রাঙ্গামাটি:- ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামীলীগের ছত্র-ছায়ায় দীর্ঘদিন যাবত সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রেখেছিলেন ভূমি খেকোরা। রেহায় পায়নি প্রশাসনের উপর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও। ভুয়া জালজালিয়াতি সুট কবুলত করে সাধারণ মানুষের দখলে থাকা জমি হাতিয়ে নিয়েছ চক্রটি। অসহায় ভিটা বাড়ি ছেড়ে অন্যর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকেই। কিছু হলেই মামলা-হামলা সহ আরো নানা কিছু ট্যাগ দিয়ে হয়রানি করে তারা।
এই চিত্রটি ফুটেছে রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে। সবচাইতে বেশী সমস্যা দেখা দিয়েছে লংগদু সদরের বাইট্টাপাড়া, আটারকছড়া ইউনিয়নে। এছাড়াও বগাচতর গুলশাখালী, কালাপাকুজ্জাতেও কম নয়। তবে চক্রটি সক্রিয় আছে উপজেলার বাইট্টাপাড়াতে।
বুধবার (৯ অক্টোবর) সকাল ১০টায় লংগদু উপজেলা সদরের ইউএনও অফিসের সামনে ভুক্তভোগীরা উপজেলার ভূমি খেকো আব্দুল মালেক গং, জাকির মোল্লাহ, হারুন, ইসলাম, ইকবাল খন্দকার, জামাল, সালাম মেম্বার, লাট মিয়া, তৈয়ব আলী, কালাম, সরোয়ার, সেলম ও জিয়া মেম্বার, তেরো জনের নাম উল্লেখ তাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে।
মানববন্ধনে এলাকাবাসী বলেন, দীর্ঘিদিন যাবত এই মালেক গং উপজেলার ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারদের লেয়াজু করে সাধারণ মানুষের জায়গা জমি হাতিয়ে নিয়েছে, এখনো নিচ্ছে। কিছুদিন আগেও আমাদের উপজেলার গর্ব, আমাদের অহংকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত একজন অফিসারের বিরুদ্ধে মালেক মামলা করে দেয়। আমরা সাধারণ মানুষ আমাদের কি না করতে পারে তারা, এটা একটা চিন্তার বিষয়।
বাইট্টাপাড়া এলাকার আব্দুল করিম জানান, মালেকের চক্রটি অনেক বড়, তারা সরকারের পতনের পরেও এক্টিভ। তারা রাতের আধারে বর্তমান সার্ভেয়ারের অফিসে বসে মিটিং করে কীভাবে মানুষকে হাতিয়ে জায়গা দখল করা যায়। পরে বিভিন্ন ইউনিয়নের দালালদের মাধ্যমে সুট কবুলত এই সেই দেখিয়ে জমি গুলো নিজের নামে করে নিচ্ছে অথবা মোটা অংকের টাকা নিয়ে প্রভাবশালীদের কাছে বিক্রি করে দেয়। আমার নিজের কাগজের জায়গায় তারা ভুয়া কাগজ করে আমাকে সহ আমার ভাইদের জেল হাজতে পাঠায়। এই মামলার জন্য আমি সহ আমার ভাইদের চাকরী হয়নি। আমি আমরা মালেক সহ জড়িত সকলের বিচারের দাবী জানাচ্ছি। আমরা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।
তিনটিলা এলাকার নিরমল চাকমা বলেন, এই মালেক গং এর কারণে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। তার বাবা মারা গেছে অনেক আগে, কিন্তু ২০১৪ /২০১৫ সালে তার বাবার নামে সুট কবুলত করে। তিনি কাউকে ছাড় দিচ্ছেনা। তার এসকল কর্মকান্ডের বিচারের দাবী জানিয়ে স্মারক লিপি দিয়েছি। আশাকরি প্রশাসন খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নিবেন। না হয় এভাবে চলতে থাকলে এখানে সাম্প্রদায়িক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। মালেক সহ জাকির মোল্লারা আমাদের পাহাড়িদেরও নানা ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে। জমি দখলের পায়তারা চালাচ্ছে। মানববন্ধনে পাহাড়ি-বাঙালী সহ কয়েকশত মানুষ উপস্থিত ছিল।
মানববন্ধনের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে ভুক্তভোগীরা। একই সাথে লংগদু থানা ও লংগদু সেনা জোনে স্মারকলিপির অনুলিপি প্রদান করা হয়।