শিরোনাম
বিশ্বব্যাংক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক এখনো বহাল,ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মা সচিবদের ক্ষমতা! ৯ কারাগারে ৭৫ ভিআইপি বন্দী,আসাদুজ্জামান নূর ও কামাল মজুমদার হাসপাতালে জাতীয় ঐক্যের ডাক সশস্ত্রবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাদের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদসহ গুরুত্ব পাচ্ছে ২০ বিষয় রাঙ্গামাটি পৌর প্রাঙ্গণে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ বন্ধ, পৌর সম্পদ দখলের ষড়যন্ত্র, ১২ কোটি টাকার টেন্ডারের কাজ পেতে চাপ সৃষ্টি করছে বিএনপি খাগড়াছড়িতে ঘরে ঢুকে নারীকে নৃশংসভাবে হত্যা,স্বর্ণালঙ্কার চুরি শেখ হাসিনা আবারো রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছেন! ‘ছাত্র-জনতার ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে পুলিশকে নতুন করে দেশ গড়ার সুযোগ করে দিয়েছে’–খাগড়াছড়িতে রেঞ্জের ডিআইজ রাঙ্গামাটি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও ডিজিএফআই এর কর্নেলের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত অবশেষে আপন নীড়ে অসহায় সেই বৃদ্ধ

নারী আসন নির্ধারণ হবে ঘূর্ণায়মানভাবে, সীমানায় আসতে পারে পরিবর্তন

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ২৬ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে সাধারণ আসনের মতো সরাসরি নির্বাচন বা ‘ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট’ পদ্ধতি চালুর কথা ভাবছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এ পদ্ধতিতে দেশের অনেক আসনের সীমানা পাল্টে যেতে পারে। যে আসনগুলো নারীদের জন্য নির্ধারণ করা হবে সে আসনে নারীরাই প্রার্থী হবেন। কোনো পুরুষ সেখানে প্রার্থী হতে পারবেন না।

রাজনৈতিক দলগুলোকে ওই সব আসনে নারী প্রার্থীকেই মনোনয়ন দিতে হবে। বিদ্যমান পদ্ধতি অনুসারে আসনপ্রাপ্তির অনুপাতে বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এসব আসন বণ্টন এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের কিছু নারীর জন্য এটি সীমাবদ্ধ থাকবে না। অন্য নারীরাও প্রার্থী হতে পারবেন। কোনো দলের ইচ্ছা বা দয়ায় নয়, জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে ভোটারদের ভোটে নির্বাচিত হবেন তারা।

সাধারণ আসনের অন্য সংসদ সদস্যের মতো নিজ নির্বাচিত এলাকার প্রতিনিধিত্ব করবেন। আবার এসব আসন নির্দিষ্টও থাকবে না। ঘূর্ণায়মানভাবে এসব আসন এলাকা পাল্টে যাবে। পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি এলাকায় এসব আসন নির্ধারণ করা হবে।
কোনো আসন আগামী নির্বাচনে নারী প্রার্থীদের জন্য নির্ধারণ করা হলে পরেরবারের নির্বাচনে ওই আসন নারী-পুরুষ সব প্রার্থীর জন্যই উন্মুক্ত হবে।

এ বিষয়ে গতকাল ৩০ নভেম্বর নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, ‘আমাদের কমিশন থেকে প্রতিটি জেলায় একটি করে নারী আসন নির্ধারণের প্রস্তাব করা যায় কি না—সেই বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন যেহেতু ৫০টি এবং সব জেলার জনসংখ্যা ও আয়তন এক নয়, সে কারণে এটি এখন সম্ভব না বলেই মনে হয়েছে।’

ঘূর্ণায়মানভাবে নারী আসন নির্ধারণ এবং সীমানা পরিবর্তন সম্পর্কে উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ধরেন একটি জাতীয় সংসদের আসন দুটি। আগামী নির্বাচনে ওই জেলার সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে তিনটি আসন করা হবে।

এই তিনটি আসনের একটি নির্ধারণ করা হবে নারীদের জন্য। পরের বছর ওই জেলায় নারীদের জন্য কোনো আসন থাকবে না। তিনটি আসনই সাধারণ আসন হিসেবে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলায়ই নারী আসন নির্ধারণ করা হবে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের কয়েকটি রাজ্যেও এ পদ্ধতি চালু আছে।’

নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতে, এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে বিদ্যমান জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত মহিলা আসন) নির্বাচন আইন-২০০৪’, জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন এবং সংবিধানেও পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ বিদ্যমান সংবিধানের ৬৫(৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘…তাহারা আইনানুযায়ী পূর্বোক্ত (সরাসরি ভোটে নির্বাচিত) সদস্যদের দ্বারা সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির ভিত্তিতে একক হস্তান্তরযোগ্য ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হইবেন।’ যদিও এ পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। দলের সিদ্ধান্ত অনুসারে একক প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

ড. মো. আব্দুল আলীম এ বিষয়ে আরো বলেন, ‘নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনে সরাসরি ভোটের পদ্ধতি চালুর বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। বিষয়টি যেহেতু সংবিধান সংশ্লিষ্ট বিষয়, সে কারণে আমরা সংবিধান সংস্কার কমিশনের সঙ্গেও আলোচনা করব। দেশের নারী নেত্রীরাও দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন। নির্বাচন সংস্কার কমিশন এ বিষয়ে সুপারিশ জানাতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলো এতে সম্মত হলে দেশের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই পদ্ধতি চালু হওয়া সম্ভব। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংস্কারের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠান হলে পরবর্তী নির্বাচনে এই পদ্ধতি চালুর কথা ভাবতে হবে।’

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের আরেক সদস্য বেগম জেসমিন টুলি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমার মনে হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় পরিবর্তন হতে পারে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনে ‘ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট’ পদ্ধতি চালু করা। এতে নারীর ক্ষমতায়ন বাড়বে। বিদ্যমান পদ্ধতিতে সংসদে সংরক্ষিত আসনে কোটার ভিত্তিতে যে নারীরা আসছেন তাদের বেশির ভাগই প্রকৃত অর্থে রাজনীতিক নন। এতে নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে না। বিদ্যমান পদ্ধতি নারীদের স্বার্থ রক্ষা না করে বড় দলগুলোর স্বার্থ রক্ষা করে।

যে কারণে নারীদের সংরক্ষিত আসন

নারীদের রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালের সংবিধানে পরবর্তী ১০ বছরের জন্য সংসদে নারীদের জন্য ১৫টি আসন সংরক্ষণের বিধান রাখা হয়। ১৯৭৮ সালে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৩০ এবং মেয়াদ ১৫ বছরে উন্নীত করা হয়। ১৯৯০ সালের সংবিধানের দশম সংশোধনীতে মেয়াদ আবার ১০ বছরে নামিয়ে আনা হয়। সময়মতো মেয়াদ না বাড়ানোয় ২০০০ সালে সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের বিলুপ্তি ঘটে। ২০০১ সালের অক্টোবরে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত কোনো আসন ছিল না। ২০০৪ সালে সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদের ৪৫টি নারী আসন আরো ১০ বছরের জন্য সংরক্ষণের বিধান করা হয়।

ওই বছরের ২৯ নভেম্বর সংরক্ষিত নারী আসন নির্বাচনী বিল পাস হয়। একই সঙ্গে আগের ব্যবস্থা পাল্টে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর প্রাপ্ত আসন অনুপাতে সংরক্ষিত নারী আসন বণ্টনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর ফলে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সব দলের জন্যই এ আসন পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। আগে সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্ষমতাসীন দলই সব আসন পেত।

এই আইন অনুসারে অষ্টম জাতীয় সংসদের মেয়াদের শেষ দিকে এবং নবম জাতীয় সংসদের মেয়াদের প্রথম দিকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন হয়। নবম জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৫০-এ উন্নীত করা হয় এবং দশম জাতীয় সংসদের জন্য একইভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচন হয়।

নবম জাতীয় সংসদের প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে শুরু করে ১০ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ ২০১৯ সালের ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের মেয়াদ ছিল। এ অবস্থায় ২০১৮ সালে সংবিধানের সপ্তদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের মেয়াদ আরো ২৫ বছর বাড়ানো হয়।

ওই সময়ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের পক্ষে বলা হয়, ‘যে পদ্ধতিতে সংরক্ষিত আসনের নারীদের নির্বাচিত করা হয় তা যথাযথ নয়। তাদের কোনো নির্বাচনী এলাকা নেই। ক্ষমতাও নেই। তাদের পদগুলো আলংকারিক। সংরক্ষিত নারী আসনকে কার্যকর করতে হলে তাদের সরাসরি নির্বাচনের আওতায় আনতে হবে।

একই সঙ্গে সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা বাড়াতে হবে। তাহলেই নারীদের সংরক্ষিত আসনের বিধান কার্যকর হবে এবং জনগণ এর সুফল পাবে।’ নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার সে সময় এই কথাগুলোই বলেছিলেন।

গত ২৩ নভেম্বর নির্বাচন ভবনে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে নারী নেত্রীরা সাংবাদিকদের বলেন, তারা সংসদে সত্যিকারের নারী প্রতিনিধিত্ব চান। কোটাভিত্তিক আসন চান না।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহসভাপতি রেখা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বলেছি, সংসদের নারী আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ১৫০ করা হোক। এতে প্রতি দুই আসনের জন্য একটি নারী আসন করা হোক এবং সেখানে সরাসরি নির্বাচন হোক। এই দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের।’

ওই দিন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নারীরা সরাসরি নির্বাচন চেয়েছেন। অনেকে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতি চেয়েছেন।কালের কণ্ঠ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions