বাংলাদেশ ব্যাংকের সব লকার ফ্রিজ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ২৫ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- বাংলাদেশ ব্যাংকের মহানিরাপত্তা এলাকার কয়েন ভল্টে অর্থ-সম্পদ জমা রাখার ব্যক্তিগত সব লকার ফ্রিজ করা হয়েছে। ওই সব বিশেষ লকারে গোপনে অপ্রদর্শিত বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ জমা রয়েছে বলে মনে করছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এ লকারগুলো। তারা ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ লকারে রেখেছেন, যা দুদক আইন পরিপন্থি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনোভাবেই যাতে লকার থেকে অর্থ-সম্পদ সরিয়ে নিতে না পারেন, সে জন্য সব লকার ফ্রিজ করার অনুরোধ জানিয়ে গত রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন দুদক পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামান।

ওই চিঠিতে বলা হয়, গত ৩০ জানুয়ারি দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দুদকের কার্যক্রম ও সম্পদ পুনরুদ্ধার বিষয়ে আলোচনা করেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত সম্পদ নিয়েও আলোচনা হয়। অর্থ উপদেষ্টা ভল্টে রক্ষিত লকারের সম্পদ ফ্রিজের সম্মতি দিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গভর্নরকে দেওয়া দুদকের চিঠি ও অর্থ উপদেষ্টার সম্মতি থাকায় ভল্টের সব লকারের সম্পদ ফ্রিজ করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে এর মালিকরা তাদের লকার থেকে কোনো ধরনের অর্থ-সম্পদ সরিয়ে নিতে পারবেন না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই সব লকার খোলা ও লকারে থাকা অর্থ-সম্পদের তালিকা তৈরির অনুমতির জন্য গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজের কাছে আবেদন জমা দিয়েছে দুদক। বিকেলে আবেদনটি জমা দেওয়ায় গতকালই এ-সংক্রান্ত আদেশ দেওয়া সম্ভব হয়নি। আজ মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত আদেশ দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আদালতের আদেশ পাওয়ার পর ওই সব লকার খোলা, অর্থ-সম্পদ গণনা ও তালিকা তৈরির জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত করার জন্য দু-এক দিনের মধ্যে ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন জমা দেবে দুদক।
জানা গেছে, দুদক পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি বিশেষ অনুসন্ধান দল বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওই সব বিশেষ লকারের সম্পদ অনুসন্ধান করছে। ওই দল গত ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এস কে সুর) ঢাকার বাসায় অভিযান চালিয়ে আলমারির নিচে বিশেষ কায়দায় রাখা নগদ ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে। ওই অভিযান থেকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে থাকা লকারগুলোর সন্ধান মেলে। পরে এস কে সুরের লকার খুলে দেশি-বিদেশি মুদ্রা, স্বর্ণালংকারসহ ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়, যা তাঁর নিয়মিত আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করা হয়নি।
দুদকের চিঠিতে আরও বলা হয়, তল্লাশিকালে লকার-সংক্রান্ত রেজিস্টার পরীক্ষা করে দেখা যায় সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর সিলগালা লকার পাওয়া যায়। ওই সব লকারের ভেতর সিলগালা কোটায় অপ্রদর্শিত সম্পদ থাকার অবকাশ রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ভল্টে রক্ষিত কর্মকর্তাদের বিশেষ লকার খুলে রক্ষিত মালামাল যাতে কেউ নিতে না পারে, তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। সুত্র: সমকাল

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions