ডেস্ক রির্পোট:- মায়ানমারে সৃষ্ট সাত দশমিক সাত মাত্রার ভূমিকম্পে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন দুই হাজার ৩৭৬ জন। বিবিসির প্রতিবেদনে এই খবর বলা হয়েছে। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে প্রতিবেশী থাইল্যান্ডও।
এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে মায়ানমারে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুমান করেছে, মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এই ভূমিকম্পের প্রভাবে পার্শ্ববর্তী দেশ থাইল্যান্ডেও ১০ জনের মৃত্যু হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে গতকালের ওই ভূমিকম্পে হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই ঘটনায় ২০২১ সাল থেকে মিয়ানমার শাসন করা সামরিক জান্তা দেশটির সাগাইং, ম্যান্ডালে, মাগওয়ে, বাগো, ইস্টার শান রাজ্য এবং নেপিডো অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি, পরিস্থিতি মোকাবেলায় জান্তা সরকার আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে।
বিবিসি বার্মিজ সার্ভিস জানিয়েছে, আবারও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হতে পারে, এই আশঙ্কায় অনেক মানুষ গতকাল রাতে খোলা আকাশের নিচে ঘুমিয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য মায়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে।
তবে বিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট জোর দিয়ে বলছে, যেকোনো সহায়তা যেন স্বাধীনভাবে ও স্থানীয় নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।
মায়ানমারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর মান্দালয়-এর ঐতিহাসিক অনেক ভবন এই ভূমিকম্পে মাটিতে মিশে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ ঘেঁটে দেখছেন। দেশটির দুই বড় শহর, ম্যান্ডালে ও ইয়াংগুনের বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
মায়ানমারের ইয়াংগুনের বাসিন্দা সো লুইন বলেন, তিনি বহুদিন পর ভূমিকম্প টের পেলেন।
ভবিষ্যতে আরো বড় ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে, এ নিয়ে তারা সবাই চিন্তিত।
এদিকে, চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া জানিয়েছে, দেশটির একটি ৩৭ সদস্যের রেসকিউ মেডিক্যাল টিম মায়ানমারকে সহায়তার উদ্দেশ্যে অনুসন্ধান অভিযান চালাতে যাচ্ছে। মান্দালয়ের একজন উদ্ধারকর্মী বিবিসি বার্মিজ সার্ভিসকে জানিয়েছেন, মায়ানমারের এই দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরের অধিকাংশ ভবন ধসে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘উদ্ধারকাজ শুরু করার সময় মান্দালয়ে এর দৃশ্য ছিল ভয়াবহ।’
এদিকে গতকাল মায়ানমারে হওয়া ওই ভূমিকম্পের প্রভাব থাইল্যান্ড, চীনসহ আশপাশের দেশগুলোতেও অনুভূত হয়েছে। বিশেষ করে থাইল্যান্ডে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে। দেশটিতে ওই ভূমিকম্পে ১০ জন নিহত হয়েছে। ব্যাংককের ধসে পড়া ৩০ তলা ভবনে এখনো উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংককে প্রায় ১০০ জন নির্মাণশ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন। গতকাল রাতে ব্যাংককের অন্তত দুটি ভবন খালি করা হয়েছে এবং ভূমিকম্পের ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপণের জন্য আজ থেকে স্বেচ্ছাসেবকরা আরো দুই হাজার ভবন পরিদর্শন করবেন। সূত্র : সিএনএন, বিবিসি