্ত স্মারকলিপি প্রদান করবে পিসিসিপি।