ফিলিস্তিনে ইসরাইলি দখলদারিত্ব অবৈধ, জাতিসংঘে প্রস্তাব গৃহীত

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪৪ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে আগামী এক বছরের মধ্যে ইসরাইলের ‘অবৈধ দখলদারিত্ব’ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে (ইউএনজিএ) একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। জাতিসংঘের এ পদক্ষেপকে ‘ঐতিহাসিক’ অভিহিত করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।

গতকাল বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনের একটি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১২৪টি দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল, আর্জেন্টিনাসহ বিপক্ষে ভোট দেয় ১৪টি দেশ। আর ভারতসহ ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল ৪৩টি দেশ।

গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী, আগামী ১২ মাসের মধ্যে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের বেআইনি উপস্থিতি বন্ধ করতে হবে। এছাড়া দখলদারিত্বের কারণে ফিলিস্তিনিদের ক্ষতিপূরণের জন্য ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার তিন মাসের মধ্যে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে প্রস্তাবটি বাস্তবায়নের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) সম্প্রতি যে পরামর্শমূলক মতামত দিয়েছে, নতুন প্রস্তাবে তাকেই সমর্থন করা হয়েছে। আইসিজে বলেছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের উপস্থিতি বেআইনি এবং অবশ্যই এর শেষ হওয়া উচিত।

যদিও সাধারণ পরিষদে গৃহীত হলেও প্রস্তাবটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক হবে না। তবে এর সমর্থনে বিশ্ববাসী কী চায় সেই জনমত প্রকাশ করবে।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ইসরাইলের ১১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। এর পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। নেতানিয়াহু বাহিনীর বর্বরতায় এখন পর্যন্ত ৪১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

গাজা যুদ্ধের এক বছরের প্রাক্কালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হওয়া প্রস্তাবের বেশ গুরুত্ব রয়েছে। জাতিসংঘের বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিশ্বনেতাদের নিউইয়র্কে জড়ো হওয়ার কয়েক দিন আগে এ পদক্ষেপ ইসরাইলকে আরও বিচ্ছিন্ন করবে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন। একই দিনে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সেখানে ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে।

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর এই ভোটকে ফিলিস্তিনের ‘স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের সংগ্রামে একটি টার্নিং পয়েন্ট’ বলে অভিহিত করেছেন।

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ইসরাইলকে এই প্রস্তাব মেনে চলার জন্য চাপ দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে জাতিসংঘে ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন ভোটের ফলাফলকে ‘একটি লজ্জাজনক সিদ্ধান্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, এই প্রস্তাব ফিলিস্তিনের কূটনৈতিক সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করা ছাড়া আর কিছুই নয়।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বুধবারের গৃহীত প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। এইচআরডব্লিউ’র জাতিসংঘের পরিচালক লুই চারবোনিউ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইসরাইলের উচিত অবিলম্বে জাতিসংঘের বেশিভাগ সদস্য রাষ্ট্রে দাবির প্রতি মনোযোগ দেয়া।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও জাতিসংঘে গৃহীত ফিলিস্তিনের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। সংস্থাটি ইসরাইলকে জাতিষংঘের গৃহীত প্রস্তাবকে মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।

 

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions