রাঙ্গামাটি;- রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলায় সপ্তম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে ধর্মান্তরিত একজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে ১ লাখ টাকা জরিমানা দণ্ড দিয়েছে আদালত।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে রাঙ্গামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক এম ইসমাইল হোসেন এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. ইব্রাহিম (৪৩) ধর্মান্তরিত হয়েছে, তার পূর্বের নাম ছিল কাঞ্চন কুমার বিশ্বাস। সে যশোর সদর উপজেলার বারান্দি পাড়া (লিচু তলা) গ্রামের সন্তোষ কুমার বিশ্বাসের ছেলে। ২০১১ সালে এ ঘটনার সময় ভিকটিম কিশোরী লংগদু উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। এক যুগের বেশি সময় পর এ মামলার রায় দিয়েছে আদালত।
এদিকে, ট্রাইব্যুনালের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাঙ্গামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম অভি। তিনি বলেন, এ রায়ের মধ্য দিয়ে আমরা রাষ্ট্রকে ধন্যবাদ দিচ্ছি এবং সমাজে নারীজনিত অপরাধ কমে আসবে বলে আমার বিশ্বাস।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী মইনুল ইসলাম বলেন, আমি মনে করি মামলায় আসামি খালাস পাওয়ার মতো সুযোগ ছিল। এ রায়ের প্রতি আমরা সংক্ষুব্ধ এবং উচ্চ আদালতে আপিল করব। আপিল করলে আমরা ন্যায়বিচার পাব বলে আমরা আশাবাদী।
মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১৫ জুন আসামি মো. ইব্রাহিম সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ১৫ বছরের এক কিশোরীকে লংগদু উপজেলার আটারকছড়া ইউনিয়নের একটি খামার বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী কলা বাগান নিয়ে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। ওই সময় কিশোরীর চিৎকারে আশপাশে মানুষ এগিয়ে আসলে আসামি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে তাকে স্থানীয় আটক করে পুলিশে দেয়। পরে ওই কিশোরীর পিতা বাদী হয়ে লংগদু থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৯ (১) ধারায় অভিযোগ দায়ের করেন। এ মামলায় ঘটনার এক যুগ পর আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা দণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আদালত রায়ে আসামিকে ৯০ দিনের মধ্যে কিশোরীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে জরিমানার ১ লাখ টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আসামি ক্ষতিপূরণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে আসামির স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নিলামের মাধ্যমে টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা নিতে জেলা কালেক্টরকে (জেলা প্রশাসক) নির্দেশ দেওয়া হয়।