শিরোনাম
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় বজ্রপাতে একই পরিবারের ৪ জনসহ আহত ৬ বান্দরবানে কেএনএফ’র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বম জনগোষ্ঠীর মানববন্ধন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্র ১২টি সম্পদের পাহাড় প্রার্থীদের ৩০ ছাত্রকে যৌন নিপীড়ন করে মোবাইলে ভিডিও ধারণ শিক্ষকের মোদিজি ভারতকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ বানাতে চান: অরবিন্দ কেজরিওয়াল যেসব খবর আসছে তাতে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন: ইরানি কর্মকর্তা ‘অটোরিকশা নিষিদ্ধ করার আগে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করুন’ ইরানের প্রেসিডেন্টের দুর্ঘটনাস্থল থেকে মিলল সংকেত উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১১৬ কোটিপতি প্রার্থী: টিআইবি

মৃত্তিকা চাকমা বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার- ২০২৩ পেলেন

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ১১৩ দেখা হয়েছে

রাঙ্গহামাটি:- নাট্য সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার- ২০২৩ পেলেন মৃত্তিকা চাকমা। কবি মৃত্তিকা চাকমা ১২ জানুয়ারী ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে রাঙ্গামাটি জেলার বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নের মৃগাছড়িতে জন্মগ্রহন করেন।

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ ঘোষণা করা হয়েছে। সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর ১১টি ক্যাটাগরিতে ১৬ জন এই পুরস্কার পাচ্ছেন। আজ বুধবার বাংলা একাডেমি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন।

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ পাচ্ছেন— কবিতায় শামীম আজাদ, কথাসাহিত্যে নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ও সালমা বাণী, প্রবন্ধ/গবেষণায় জুলফিকার মতিন, অনুবাদে সালেহা চৌধুরী, নাটক ও নাট্যসাহিত্যে মৃত্তিকা চাকমা ও মাসুদ পথিক, শিশুসাহিত্যে তপংকর চক্রবর্তী, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় আফরোজা পারভীন ও আসাদুজ্জামান আসাদ, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গবেষণায় সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল ও মো. মজিবুর রহমান, বিজ্ঞান/কল্পবিজ্ঞান/পরিবেশ বিজ্ঞানে ইনাম আল হক, আত্মজীবনী/স্মৃতিকথা/ভ্রমণকাহিনী/মুক্তগদ্যে ইসহাক খান, ফোকলোরে তপন বাগচী ও সুমন কুমার দাশ।

মৃত্তিকা চাকমার সংক্ষিপ্ত জীবন ও কবিতা

কবি মৃত্তিকা চাকমা জন্মগ্রহণ করেন ১২ জানুয়ারী ১৯৫৮ খ্রি: রাঙ্গামাটি জেলার বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নের মৃগাছড়িতে। ১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাঁধে বসতভিটা জলমগ্ন হলে রাঙ্গামাটির বন্ধুকভাঙ্গা ত্যাগ করে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি থানার লোগাং এ চলে যেতে হয় কবির পরিবারকে। কবি মৃত্তিকা চাকমার শৈশব কাটে লোগাং এর মাটি ও মানুষের সাথে। লোগাং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শুরু করে শেষ হয় চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বি.এ(স্নাতক) এম.এ(স্নাতকোত্তর) ডিগ্রী অর্জনের মাধ্যমে। কবি মৃত্তিকা চাকমা মোনঘর আবাসিক বিদ্যালয়ে ১৯৮৫ সাল থেকে এখনো শিক্ষকতা পেশার সাথে জড়িত রয়েছেন। স্ত্রী শৈব রানী চাকমা দুই সন্তান ড্যানিস চাকমা ও নিসা চাকমাকে নিয়ে ছোট পরিবার। পিতা যুবনাশ্ব চাকমা ও মাতা রাজলক্ষী চাকমা।

তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম সাংস্কৃতিক সংগঠন জুম ইসথেটিক কাউন্সিল জাক এর নীতি নির্ধারক ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তিনি জাক-এর সাথে সম্পৃক্ত থেকে এবং নিজ উদ্যোগে জুমিয়া সাহিত্য সংস্কৃতির অগ্রগতি সাধনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি হিল চাদিগাং থিয়েটারসহ কয়েকটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে থেকেছেন। এ পর্যন্ত ১২ টি গ্রন্থ প্রকাশ হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে কবিতা ছয়টি, নাটক চারটি, প্রবন্ধ ২টি। প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: মেঘ সেওে মোনো চুক(কবিতা), মন পরানী(কবিতা), এখনো পাহাড় কাঁদে(বাংলা ভাষার কবিতা), দিকবন সেরেততুন(কবিতা), একজুর মান্নেক(ম নাটক), বান(ম নাটক) ইত্যাদি।

এ কবি সন্মাননা পেয়েছেন দেশে ও দেশের বাইরে। তার মধ্যে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যেও তোলবিচ সাহিত্য পুরস্কার(১৯৮১), জাতীয় সাহিত্য পরিষদ, ঢাকা(২০০৩), স্বাধীনতা সংসদ সন্মাননা, ঢাকা(২০১০), আন্তর্জাতিক জলঙ্গী কবিতা উৎসব সন্মাননা, নদীয়া ভারত(২০১০) উল্লেখযোগ্য।

পার্বত্য চট্টগ্রামের আশির দশকের খ্যাতিমান কবিপ্রতিভা মৃত্তিকা চাকমা। কাপ্তাই বাঁধের ফলে বাস্তুভিটা হারিয়ে পরিবারের সঙ্গে শৈশবে উদ্বাস্তু হন তিনি। ফলে তাঁর কবিতায় প্রকৃতির পাশাপাশি দ্রোহের উচ্চারণ এসেছে বারবার। তাঁর ‘হৃদয়ে পাহাড় কাঁদে’ কবিতার শেষ পঙক্তি তুলে ধরা হলো :
আমি কবুল করেছি এ বিঝুতে আমি যাবো না
অর্ধ লক্ষ মা-বাবা-ভাইবোন
আত্মীয়স্বজনের প্রেক্ষিতে, ক্ষতবিক্ষত পাহাড়।
মৃত্তিকা চাকমার কবিতায় স্বদেশপ্রেম, জাতীয়তাবাদ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের নান্দনিক সৌন্দর্যের কথা ফুটে উঠেছে। তিনি চাকমা সাহিত্য সমাজকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন দীর্ঘ সময় ধরে।

মৃত্তিকা চাকমার আলোচিত একটি কাব্যগ্রন্থের নাম গঝক। এ কাব্যগ্রন্থ সম্পর্কে কবি বলেছেন,
‘…আমার এ গ্রন্থের নামকরণ করছি ‘গঝক’। বাংলা ভাবানুবাদ করলে যা দাঁড়ায় জবরদখল বা খর্ব হওয়া। যেমন সাম্প্রতিক বিশ্বে একটু নজর দিলে চোখে পড়ে জবরদখলের সরাসরি। যেমন নদী দখল, ভূমি দখল, পাহাড় দখল। এক দেশের প্রতি আরও এক দেশের জবর দখল। যেমন ফিলিস্তিনিদের জন্মভূমিতে ইসরাইলিদের দখল। ভারতের সীমান্ত অঞ্চল লাদাখসহ তিব্বতীদের জন্মভূমি চীনাদের দখলে। এ ধরনের প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে কার ভূমি কে দখল করছে তার কোনো পরিসীমা নেই।…”

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions