ডেস্ক রির্পোট:- যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে প্রবেশ করা সেই স্পাই বেলুন অবশেষে গুলি করে ধ্বংস করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, চীন ওই বেলুন পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সাইটগুলোতে গুপ্তচরবৃত্তি করছিল।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার দুপুরের দিকে মার্কিন যুদ্ধবিমান যুক্তরাষ্ট্রের জলসীমায় আটলান্টিক মহাসাগরে বেলুনটি গুলি করে ধ্বংস করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশনগুলোতে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, একটি ছোট বিস্ফোরণের পর বেলুনটি সমুদ্রের ওপর পড়ে যাচ্ছে।
এ ঘটনার পর চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে তীব্র অসন্তোষ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা বলেছে, চালকবিহীন বেসামরিক উড়োজাহাজে বিমান হামলা নিন্দনীয়।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, বেলুনটিকে লক্ষ্য করে এফ-২২ যুদ্ধবিমান থেকে একটি এআইএম-৯ এক্স ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। এরপর বেলুনটি যুক্তরাষ্ট্রের সমুদ্র উপকূল থেকে ছয় নটিক্যাল মাইল দূরে দক্ষিণ ক্যারোলিনার মার্টল সমুদ্র সৈকতের কাছে গিয়ে আছড়ে পড়ে।
মার্কিন সামরিক বাহিনী এখন বেলুনটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের চেষ্টা করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বেলুনটির ধ্বংসাবশেষ অন্তত ১১ কিলোমিটারজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের জন্য নৌবাহিনীর দুটি জাহাজ ও ভারী ক্রেন ব্যবহার করা হচ্ছে।
পেন্টাগনের এক বিবৃতিতে বলেছে, আমরা বেলুনটি ধ্বংস করার আগে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। এর আগে বেলুনটি যাতে আমাদের সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করতে না পারে, সেই ব্যবস্থাও নিয়েছিলাম।
প্রতিরক্ষাবাহিনীর প্রশংসা করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘তারা সফলভাবে এটি (বেলুন) নামিয়েছে। আমি আমাদের উড়োজাহাজ চালকদের প্রশংসা করতে চাই।’
বেলুনটি ধ্বংস করার কয়েক ঘণ্টার পরে এক বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বেলুনটি বেসামরিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল এবং এটি ভুল পথে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে প্রবেশ করেছিল। এটি নিছক দুর্ঘটনা ছাড়া আর কিছু নয়।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা রাজ্যের আকাশে প্রথম বেলুনটি শনাক্ত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। মন্টানা একটি জনবহুল এলাকা হওয়ায় জননিরাপত্তা বিবেচনা করে তাৎক্ষণিকভাবে বেলুনটি ধ্বংস করেনি পেন্টাগন। তবে এ বেলুনকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, চীন বেলুন পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সাইটগুলোর ওপরে নজরদারি করছে। অন্যদিকে চীন বলেছে, এটি কোনো গোয়েন্দা নজরদারি বেলুন নয়, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকারী বেলুন। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে বেলুনটি পাঠায়নি, বরং ভুল পথে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় প্রবেশ করেছে। এটি একটি দুর্ঘটনা। এ জন্য তারা দুঃখ প্রকাশও করেছে।
তারপরও যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করেনি। এ ঘটনার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর দুই দিনের চীন সফর বাতিল করেছেন। আজ রোববার থেকে তাঁর দুই দিনের চীন সফরের কথা ছিল।