ডেস্ক রির্পোট:- পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় সিলেট জেলায় প্রায় চার লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বাড়িঘরে পানি উঠে পড়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছেন প্রায় চার হাজার মানুষ।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) সন্ধ্যায় ১৩ উপজেলা ও সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে সিলেট জেলা প্রশাসনের বন্যা বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে সিলেটে আবার বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সিলেটের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলার ৬১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ৩ হাজার ৯২৪ জন আশ্রয় নিয়েছেন। জেলায় বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৭১ হাজার ৫০৭ জন।
এদিকে, সিলেটে দ্বিতীয় দফায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর জানিয়েছেন।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিকাল ৬টার দিকে কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩৩ সেন্টিমিটার এবং সিলেট শহর পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আর কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জের আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার এবং ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বইছে বিপৎসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে।
এ ছাড়া সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে বইছে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে।
আর সারি-গোয়াইন নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ০ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার পানি ঢুকে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
এতে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
এরই মধ্যে কয়েকটি ওয়ার্ডে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্র ও বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
বিদ্যুৎ সচল রাখতে তৎপরতা
এদিকে বন্যার মধ্যে সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে প্রস্তুত রয়েছে সেনাবাহিনী, সিলেট সিটি করপোরেশন ও বিদ্যুৎ বিভাগ।
মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে নগরীর দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্র সেনাবাহিনীর একটি দল নিয়ে পরিদর্শন করেছেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
এ সময় তিনি বলেন, ‘এই সাব-স্টেশনে কোনো সমস্যা হলে চালু রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হবে। এ ছাড়া যাতে পানি না উঠে সেজন্যও কাজ করা হচ্ছে।’
বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি উপ-কেন্দ্রটি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সিলেট-৩ এর অধীন। এই উপ-কেন্দ্রের মাধ্যমে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন, বরইকান্দি, কামালবাজার, মাসুকগঞ্জ, বিসিক, লালাবাজার, শিববাড়ী ও কদমতলীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসহ সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সিলেট-৩ নির্বাহী প্রকৌশলী শ্যামল চন্দ্র সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপকেন্দ্রটি ঝুঁকিতে রয়েছে। পানি উঠার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এখনো উঠেনি। আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনী সাহায্য করবে।’