শিরোনাম
বাণিজ্য সম্ভাবনায় ‘সেভেন সিস্টার্স’ দুবাইয়ে বিপু-কাজলের ২০০ কোটির দুই ভিলা পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে,প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দিকে তাকিয়ে সবাই শিক্ষার্থীদের পরিকল্পিতভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে ঢাকা-দিল্লি পররাষ্ট্রসচিব বৈঠক ডিসেম্বরে, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনা হবে কি এবার মারা গেলেন পরীমণির প্রথম সিনেমার পরিচালক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শ সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ, বদিউল বললেন, ‘বিবেচনায় রয়েছে’ বান্দরবানে নৌকা বাইচ দিয়ে ক্রীড়া মেলা শুরু রাঙ্গামাটিতে সাফজয়ী পাহাড়ের তিন কন্যাকে উষ্ণ সংবর্ধনা

বাইডেন কি বিপদে পড়তে যাচ্ছেন,উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
  • ১১৫ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বর্বরতা নিয়ে এমনিতেই চাপে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আর এটি যে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঘরোয়া ইস্যুতে পরিণত হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ছয় মাস আগে তাকে আরও বিপাকে ফেলতে পারে, তা বোধ হয় বুঝতে পারেননি তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে যে আওয়াজ উঠেছে তাতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বড় ধরনের রাজনৈতিক বিপদে পড়তে যাচ্ছেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তাদের মতে, আগামী নির্বাচনে এর বড় খেসারত দিতে হতে পারে বাইডেনকে। দেশটিতে চলমান পরিস্থিতির মধ্যে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়ে সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স বলেছেন, ‘বাইডেনের ভিয়েতনাম’ হয়ে উঠতে পারে ইসরায়েল। এদিকে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষগুলো বেশ চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে। শনিবার মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান মঞ্চের সামনে বিক্ষোভ করেন ফিলিস্তিনপন্থিরা। ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও সমাপনী অনুষ্ঠান চলাকালে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। সামনের দিনগুলোতে ক্যাম্পাস নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বরতা চলছে দশকের পর দশক ধরে। নিজভূমে পরবাসী হয়ে থাকা ফিলিস্তিনিদের প্রতি মুহূর্তে ইসরায়েলি গোলার মুখে বসবাস করতে হচ্ছে। কিন্তু ৭ অক্টোবরের ঘটনার পর গাজাজুড়ে যে বর্বরতা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী আর যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে তেল আবিবকে মদদ দিয়ে যাচ্ছে, তাতে খোদ ইসরায়েলি বন্ধু রাষ্ট্রগুলোও তাদের পাশ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে। অনেকেই ইসরায়েলে অস্ত্র ও গোলাবারুদ বিক্রি বন্ধ করার ঘোষণা দিচ্ছে।

অনেকেই দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলার ঘোষণাও দিচ্ছে। কিন্তু তাতেও দমছেন না ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাইডেন যদি অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে ইসরায়েলকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখেন, তাহলে নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সম্প্রদায় তার পাশে থাকবেন না বলে হুমকি দিয়ে রেখেছেন। গত রমজান মাসে হোয়াইট হাউসে বাইডেনের ইফতার পার্টি বর্জন করেন তারা। এর মধ্য দিয়ে তাকে কঠোরভাবে একটি বার্তা দেয় সেখানকার মুসলিম সম্প্রদায়। যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের বেশিরভাগ ভোট বরাবরই ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে যায়। কিন্তু নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিপুলসংখ্যক সেই মুসলিম ভোট বাইডেন হারাতে যাচ্ছেন বলে ডেমোক্র্যাট শিবিরেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর সেরকমটা হলে হোয়াইট হাউসে তার দ্বিতীয়বারের মতো যাওয়ার স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ছাত্র বিক্ষোভ। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় যে ছাত্র বিক্ষোভ হয়েছিল দেশটিতে তারপর আর যুদ্ধের বিরোধিতায় সেরকম বড় ছাত্র বিক্ষোভ দেখা যায়নি যুক্তরাষ্ট্রে। সাম্প্রতিক এ বিক্ষোভ এক ধরনের কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছে মার্কিন প্রশাসনযন্ত্রে। গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা ও দেশটিকে মার্কিন সহায়তা বন্ধের দাবি দিনের পর দিন আরও জোরালো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে। দেশটির তরুণ ও ছাত্রসম্প্রদায় যারা কিছুদিন আগেও ইসরায়েলের পাশে ছিলেন, তারা এখন দেশটির পাশ থেকে সরে যাচ্ছেন। সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপেও ইসরায়েলের পাশ থেকে মার্কিন ছাত্রসমাজের সরে যাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছে, যা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে। এ ছাত্র বিক্ষোভ যদি শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সম্পর্ক নতুন করে ঠিক করে দিতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। এরই মধ্যে বিক্ষোভ দমনে পুলিশকে যেভাবে মারমুখী হতে দেখা গেছে, তা নিয়ে মারাত্মক সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিক্ষোভ দমাতে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থীকে জেলে পুরে রাখা হয়েছে। ছাত্রদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাইডেন প্রশাসন কঠোর হাতে দমন করছে বলে খোদ ডেমোক্র্যাট শিবিরেই অভিযোগ উঠেছে। ভারমন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স বলেছেন, বাইডেনের ‘ভিয়েতনাম’ হয়ে উঠতে পারে ইসরায়েল। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বাইডেনকে তুলনা করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসনের সঙ্গে, যিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়ে শিক্ষার্থী-বিক্ষোভের জেরে ১৯৬৮ সালে পুনর্নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। স্যান্ডার্স বলেছেন, এবার ইসরায়েল নিয়ে তার অবস্থানের জন্য যুব সম্প্রদায় ও ডেমোক্র্যাটদের বড় অংশের সমর্থন খুইয়ে বাইডেনের হেরে যাওয়ার সম্ভাবনাটাই বেশি।

এদিকে গত বুধবার দাঙ্গা পুলিশ দিয়ে ক্যাম্পাসগুলোর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর আবার কিছু কিছু ক্যাম্পাসে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সেদিনই বলেছিলেন যে, এটাই শেষ নয়। তারা আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা ও দেশটিকে মার্কিন সহায়তা বন্ধ হয়। শনিবার মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান মঞ্চের সামনে বিক্ষোভ করেন ফিলিস্তিনপন্থিরা। এদিনের বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল। এখানে পুলিশকে বেশ সংযমী ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। তবে শনিবার শার্লটসভ্যালে ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের সঙ্গে বিবাদে জড়ান বিক্ষোভকারীরা। এ সময় বিক্ষোভকারীদের লনের ওপর দিয়ে টেনে আনতে দেখা যায় পুলিশকে। ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ২৫ বিক্ষোভকারীকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। সামনের দিনগুলোতে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান ঘিরে ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ পরিস্থিতি আরও অশান্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions