বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোংলা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) ‘ভিআইপি লাগেজ’ নামের ট্রাভেল ব্যাগ তৈরির কারখানায় লাগা আগুন সম্পূর্ণ নেভেনি। তবে আগুন নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ন্ত্রিত আছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় দেড়শ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে মঙ্গলবার রাতে মোংলা থানার একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেছেন ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রিস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক আশীষ কুমার কর্মকার।
ওই জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞাত কারণে মঙ্গলবার দুপুরে পুরো ফ্যাক্টরিতে আগুন ধরে যায়। তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফ্যাক্টরিতে আগুন লেগে আনুমানিক ১৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণ মোংলা বাগেরহাট ও খুলনার পাঁচটি ফায়ার স্টেশনের ১১টি ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে। তবে ঘটনার সাড়ে ১৩ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ওই কারখানার আগুন সম্পূর্ণ নেভেনি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বাগেরহাট কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. গোলাম সরোয়ার আজ বুধবার সকালে মুঠোফোনে বলেন, আগুন এখনো পুরোপুরি নেভেনি। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিভিন্ন স্থানে এখন আগুন আছে। আগুন পুরোপুরি নেভাতে কত সময় লাগতে পারে, সে বিষয়ে স্পষ্ঠভাবে কিছু বলতে পারেনি তিনি।
তবে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রিত থাকায় আশপাশে আর কোথাও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের গণমাধ্যম শাখার পুলিশ পরিদর্শক এস এম আশরাফুল আলম বলেন, মঙ্গলবার বেলা ৩টার পর ভিআইপি লাগেজ ফ্যাক্টরির ১নং প্লান্টের আগুন লাগে। সেখানকার কাঁচামালের গুদাম থেকে আগুন ছড়ায় বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। লাগেজ তৈরির পলিথিন, ফোম, বিভিন্ন রাসায়নিক আঠা, ফেব্রিক ও অন্যান্য পলিথিন জাতীয় দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত সময়ের মধ্যে পুরো ফ্যাক্টরিতে ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার সময় কারখানাটিতে ৭০০ থেকে ৮০০ শ্রমিক কাজ করছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এখন পর্যন্ত কেউ হতাহত হয়নি বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আগুনে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় দেড়শ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে মোংলা থানায় জিডি হয়েছেন ভিআইপি লাগেজের সহকারী ব্যবস্থাপক।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, কারখানাটিতে থাকা লাগেজ তৈরির কাঁচামালসহ কয়েক হাজার তৈরি লাগেজ ছিল। যা বেশ কয়েকটি বিদেশি রাষ্ট্রে রপ্তানির অপেক্ষায় ছিল। আগুনে কারখানার সব কিছুই পুড়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক মামুন মাহমুদ বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে সাড়ে তিনটার দিকে তারা আগুন লাগার খবর পান। কারখানাটিতে ইভা ফেব্রিক, পলিথিন, ফেব্রিকেটেড গুডসসহ মালামাল ছিল।
এর আগে ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর মোংলা ইপিজেডের একটি সুতার কারখানায় আগুন লেগেছিল। সে বার আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রায় ১ দিন লেগেছিল। তবে এবারের আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি।