বাবার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাঁচাতে মরিয়া ডিআইজি শিমুল

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় রবিবার, ২ জুন, ২০২৪
  • ১০৫ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে (এসবি) অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে কর্মরত শেখ রফিকুল ইসলাম শিমুল তার বাবার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ রক্ষার জন্য অনেক কিছুই করছেন। সনদ বাতিলের জন্য যারাই মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন শিমুল। যারা সাক্ষী দিতে চেয়েছেন তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি, ধরে নিয়ে আটকে রাখা, মারধর করা এবং হুমকি-ধমকি দিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। ফলে একতরফা শুনানি হয়েছে এবং প্রতিবার মুক্তিযোদ্ধা সনদ বহাল রেখেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) কমিটি।
বিজ্ঞাপন

শিমুলের গ্রাম গোপালগঞ্জের পাইককান্দির বাসিন্দারা জানান, রফিকুল ইসলাম শিমুলের বাবা মৃত আব্দুর রাজ্জাক কখনোই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। বাবার মৃত্যুর কয়েক বছর পর শিমুল মুক্তিযোদ্ধা সনদের জন্য আবেদন করেন। বেশ কয়েকবার প্রত্যাখ্যান হওয়ার পর সবুজ মুক্তিবার্তায় অর্থের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লেখান। সেই তালিকা দিয়ে তিনি ফের আবেদন করেন। যাচাই-বাছাই শেষে আবারও ভুয়া প্রমাণিত হয় এবং গেজেটে নাম প্রকাশ অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এরপরও থেমে থাকেননি শিমুল। কৌশল খাটিয়ে এক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে ধরে একটি সুপারিশ নামা লিখে নেন। সেই সুপারিশনামা দিয়েই তিনি বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করেন। ২০০১ সালে শিমুল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় পুলিশে চাকরি নেন। তখন পর্যন্ত শিমুলের বাবার মুক্তিযোদ্ধার চূড়ান্ত সনদ মেলেনি। পরে ২০১০ সালে শিমুল মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাগিয়ে নেন।

যেভাবে পুলিশে চাকরি

সারাবাংলার হাতে আসা নথিতে দেখা যায়, ২০০০ সালে শিমুল ২০তম বিসিএস আবেদনের সময় মুক্তিযোদ্ধা কোটার কথা উল্লেখ করেন। তখনও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে কোনো তথ্য প্রমাণ তার কাছে ছিল না। সব জায়গায় দৌড়ঝাঁপ করেও কোনো লাভ না হওয়ায় তৎকালীন ইউনিয়ন কমান্ডারে আব্দুস সোবহানের কাছ থেকে সাদা কাগজে একটি লিখিত নেন যে, তার বাবা মৃত আব্দুর রাজ্জাক শেখ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। সাদা কাগজের সেই লিখিত দিয়ে বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেন। ২০০১ সালে তিনি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ২০ তম বিসিএস এ পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন।
বিজ্ঞাপন

অ-মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে বানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা

চাকরি পাওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা সনদের প্রয়োজন পড়বে এমনটা ভেবে সাদা কাগজের ওই লিখিত দিয়ে ২০০২ সালে গোপালগঞ্জে ডা. এনামুল হোসেন সম্পাদিত সবুজ মুক্তিবার্তায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম প্রকাশ করান শিমুল।

সবুজ মুক্তিবার্তার সেই কপি দিয়ে ২০০৩ সালে প্রথম মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চেয়ে মৃত আব্দুর রাজ্জাক শেখের হয়ে তার ছেলে রফিকুল ইসলাম শিমুল আবেদন করেন। ২০০৪ সালের ১৬ মার্চ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আবেদনকারীদের পরিবারের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এরপর ২০০৪ সালের ২০ মার্চ চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি। সেই তালিকায় দেখা যায়, পাইককান্দির মৃত আব্দুর রাজ্জাকের নাম চূড়ান্ত মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আসেনি। তার নাম আসে বাদ পড়া তালিকায়।
বিজ্ঞাপন

অভিযোগ রয়েছে, ২০০৫ সালের শুরুর দিকে জামুকার (জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল) কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে বাবা মৃত আব্দুর রাজ্জাক শেখের নাম ওঠান তার ছেলে রফিকুল ইসলাম শিমুল। সেই কপি দিয়ে ২০০৫ সালে গোপালগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল থেকে বাবার মুক্তিযোদ্ধার প্রত্যায়নপত্র নেন। প্রত্যায়নপত্র অনুযায়ী ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে কর্মরত বড় ভাইয়ের শ্যালকের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র পান শিমুল।

২০০৫ সালে পাইককান্দির তিন মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান শেখ, নুরুল ইসলাম শেখ ও শিমুলের চাচাত ভাই মুক্তিযোদ্ধা মোশারক মাস্টার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে যাচাই-বাছাই কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন আব্দুর রাজ্জাক শেখ কোনোদিন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি। এমনকি জীবদ্দশায় নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবিও করেননি।

নাজেহালের শিকার সাক্ষীরা

তিন মুক্তিযোদ্ধার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে শুনানি করতে ডাকে। তারা নির্ধারিত তারিখে শুনানি করতে এসেছিলেন। কিন্তু তাদের কাউকে শুনানিতে অংশ নিতে দেননি শিমুল। ওই সময় শিমুল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে পুলিশের ক্ষমতা ব্যবহার করেন। অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের দিয়ে ভয় দেখিয়ে শুনানিতে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রাখেন। শুনানিতে যেন অংশ নিতে না পারেন সেজন্য সাইদুর রহমানকে গ্রামের বাড়িতে আটকিয়ে রাখা হয়। শিমুলের সাঙ্গপাঙ্গরা মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামকে বাসা থেকে বের হতে দেননি। এরপর নিজের চাচাত ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারক মাস্টারকে ঘরে আটকিয়ে রাখেন এবং মারধর করেন। পরে পুলিশের সহায়তায় তিনি মুক্ত হন। এ ঘটনায় ৩২৬ ধারায় মামলা দিলে শিমুলের পঞ্চম ভাই মাহফুজুর রহমান এক মাস জেল খাটেন।
বিজ্ঞাপন

২০০৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এক তরফাভাবে ৪ বার তদন্ত কমিটি তদন্ত করে। যাচাই বাছাই শেষে প্রতিবারই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবারই শিমুলের বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ যায়। স্থগিত হয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও। সর্বশেষ ২০২১ সালে যে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয় সেই তালিকাতেও তার বাবার নাম ছিল না।

এরপর তদবির করে ২০২২ সালের জুন মাসে শুনানির ব্যবস্থা করেন শিমুল। সেখানেও পুলিশের ক্ষমতা ব্যবহার করা হয়। শুনানিতে কাউকে তিনি অংশ নিতে দেননি।

অভিযোগ রয়েছে, মন্ত্রণালয়ের গেট থেকেই সাক্ষীদের বিদায় করে দেন সাদা পোশাকে থাকা পুলিশ সদস্যরা। ফলে একতরফা শুনানি হয় এবং মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে শিমুলের বাবার নাম বহাল থাকে।

মিথ্যা মামলা-হয়রানির শিকার সাক্ষীরা

এরপর গোপালগঞ্জ সদরের হরিদাশপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা কামরুল ইসলাম ( গেজেট নম্বর ৫৪০৮) আব্দুর রাজ্জাক শেখের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। তিনি তার আবেদনে উল্লেখ করেন, শুনানিতে আমার কথা শোনা হয়নি। পরে সেই আবেদন পুনরায় শুনানির জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী নোট লিখে স্বাক্ষর করেন। একই সময় মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমানের ছেলে গোপালগঞ্জ জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের জন্য জামুকায় আবেদন করেন। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে শিমুল ক্ষমতা খাটিয়ে আমিনুলের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া শুরু করেন। একপর্যায়ে আমিনুল তার অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হন। অন্যদিকে শিমুলের চাচাত ভাইয়ের ছেলে মাহামুদুল হাসান তিতাসের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় ১০টি মিথ্যা মামলা দেন। অনেক মামলায় তিনি জেল খেটেছেন। কিছু মামলা এরইমধ্যে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

জানতে চাইলে শিমুলের চাচাত ভাইয়ের ছেলে মাহামুদুল হাসান তিতাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘শিমুলের বাবা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। এটি আমি বারবার প্রমাণ করার চেষ্টা করেছি। এই কারণে শিমুল আমার নামে মামলা দিয়েছেন। এর আগে আমার বাবাও মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের আবেদন করেছিলেন। ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি জামুকার সবশেষ শুনানিও এক তরফাভাবে অনুষ্ঠিত হয় এবং তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ বহাল রাখা হয়।’

মাহামুদুল হাসান তিতাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘রফিকুল ইসলাম শিমুল ২০তম বিসিএস দেওয়ার আগে ১৯৯৯ সালে ১৯তম বিসিএস এ অংশ নেন। ১৯তম বিসিএস এ তিনি প্রিলিমিনারির গণ্ডিও পার করতে পারেননি। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অংশ নিয়ে ২০তম বিসিএস এ পুলিশ ক্যাডারে চাকরি পান। অথচ তার বাবার মুক্তিযোদ্ধা সনদটি ভুয়া।’

ভুয়া কমান্ডার সাজিয়ে যাচাই-বাছাই কমিটিতে সাক্ষ্য

তিনি জানান, ১৯৭১ সালে আব্দুর রাজ্জাক শেখের বয়স ছিল ৬৫ বছর। রাজ্জাক শেখের বড় ছেলে নুরুল ইসলাম, মেঝ ছেলে দিদারুল ইসলাম ও সেঝ ছেলে আমিনুল ইসলাম তিনজনই যুদ্ধে যাওয়ার উপযুক্ত ছিলেন। অথচ তারা কেউই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি। বাবার তো যাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। ১৯৯০ সালে প্রথম যখন মুক্তিযোদ্ধাদের ৫০০ টাকা ভাতা শুরু হয় তখনও রাজ্জাক শেখ নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করেননি। ১৯৯৫ সালে তিনি মারা যান। গোপালগঞ্জের কোনো ব্যক্তির কাছেই তিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করেননি। এমনকি ১৯৯৯ সাল পর্যন্তও তার সন্তানদের কেউই বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করেননি। শুধুমাত্র বিসিএস এ যোগদান করতেই তিনি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাগিয়ে নেন।

তিতাস আরও বলেন, আমার চাচা (শিমুলের চাচাত ভাই) অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইকবাল হোসেন ২০২১ সালে গোপালগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির শুনানিতে ভুয়া কমান্ডার সেজে মিথ্যা সাক্ষ্য দেন। ইকবাল হোসেন বলেন, শিমুলের বাবা আমার আন্ডারে যুদ্ধ করেছিলেন। এই মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ায় মৃত আব্দুর রাজ্জাক শেখকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পার করে দেন। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে আজম আলী নামে এক ব্যক্তি অভিযোগের কারণে।

এরপর ইকবাল হোসেন, আজম আলী ও শিমুল বৈঠকে বসেন। বৈঠকে আজম আলীর নামে বিভিন্ন থানায় দেওয়া মিথ্যা মামলাগুলো তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে আজম অভিযোগ তুলে নিতে রাজি হন। কিন্তু নির্বাহী অফিসার এটি শুনে বলেন, আজম আলী অভিযোগ তুলে নিলেই হবে না তাকে সরাসরি এসে বলতে হবে। এরপর আজম আলী সরাসরি বলার কারনে সেখান থেকে পার পেয়ে যায় শিমুল।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মামলা তুলে না নিলে আজম আলী (মুক্তিযোদ্ধা নন) পুনরায় জামুকায় মুক্তিযোদ্ধা সনদ ভুয়া বলে অভিযোগ দেন।

এ অভিযোগের ‍শুনানির সময় অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইকবাল হোসেন পুনরায় জামুকায় গিয়ে মন্ত্রীর কাছে মিথ্যা সাক্ষ্য দেন যে, মৃত আব্দুর রাজ্জাক শেখ তার আন্ডারে যুদ্ধ করেছিলেন। একথা শুনে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী শুনানি ছাড়াই সনদ বহাল রাখেন।

তিতাস জানান, ‘আমার চাচাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, চাচা আপনি সেদিন কেন মিথ্যা সাক্ষ্য দিলেন? জবাবে চাচা আমাকে বলেছেন, শিমুলের চাকরি বাঁচানোর আর কোনো উপায় ছিল না। জানি যা করেছি তা সঠিক নয়। তবে এছাড়া আমার আর কিছু করার ছিল না।’

ভুয়া সাক্ষ্য দেওয়ার বিষয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কথা বলতে পারব না।’

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সঙ্গে কয়েক দফা সাক্ষাৎ করতে চাইলেও মন্ত্রীকে নিজ দফতরে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, দুর্নীতি দমন কমিশন গত ১৩ মে পুলিশ সদর দফতর ও পিএসসিতে চিঠি পাঠায়। ওই চিঠিতে শিমুলের চাকরিতে যোগদান সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্যাদি ১০ কার্যদিবসের মধ্যে নথি আকারে চাওয়া হয়েছে।সারাবাংলা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions