শিরোনাম
এবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চাইবে পিলখানায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের ৯ নির্দেশনা রাঙ্গামাটি শহর থেকে উদ্ধারকৃত বন মুরগি কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবমুক্ত বান্দরবানে মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের হোতা রাহুল তঞ্চঙ্গ্যা গ্রেফতার রাঙ্গামাটিতে চট্টগ্রামে আইনজীবি হত্যার প্রতিবাদ মানববন্ধন বান্দরবানে নাশকতা মামলায় দুই চেয়ারম্যান কারাগারে বিচারপতি নিয়োগে কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে ছাপিয়ে ২২৫০০ কোটি টাকা ৬ ব্যাংককে দেওয়া হলো, রবিবার থেকে সংকট কাটছে আইনজীবী সাইফুল হত্যা ও চিন্ময় কৃষ্ণ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনার বিবৃতি ভেঙেছে প্রেম, আদিত্যকে ধরে রাখতে যা করেছেন অনন্যা

ঢাকা মহানগরে পুলিশের গাড়িরই ফিটনেস নেই

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০২৪
  • ৮৩ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক উত্তরা বিভাগের একজন অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ৬ মে সকালে দপ্তরেরই একটি গাড়ি নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন। পথে একাধিকবার গাড়িটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সড়কে তাঁর গাড়ির পেছনে আটকে পড়ে আরও শত শত যানবাহন। একপর্যায়ে সড়কে দাঁড়িয়েই তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বার্তা পাঠান নিজের অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ওই এডিসির পাঠানো বার্তায় উল্লেখ ছিল, ‘আমি কী যানজট সরাব? নিজেই যানজট সৃষ্টি করছি। দ্রুত কিছু একটা ব্যবস্থা করুন।’

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ ঢাকায় অবৈধ ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযানে নামে। ফিটনেস না থাকায় নাগরিকদের গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠানোসহ জরিমানা করে ট্রাফিক পুলিশ। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই সব অভিযানে পুলিশ নিজেই ব্যবহার করে ফিটনেসবিহীন যানবাহন। ডিএমপি ২০-৩০ বছরের পুরোনো ছয়টি রেকার এখনো ব্যবহার করে। এমনকি আসামি বহন করার প্রিজনার্স ভ্যানসহ জরুরি কাজে ব্যবহৃত ৩৯৬টি ফোর-হুইলারের ফিটনেস নেই। এসব গাড়ি কর্মকর্তাদের চলাচল ছাড়াও টহল, আসামি বহনসহ কর্মস্থল থেকে পুলিশ সদস্যদের আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে জেনেও জোড়াতালি দিয়ে গাড়িগুলো চালাচ্ছে ডিএমপি।

লক্কড়ঝক্কড় এসব গাড়ির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের যে গাড়িগুলো রয়েছে, সেগুলো মেরামত করে সংকট কাটিয়ে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। অপারেশনাল কাজ যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সে জন্য আমাদের কিছু পুরোনো গাড়ি চালাতে হচ্ছে। তবে সেগুলো ধীরে ধীরে বাদ দেওয়া হবে। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মহানগরে বিভিন্ন পদে মোট পুলিশ সদস্য ৩০ হাজার ৬৭৯ জন। দাঙ্গা প্রতিরোধ, টহল, থানা-পুলিশের অপারেশনাল কাজ, কর্মকর্তাদের ব্যবহার, আসামি বহনসহ বিভিন্ন কাজে প্রতিষ্ঠানটি ৩১ ধরনের ফোর-হুইলার ব্যবহার করে। কাগজ-কলমে তাদের মোট ফোর-হুইলার গাড়ির সংখ্যা ১ হাজার ৪৭৭। এর মধ্যে সচল আছে ১ হাজার ৩৫৩টি। সচল গাড়ির মধ্যে আবার ২৩ শতাংশই অনুদানে পাওয়া। অর্থাৎ ৩১১টি গাড়িই বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পাওয়া। ডিএমপির গাড়িগুলোর মধ্যে এসইউভি ১৪৭টি, সেডান কার ৯২টি, সিঙ্গেল কেবিন পিকআপ ২১৬টি, ডাবল কেবিন পিকআপ ৪৬১টি, ট্রাক ১৯৫টি, বাস ৯২টি, প্রিজনার্স ভ্যান ৪০টি, মাইক্রোবাস ৮৫টি, রেকার ৫৭টি, এ ছাড়া এপিসি, অ্যাম্বুলেন্স, বোম্ব ডিসপোজাল ভ্যানসহ আরও ৭২টি গাড়ি আছে।

সূত্রমতে, এসব গাড়ির মধ্যে ১০ বছরের পুরোনো ৭৫৩টি, ১৫ বছরের পুরোনো ১৬৭টি এবং ২০-৩০ বছরের পুরোনো ৩৯৬টি। ২০-৩০ বছর আগের একটি গাড়িরও ফিটনেস নেই। এ ছাড়া ১৫ বছর আগে কেনা গাড়িগুলোর অবস্থাও ভালো নয়। সেগুলোও নির্ধারিত মাইলেজের বেশি পথ চলায় এক অর্থে আয়ুষ্কাল হারিয়েছে।

বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, প্রতিটি গাড়ির একটি আয়ুষ্কাল আছে। প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গাড়ির আয়ুষ্কাল মাপার জন্য দুটি বিষয় উল্লেখ করে। তা হলো বছর ও মাইলেজ। যেটা আগে শেষ হবে, সেই অনুযায়ী গাড়ি পরিত্যাগ করতে হবে। পুলিশ যেসব গাড়ি ব্যবহার করে, সেগুলোর আয়ুষ্কাল সাধারণত ২০ বছর। তবে ২৪ ঘণ্টাই চালু থাকায় এসব গাড়ি মাইলেজ হিসাবে আরও আগেই আয়ুষ্কাল হারায়। এগুলো ব্যবহার অযোগ্য হওয়ায় জীবনহানির আশঙ্কা রয়েছে। এসব গাড়ি ব্যবহারে সড়কে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

জানা গেছে, পুরোনো গাড়ি বেশি হওয়ায় মেরামত ও পরিচালনা ব্যয় দিন দিন বাড়ছে। কারণ, পুরোনো গাড়ির জ্বালানি লাগে বেশি, যন্ত্রাংশও পরিবর্তন করতে হয় ঘন ঘন। অনেক সময় যন্ত্রাংশ পাওয়া যায় না। তখন জোড়াতালি দিয়ে চালানো হয়। প্রতিবছর গাড়ি মেরামতে ডিএমপির গড়ে ১৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়।

জানা যায়, ডিএমপি দাঙ্গা দমনে যেসব গাড়ি ব্যবহার করে, সেগুলোও ২০ বছরের পুরোনো। আটটি জলকামানের মধ্যে পাঁচটিই ২০ বছর আগের। ৪০টি প্রিজনার্স ভ্যানের মধ্যেও ১১টি ২০-৩০ বছর আগের।

সাবেক আইজিপি এবং একসময়ের ডিএমপি কমিশনার এ কে এম শহীদুল হক বলেন, পুলিশের গাড়ি অন্যান্য সরঞ্জামের মতো পুলিশিং ইক্যুইপমেন্ট হিসেবে বিবেচিত। কারণ, এটি অপরাধ দমন ও জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যবহৃত হয়। তাই পুলিশের গাড়ি অপরাধীর গাড়ির চেয়ে ভালো হওয়া দরকার। কিন্তু তা হচ্ছে না। এ জন্য সরকারকে আন্তরিক হতে হবে। যারা ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে, তাদের গাড়িরই যদি ফিটনেস না থাকে, তাহলে সেটা হাস্যকর। তাই এই সমস্যার সমাধান করা উচিত।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions