ডেস্ক রির্পোট:- পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার উল্টো ফল হয়েছে এবং এটি রাশিয়ার জন্য শাপেবর হয়েছে বলে দাবি করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
তিনি বলেছেন, রাশিয়া ডলারে লেনদেন করতে না পারায় নিজস্ব মুদ্রা রুবল আরও শক্তিশালী হয়েছে।”
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর ফলে নিজ মুদ্রা রুবলে বৈদেশিক বাণিজ্য শুরু করে রুশ কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, “এখন রাশিয়ার মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় ৪০ শতাংশ হচ্ছে নিজস্ব মুদ্রা রুবলে। ডলার বা ইউরোতে রাশিয়া বাণিজ্য করছে না। সেই সঙ্গে রাশিয়ার বন্ধু নয়— এমন কোনও দেশের মুদ্রায়ও তারা বাণিজ্য করছে না। এই পরিস্থিতিতে রুবলের কদর বেড়েছে।”
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহের শেষ দিকে সেন্ট পিটার্সবার্গে ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামে (এসপিআইইএফ) যোগ দেন পুতিন। সেখানে তিনি বলেন, “রাশিয়ার বন্ধু দেশগুলো এখন আমাদের বিশেষ মনোযোগ দাবি করছে; কারণ, তারাই বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যৎ। এরই মধ্যে এসব দেশগুলো রাশিয়ার তিন-চতুর্থাংশ বাণিজ্যের অংশীদার।”
এ সময় ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো উদীয়মান বাজারগুলোর কথা উল্লেখ করে পুতিন বলেন, ব্রিকস জোটের দেশগুলোর সঙ্গে স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেন বাড়ানোর চেষ্টা করবে মস্কো। বন্ধু নয়, এমন দেশগুলোর মুদ্রায় রাশিয়ার লেনদেন গত বছরের তুলনায় অর্ধেক হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমদানি ও রফতানি কার্যক্রমে রুবলের অংশ বাড়ছে, বর্তমানে যা প্রায় ৪০ শতাংশে উঠেছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে রুবলে লেনদেনের পরিমাণ এক বছর আগের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে।
রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বাজার ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনার কথাও বলেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। যেমন, চলতি দশকের শেষ নাগাদ রাশিয়ার পুঁজিবাজারের আকার দ্বিগুণ করা, আমদানি কমানো ও স্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগ বাড়ানো।
এদিকে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের সঙ্গে চীনের মুদ্রা ইউয়ানেও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বাড়ছে। সৌদি আরবের কাছ থেকে চীন ইউয়ানে তেল কেনার বন্দোবস্ত প্রায় করে ফেলেছে। বস্তুত রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং মূল্যস্ফীতি রোধে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ যেভাবে আগ্রাসী হারে নীতি সুদহার বাড়ায়, এর জেরে ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যায়। এতে প্রবল ডলার-সংকট দেখা দিলে অনেক দেশ বাধ্য হয়ে অন্যান্য মুদ্রায় লেনদেন শুরু করে। ব্রিকসও ডলারের পরিবর্তে অভিন্ন মুদ্রা বা নিজেদের মুদ্রায় লেনদেন করতে চায়। সে কারণেও রুবলে আন্তর্জাতিক লেনদেন বাড়ছে। সূত্র: সিএনবিসি