শিরোনাম
রাঙ্গামাটিতে বড়দিন উপলক্ষে খ্রীষ্টধর্মাবলম্বীদের সমবেত প্রার্থনা ও কেক কাটা আজ শুভ বড়দিন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকশ চৌধুরীর পদত্যাগ আজ ফিরছেন তারেক রহমান,নির্বাসন শেষ, ঢাকায় বরণের আয়োজন খাগড়াছড়িতে বিজিবির অভিযানে ১২টি ভারতীয় গরু জব্দ নাইজেরিয়ায় নামাজের সময় মসজিদে বিস্ফোরণ, নিহত ৭ দীর্ঘ ৬ হাজার ৩শ ১৪ দিন পর বাংলাদেশের আকাশে! অবশেষে খনন হচ্ছে রাঙ্গামাটির ৩ নদী,একনেক সভায় প্রকল্প অনুমোদন,সহজতর হবে যাত্রী ও কৃষিপণ্য পরিবহন ভূমিকা রাখবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে রাঙ্গামাটি আসনে মনোনয়ন জমা দিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জুঁই চাকমা রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদ ড্রেজিংয়ের অনুমোদন একনেকে

উত্তরের বন্যা পরিস্থিতি: রেললাইনে তিস্তার পানি, ডুবেছে বসতবাড়িও

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৯৩ দেখা হয়েছে

কুড়িগ্রামে ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী।
লালমনিরহাটে পানিবন্দী ২৫ হাজার পরিবার।
গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি, ভাঙন।
নীলফামারীতে ঘরে ফিরেছে চরের মানুষ।
সিরাজগঞ্জে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে যমুনার পানি।

ডেস্ক রির্পোট:- উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীতে পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে। এতে রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নতুন করে পানিবন্দী হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পরিবার নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। এদিকে তিস্তার পানিতে ডুবে গেছে লালমনিরহাটের রেললাইন।

ডুবেছে রেললাইন, পানিবন্দী ২৫ হাজার পরিবার: উজানের পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে তিস্তার পানিপ্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাট-সান্তাহার রেলরুটের লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের রতিপুর এলাকায় অর্ধকিলোমিটার রেলপথ ডুবে যায়। পানির স্রোতে ভেসে যায় রেললাইনের পাথর। দিনভর ঝুঁকি নিয়ে ধীরগতিতে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রেখেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা হয় রেললাইন।

বন্যার পানিতে বিদ্যালয় ডুবে থাকায় জেলার ১৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার। এ ছাড়া গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন খামারি ও কৃষক। ঘরবাড়িতে পানি ঢোকায় রাস্তা বা বাঁধের উঁচু স্থানে পলিথিন সাঁটিয়ে রাখা হয়েছে গৃহপালিত পশুপাখি। অনেক পরিবার বাড়ি থেকে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার পশ্চিম বিছনদই গ্রামের তমিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের গ্রামে আড়াই-তিন শত পরিবার শুক্রবার থেকে পানিবন্দী। দিন যত যাচ্ছে, পানিবন্দীর সংখ্যা বাড়ছে। রোববার বিকেল থেকে নদীতে পানি কমলেও বন্যার পানি খুবই ধীরগতিতে নামছে। ফলে এখনো পানিবন্দী রয়েছি আমরা। বন্যার সময় শিশু, বৃদ্ধ আর গবাদি পশুপাখি নিয়ে বড় বিপদে পড়তে হয়। বন্যা হলেই নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় তিস্তাপারের মানুষের। আমরা ত্রাণ নয়, চাই তিস্তার মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন।’

কুড়িগ্রামে ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী: কুড়িগ্রামে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে। তিস্তার পানি রংপুরের কাউনিয়ার সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় রাজারহাট উপজেলায় তীরবর্তী পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে পানিবন্দী পরিবারের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের ৫ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের হাজারো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের বেশ কিছু বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে।

উপজেলার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মামুন বলেন, ‘এলাকায় হাজারো মানুষ পানিবন্দী। রাস্তাঘাট সব পানির নিচে। মানুষের জমির ফসলও তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি না নামলে এলাকায় হাহাকার শুরু হবে।’

গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি, ভাঙন
গাইবান্ধায় ভারী বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সব নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। জেলার প্রধান প্রধান নদ-নদীর মধ্যে তিস্তার পানি গতকাল সকাল থেকে ৫৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানি বাড়া অব্যাহত আছে। জেলার যমুনা, তিস্তা, করতোয়া ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের কালা সোনা চরের বাসিন্দা রফিকুর ইসলাম বলেন, ‘কয়েক দিন থেকে ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বাড়া এ রকম অব্যাহত থাকলে তিস্তার চরে লাগানো আমন ধান, শাকসবজি, বাদাম ও ডালখেত তলিয়ে যাবে। ভারী বৃষ্টির কারণে বাদামখেতের চারা উপড়ে পড়েছে।’

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, জেলায় প্রায় সব নদ-নদীর পানি বাড়লেও তিস্তা ছাড়া অন্যগুলোর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়লেও এবার কোনো বড় বন্যার আশঙ্কা নেই।

নীলফামারীতে ঘরে ফিরেছে চরের মানুষ
নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার উপপ্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ডিমলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন বলেন, ‘পানি কমে যাওয়ায় খড়িবাড়ী, তিস্তা বাজার, টাকুর চরাঞ্চল থেকে পানি নেমে গেছে। ফলে ওই সব চরের মানুষ ঘরে ফিরেছে।’

সিরাজগঞ্জে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে যমুনার পানি
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় ৩৫ সেন্টিমিটার ও কাজীপুরের মেঘাই ঘাট এলাকায় ৫১ সেন্টিমিটার বেড়েছে। পানি বাড়ার কারণে নদীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং টানা বৃষ্টির কারণে যমুনায় পানি বাড়ছে। আরও দু-তিন দিন যমুনার পানি বাড়তে পারে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions