রাতভর পার্টি, স্যারদের সঙ্গী তরুণীরা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪
  • ৯৮ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- কোটচাঁদপুর উপজেলা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের এলাঙ্গী গ্রামের একটি রিসোর্ট নিয়ে এলাকাবাসীর বিস্ময়ের শেষ নেই। তাদের চোখের সামনেই প্রায় ২৫ বিঘা জমির উপর গড়ে উঠেছে এ রিসোর্ট। কিছুটা নির্জন এলাকায়, আশেপাশে নেই কোনো বসতভিটা। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর আর এলাকাবাসী রিসোর্টটিতে ঢুকতে পারেননি। এতে তাদের কোনো আক্ষেপ নেই। কিন্তু বাড়িটি ঘিরে যে কর্মকাণ্ড চলে তাতে তাদের অনেক কৌতূহল। বিশেষ করে কিছুদিন পরপর গভীর রাতে এ বাড়িতে পার্টি হয়। যেখানে জনপ্রতিনিধি, প্রাশসন থেকে শুরু করে বিত্তশালী অনেকের জমায়েত ঘটে। কখনো স্বল্প পরিসরে, কখনো বৃহদাকারে। কী ঘটে এ বাড়িতে- কৌতূহলী এলাকাবাসীর সহজ উত্তর, কালো গ্লাসে সবাই এ বাড়িতে রাতে প্রবেশ করে।

সকাল হলে চলে যায়। শুনেছি ভিতরে নানা ধরনের রঙ্গলীলা চলে। এলাকাবাসীর এমন অভিযোগের সত্যতা মিলে এ রিসোর্টে কাজ করা কর্মচারীদের মুখেও। তবে তারা নাম প্রকাশ করতে রাজি নন। বলেন, অনেক সময় এসব দেখে চাকরি ছেড়ে চলে যাই মনে হয়। কিন্তু পেটের দায়ে পারি না।

নিলাম ভিটা নামের রিসোর্টটিতে গিয়ে দেখা যায়, গেটে তালা ঝুলানো। বিশাল রিসোর্টের ভিতরে কেউ নেই। আছে কেবল ৪টি জার্মান শেপার্ড ও কয়টি রাজহাঁস। দু’টি ডুপ্লেক্স বাড়ির সামনে বিশাল পুকুর ও দৃষ্টিনন্দন সুইমিংপুল। আধুনিক জিমনেসিয়াম। সামনে একটি পরিত্যক্ত হুন্ডাই নোহা গাড়ি। ছোট ছোট একাধিক ঘর রয়েছে যেখানে থাকতেন কর্মচারীরা। খোলা মাঠসহ পুরো রিসোর্ট ঘিরে রয়েছে নানা জাতের গাছগাছালি। বেশ গোছানো পুরো বাড়িটি সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং করা হয়। বাড়িটির তত্ত্বাবধানে ২২ জন কর্মচারী নিয়োজিত। কিন্তু মাসখানেক আগে লস হচ্ছে বলে ছাঁটাই করা হয়েছে ১৬ জনকে। এখন আছে কেবল ৬ জন। তাদেরও বেতন হয় না দুই মাস।

বৃহস্পতিবার সকালে অন্যদিনের মতো রিসোর্টে গিয়েছিলেন কর্মচারীরা। কিন্তু তাদের রিসোর্ট থেকে চলে যেতে বলেন শাহীনের লোকজন। তারা বলেন, পরিস্থিতি খারাপ আপনারা তালা মেরে চলে যান। বাড়ির সামনে থাকা দারোয়ান আব্দুর রাজ্জাকও তালা মেরে রিসোর্ট ত্যাগ করেন। ইলেক্ট্রেশিয়ান মো. সুজন হোসেনকেও চলে যেতে বলেন বাবুর্চি। সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন রিসোর্টের তত্ত্বাবধানে থাকা শিমুল নামের আরেকজন। তিনিই মূলত শাহীনের দেশে থাকা লোকজনের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।

রিসোর্টের দারোয়ান আব্দুর রজ্জাক বলেন, আমাকে সকালে বলা হয়েছে যেন তালা মেরে চলে যাই। তাই আমি চলে এসেছি। বলা হয়েছে পরিস্থিতি খারাপ। এ বাড়িতে কারা আসে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কালো গ্লাসের গাড়িতে সবাই ঢোকে বুঝতে পারি না।
অন্য একজন কর্মচারী বলেন, প্রায় রাতেই এখানে পার্টি হতো। স্যার (শাহীন) আসলে প্রায়ই এখানে আসতেন। তখন সারা রাত স্যাররা আড্ডা দিতেন। মাদকসহ বিভিন্ন খাবারের ব্যবস্থা থাকতো। প্রতিবারই দুই থেকে তিনজন করে ভিন্ন ভিন্ন তরুণী থাকতো। তারা স্যারদের নিয়ে আলাদা আলাদা রুমে থাকতেন। কী করেন তা জানি না। তিনি বলেন, মাঝে মাঝে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতি দেখি যে মনে হয় চাকরি ছেড়ে চলে যাই। কিন্তু পেটের দায়ে পারি না।

অবশ্য এদের কথারও মিল পাওয়া যায় রিসোর্টের ভিতরে। ওবায়দুল্লাহ নামে চাঁদপাড়া গ্রামের একজন বলেন, এখানে কী হয় জানি না। তৈরির পর আর কেউ ভেতরে ঢুকতে পারে না। প্রায় সময় দেখি কালো গ্লাসে রাতের বেলায় অনেকে ভেতরে প্রবেশ করে। পার্টি হয় শুনি। তিনি বলেন, শাহীন এখানে সময় কাটান। তার ঢাকার বন্ধুরাও আসে বিভিন্নজনকে নিয়ে।

আরেক গ্রামবাসী বলেন, ভিতরে অনেক অবৈধ কাজ হয়। মদ, নারীতে মত্ত থাকেন তারা। কিছুদিন আগে পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও এসেছিলেন। আরেকজন বলেন, রাতে বড় বড় গাড়িতে ভিআইপিরা আসেন। সময় কাটান। ভেতরে কী হয় বোঝার উপায় নেই। আরেক কর্মচারী বলেন, স্যাররা একটু মনোরঞ্জন করেন এখানে এই আরকি।

আলী মনসুর নামে পাশের এলাকার বাসিন্দা বলেন, শাহীন কখনো গ্রামের মানুষের সঙ্গে মিশে না। বড় গাড়িতে রিসোর্টে আসে। রাতে পার্টি করে। আবার চলে যায়।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions