বাড়ছে তেল-স্বর্ণের দাম, শেয়ারের পতন

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৭৯ দেখা হয়েছে

ইরানে ইসরাইলের পাল্টা হামলায় উত্তাল মধ্যপ্রাচ্য পাল্টা হামলার পরিকল্পনা নেই ইরানের ইরানে হামলায় অংশ নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র : ব্লিঙ্কেন ইসরাইলের হামলা নিয়ে বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া আকার এবং স্থান বিবেচনায় ইসরাইলের আক্রমণ খুবই নগণ্য

ডেস্ক রির্পোট :-ইরানে একটি ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে, বিবিসির মার্কিন সহযোগী সিবিএস নিউজকে এমন তথ্য জানিয়েছেন দু’জন মার্কিন কর্মকর্তা। সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের দারা প্রদেশে হামলা চালানোর খবর পাওয়া গেছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন বলছে কয়েকটি শহরে বিমান চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। তিনটি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। তবে, ইরানিয়ান স্পেস অ্যাজেন্সি একজন কর্মকর্তা হোসেইন দালিরিয়ানের দাবি, সীমান্তের বাইরে থেকে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি। এক এক্স পোস্টে দালিরিয়ান লিখেছেন, ‘ইসরাইল কয়েকটি কোয়াডকপ্টার (ড্রোন) ওড়ানোর ব্যর্থ এবং হাস্যকর চেষ্টা চালিয়েছে। ভূপাতিত করা হয়েছে কোয়াডকপ্টারগুলোকে।’

ইরানে ইসরাইলের হামলার খবর প্রকাশ হওয়ার পরই বিশ্ববাজারে তেল ও স্বর্ণের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। পতন হয়েছে শেয়ারের দাম। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এই হামলার ঘোষণা দেয়ার পরই এমন অবস্থা দেখা দিয়েছে বলে খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। গতকাল সকালেই এশিয়ার বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম বেড়েছে শতকরা কমপক্ষে ৩ ভাগ। ফলে প্রায় ৯০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি ব্যারেল তেল। অন্যদিকে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে প্রতি আউন্স ২৪০০ ডলারের ওপরে। এটা বিশ্ববাজারে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম। জাপান, হংকং এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় বেঞ্চমার্ক শেয়ার সূচকের পতন হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।

এদিকে, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের দারা প্রদেশে সামরিক বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করেও বিমান হামলা চালানো হয়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। ইসরাইলি গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা শুক্রবার সকাল থেকে তেল আবিবের সামরিক সদর দপ্তরে অবস্থান করছেন। গত শনিবার ইসরাইলি ভূখণ্ডে আক্রমণের পর থেকেই দেশটির পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারিতে সর্বোচ্চ সতর্কতায় ছিল ইরান। গতকাল ভোরে ইস্ফাহানে বিস্ফোরণের ঘটনাগুলো ঘটেছে। রাজধানী তেহরান থেকে প্রদেশটি দূরত্ব সাড়ে তিনশো কিলোমিটার। ইস্ফাহানেই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো অবস্থিত। দেশটির অন্যতম বড় সামরিক বিমান ঘাঁটিও রয়েছে এখানে।

প্রদেশের নাতানজ শহরটিকে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দু বলা চলে। তবে, রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ কথা উল্লেখ করে দাবি করেছে পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ‘পুরোপুরি নিরাপদেই’ আছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আইআরআইবি ‘নির্ভরযোগ্য’ সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, কয়েকটি মিনি ড্রোনকে প্রতিহত করতে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হয়। এর ফলেই দেশের কয়েকটি অঞ্চলে প্রচণ্ড শব্দ শোনা গেছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম আইআরআইবি জানিয়েছে, ইস্ফাহান শহর নিরাপদ অবস্থায়ই আছে। বাসিন্দারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন।

পাল্টা হামলার পরিকল্পনা নেই ইরানের : ইরানের নগরীতে গতকাল বিস্ফোরণের শব্দের পর বিভিন্ন সূত্র একে ইসরাইলের হামলা বলে বর্ণনা করে। তবে ইরান ঘটনাটিকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। এর পাল্টা জবাব দেয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে দেশটি। ইরানে সীমিত আকারের ওই ইসরাইলি হামলা এবং ইরানের শান্ত প্রতিক্রিয়া দুই দেশের মধ্যে পুরোদস্তুর যুদ্ধ এড়াতে কূটনীতিকদের দিন-রাত কাজ করে যাওয়ার চেষ্টায় সফলতারই লক্ষণ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

ইসরাইল গতকাল ভোরে ইরানের ‘নির্দিষ্ট লক্ষ্যব¯ুু‘’তে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে সিবিএস নিউজকে জানান দুই মার্কিন কর্মকর্তা। তবে ইরানের গণমাধ্যম এবং কর্মকর্তারা জানান, ছোট কয়েকটি বিস্ফোরণ হয়েছে। ইসফাহান নগরীতে ইরান আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় তিনটি ড্রোনে আঘাত হানার কারণে ঘটেছে এই বিস্ফোরণ। ইরান এই হামলাকে ইসরাইল নয়, বরং ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ হামলা বলে বর্ণনা করেছে, যার পাল্টা জবাব দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে মনে করছে দেশটি। ইরানের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘ওই ঘটনার জন্য ইসরাইলের বিরুদ্ধে পাল্টা জবাবের কোনও পরিকল্পনা নেই।’ তিনি বলেন, ‘ঘটনাটির খবর জানানো বিদেশি সূত্রটি নিশ্চিত নয়। আমাদের এখানে বাইরে থেকে কোনও হামলা হয়নি। তাছাড়া হামলা নয়, বরং অনুপ্রবেশ নিয়েই আলোচনা হচ্ছে বেশি।’

ইরানে হামলায় অংশ নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র : ব্লিঙ্কেন
ইসরাইল-ইরান উত্তেজনার মধ্যে ইতালির ক্যাপ্রিয় দ্বীপে পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন জি সেভেন জোটের বৈঠকে উভয় পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সাত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বৈঠকের আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, যুক্তরাজ্যের ডেভিড ক্যামেরন, জাপানের ইয়োকো কামিকাওয়া, ইতালির আন্তোনিও তাজানি এবং কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি

ইসরাইল-ইরান উত্তেজনার মধ্যে ইতালির ক্যাপ্রিয় দ্বীপে পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন জি সেভেন জোটের বৈঠকে উভয় পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সাত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বৈঠক শেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইরানে ইসরাইলের হামলায় যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয়নি। তবে এ বিষয়ে আর বিস্তারিত কথা বলতে রাজি হননি মার্কিন এই শীর্ষ কর্মকর্তা। গতকাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, কানাডা, জার্মানি, জাপান ও যুক্তরাজ্য; সাত দেশের জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বার্ষিক বৈঠকের ফাঁকে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নিয়ে সাইডলাইনে তারা আরেকটি বৈঠক করেন। বৈঠকে অংশ নেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়া, ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি, কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক ও ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনা।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেছেন ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি। সংবাদ সম্মেলনে তাজানি বলেন, আমরা সব পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানাই। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা না বাড়াতে জি সেভেন কাজ করবে। তিনি আরও বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন— ইসরাইল শেষ মুহূর্তে ইরানে হামলার তথ্য জানিয়েছে। তবে এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয়নি। এদিকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘আমি এ বিষয়ে কথা বলতে চাই না। শুধু এটুকু বলবো যে, যুক্তরাষ্ট্র এই হামলায় অংশ নেয়নি।’

ইসরাইলের হামলা নিয়ে বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া : গতকাল ইরানের হামলার জবাবে পাল্টা হামলা চালায় ইসরাইল। এ বিষয়ে বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হল-
ওমান : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ওমান ‘ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের ইসফাহানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা করছে’। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ওমান এ অঞ্চলে ইসরাইলের বারবার সামরিক হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা করে।’ উপসাগরীয় দেশটি দীর্ঘদিন ধরে ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে মধ্যস্থতা করে আসছে।
মিশর : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে যে মিশর ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে শত্রুতা বৃদ্ধির বিষয়ে ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’। এ অঞ্চলে সংঘাত ও অস্থিতিশীলতা প্রসারিত করার পরিণতি সম্পর্কেও সতর্ক করেছে মিশর।

তুরস্ক : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে এমন পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার জন্য সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে। তারা একটি বিবৃতিতে বলেছে যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত ‘গাজায় গণহত্যা বন্ধ করা এবং একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা’। ‘এটি ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে দামেস্কে ইরানী দূতাবাসে ইসরাইলের অবৈধ হামলার কারণে প্রাথমিকভাবে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল তা একটি স্থায়ী সংঘাতে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে,’ এতে যোগ করা হয়েছে।

জর্ডান : পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেছেন, আঞ্চলিক উত্তেজনার বিপদের বিরুদ্ধে সতর্ক করে ইসরাইল-ইরানের প্রতিশোধের অবসান হওয়া উচিত।
ইতালি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ইতালীয় দ্বীপ ক্যাপ্রি থেকে আরএআই নিউজকে বলেন, ‘আমরা সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি একটি ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি এড়াতে, যেখানে ইতালি গ্রুপ অফ সেভেন (জি৭) দেশগুলির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি বৈঠকের আয়োজন করছে।

জি৭ : জি৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মধ্যপ্রাচ্যে ‘আরো উত্তেজনা রোধে কাজ করার’ জন্য ‘সব পক্ষকে’ আহ্বান জানিয়েছেন। ‘১৯ এপ্রিল হামলার রিপোর্টের আলোকে, আমরা সব পক্ষকে উত্তেজনা কমাতে কাজ করার জন্য অনুরোধ করছি। জি৭ এই লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাবে,’ তারা এক বিবৃতিতে বলেছে।

জাতিসংঘ : মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন যে ‘মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিশোধের বিপজ্জনক চক্র বন্ধ করার এখনই উপযুক্ত সময়’, তার মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিকের একটি বিবৃতি অনুসারে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের প্রধান ‘প্রতিশোধের যে কোনও কাজের নিন্দা করেছেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আরও কোনও উন্নয়ন প্রতিরোধে একসাথে কাজ করার জন্য আবেদন করেছেন যা সমগ্র অঞ্চল এবং এর বাইরের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে’, বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

যুক্তরাজ্য : ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন: ‘এটি একটি উন্নয়নশীল পরিস্থিতি, যতক্ষণ না ঘটনাগুলি পরিষ্কার না হয় এবং আমরা মিত্রদের সাথে একসাথে বিস্তারিত নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি ততক্ষণ পর্যন্ত অনুমান করা আমার পক্ষে ঠিক হবে না। ‘উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি কারও স্বার্থে নয়। আমরা যা দেখতে চাই তা হল পুরো অঞ্চল জুড়ে শান্তি বিরাজ করছে।’

ইউরোপীয় ইউনিয়ন : ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডার লেইন মধ্যপ্রাচ্যে আরও উত্তেজনা এড়াতে সংযম থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ফিনল্যান্ড সফরকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের সম্ভাব্য সবকিছু করতে হবে যেন সব পক্ষ ওই অঞ্চলে উত্তেজনা থেকে বিরত থাকে। ‘এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যে অঞ্চলটি স্থিতিশীল থাকে এবং সব পক্ষই পরবর্তী পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকে।’

নেদারল্যান্ড : পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাঙ্কে ব্রুইনস সøট বলেছেন, নেদারল্যান্ডস ইরানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ‘মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী গভীর উদ্বেগজনক। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে আরও বৃদ্ধি রোধ করা হয়,’ ব্রুইনস সøট এক্স-এ যোগ করেছেন।

চীন : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে যে চীন ‘প্রাসঙ্গিক প্রতিবেদনগুলি নোট করেছে এবং উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তোলে এমন কোনও পদক্ষেপের বিরোধিতা করে’।
জার্মানি : চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ মধ্যপ্রাচ্যে আরও উত্তেজনার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন। ‘সবাইকে এখন এবং অদূর ভবিষ্যতে নিশ্চিত করতে হবে যে যুদ্ধের আর কোনো বৃদ্ধি না ঘটবে,’ শলৎজ বলেছিলেন।

রাশিয়া : ক্রেমলিন বলেছে যে তারা ইরানের উপর ইসরাইলের রিপোর্ট করা হামলার তথ্য অধ্যয়ন করছে এবং উভয় পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ রাশিয়ান রেডিও স্টেশনকে বলেছেন যে, রাশিয়ার নেতৃত্ব ইরানে তাদের সমকক্ষের সাথে যোগাযোগ করছে এবং রাশিয়ান কর্মকর্তারাও ইসরাইলিদের সাথে যোগাযোগ করছেন। ‘আমরা এই কথোপকথনে খুব স্পষ্টভাবে রূপরেখা দিয়েছি এবং ইসরাইলিদের জানিয়েছি যে ইরান উত্তেজনা চায় না,’ ল্যাভরভ বলেছেন।

জাপান : জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি বলেছেন: ‘জাপান মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং পরিস্থিতির বৃদ্ধি ঘটায় এমন যেকোনো পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করে। পরিস্থিতির আরও অবনতি রোধে জাপান প্রয়োজনীয় সব কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

সুইডেন : পররাষ্ট্র মন্ত্রী টোবিয়াস বিলস্ট্রম বলেছেন: ‘এটি এমন একটি বিষয় যা আমরা সরকারের পক্ষ থেকে খুব গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি এবং খুব কাছ থেকে অনুসরণ করছি।’ তিনি যোগ করেছেন যে ‘হাতাহাতি এবং উত্তেজনা বিনিময়ের অবসান ঘটাতে হবে’।

কানাডা : ‘আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা আজ সকালে ইতালিতে জি৭ অধিবেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করব,’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি এক্স-এ বলেছেন।
ফ্রান্স : ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন-নোয়েল ব্যারোট বলেছেন, ফ্রান্সের ‘অবস্থান হ’ল সমস্ত পক্ষকে উত্তেজনা হ্রাস এবং সংযমের জন্য আহ্বান জানানো’।

আকার এবং স্থান বিবেচনায় ইসরাইলের আক্রমণ খুবই নগণ্য : ইরানের গত শনিবারের ড্রোন এবং মিসাইল হামলার জবাব যে দেবে এটা ইসরাইল আগেই স্পষ্ট করেছিল। সেই জবাব তারা দিয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। বিবিসির নিরাপত্তা বিষয়ক সংবাদদাতা ফ্রাঙ্ক গার্ডনার বলেছেন, যদি সত্যিই এটা ইসরাইলের জবাবের শুরু এবং এটাই শেষ হয়ে থাকে, তাহলে বলতে হবে হামলার আকার বা স্থান বিবেচনায় এই জবাব খুবই সামান্য।

ইস্ফাহানের আজকের সকালটা আর দশটা সকালের মতোই। সপ্তাহজুড়ে ইসরাইলে পশ্চিমা মিত্র, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন, দেশটির সরকারকে তাগিদ দিয়ে আসছিল যেন ইরানি হামলার জবাবে বড় ধরনের পাল্টা হামলা চালানো না হয়। যদিও ইরানের সেই হামলা রীতিমতো চাঞ্চল্যকর, কিন্তু সেটাও আসলে ছিল একটা প্রতিশোধ। পহেলা এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালিয়েছিল ইসরাইল। দু’জন শীর্ষ সামরিক কমান্ডারসহ ১৩ জন নিহত হন ওই হামলায়। এর প্রতিশোধ নিতেই গত শনিবার ইসরাইলে আক্রমণ করে ইরান। এখন পরিস্থিতি কোনদিকে গড়াবে সেটা দুটো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে: ইসরাইলের হামলা এখানেই শেষ কিনা এবং ইরান পাল্টা হামলার সিদ্ধান্ত নেয় কিনা। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, আল-জাজিরা।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions