হাসপাতালে কেমন আছেন আহতরা,পঙ্গুদের জন্য মাসিক ভাতা চালুর দাবি

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৫৬ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আড়াই মাস হতে চললেও আহতদের অনেকেই হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন। তাদের অনেকেই বুলেটের আঘাতে হাত-পা হারিয়ে স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। সেই সঙ্গে সার্জারি-পরবর্তী ইনফেকশনে অঙ্গহানির শঙ্কা আরও বাড়ছে। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তাদের ভবিষ্যৎ। এদিকে পঙ্গুত্বসহ বিভিন্ন অঙ্গহানির শিকার আহতদের জন্য মাসিক ভাতা চালুর দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল সরেজমিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট ঘুরে দেখা যায়, ভবনটির পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ ইউনিটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে ইউনিট দুটির বেশির ভাগ বেডই ফাঁকা। অধিকাংশই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। দুই ইউনিট মিলিয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৫ জনের মতো। তবে চিকিৎসাধীন অনেকেরই রয়েছে অঙ্গহানির শঙ্কা।
রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারের আশুলিয়ায় কবি নজরুল স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র হাবিবুর রহমান (১৭)। পুলিশের ছোড়া গুলিতে ভেঙে গেছে তার মেরুদণ্ডের হাড়। ছিঁড়ে গেছে পায়ের রগও। ডাক্তার বলে দিয়েছেন, হাবিবুরের পক্ষে স্বাভাবিক হাঁটাচলা করা সম্ভব নয়। তার বাম পা অচল হয়ে গেছে।

৫ আগস্ট বন্ধুদের সঙ্গে বিজয় মিছিলে অংশ নেয় হাবিবুর। মিছিলটি আশুলিয়া থানার কাছে পৌঁছালে পুলিশ অনবরত ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় একটি গুলি তার কোমরে আঘাত করে। এরপরই অচেতন হয়ে পড়ে সে। হাবিবুরের ভাষ্য, আমার মতো যারা পঙ্গু হয়েছে, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ হারিয়েছে, তারা আর কখনোই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে না। আমাদের জন্য যেন মাসিক ভাতা কিংবা অন্য যে কোনো ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। তাহলে আমাদের জীবন কিছুটা সহজ হবে। এটাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি।

হাবিবুরের পিতা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি আশুলিয়ার এক গার্মেন্টসে কাজ করি। আয়ের টাকা দিয়ে পাঁচজনের সংসার চালানোই কষ্ট হয়ে যায়। ছেলের চিকিৎসা কীভাবে করব? সরকারের কাছে আমার দাবি, আমার ছেলে যাতে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারে সরকার যেন সেই ব্যবস্থা করে। এ ছাড়া যারা পঙ্গু হয়েছে তাদের জন্য মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করার দাবি জানাই।

এদিকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসায় ধীরগতির অভিযোগ করেছেন সাভারের আশুলিয়ায় গুলিবিদ্ধ খোকন আহমেদ। তিনি বলেন, দুই দফায় সার্জারির পরও ইনফেকশনে ডান পায়ের গোড়ালিতে পচন ধরেছে। আমাকে এক মাস এখানে রেখে পায়ের সার্জারি করানো হয়েছে। সেটাও ইনফেকশন হয়ে গেছে। এখানে এক মাস থেকে আমার কী লাভ হলো? প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিলে যেখানে ১০ দিনে সুস্থ হওয়া যায় একই চিকিৎসা এখানে দুই মাস ধরে দেওয়া হচ্ছে।

এ ছাড়া রোগী নিবন্ধন ফরমে নামের ভুলে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের’ আর্থিক সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করেন ফিরোজ আহমেদ। ৫ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় চিটাগাং রোডে ডান হাঁটুতে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। সার্জারির মাধ্যমে গুলি বের করা গেলেও তিনি এখনো পুরোপুরি সুস্থ হননি। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে। তিনি বলেন, আমার নাম মো. ফিরোজ আহমেদ। কিন্তু যখন নাম লিখতে আসছিল তখন তারা মো. লিখে নাই। এজন্য আমাকে টাকা দেয় নাই। তারা বলছে, মোবাইলে টাকা পাঠাই দিবে। কিন্তু আজো টাকা পাই নাই।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions