রাঙ্গামাটি:- রাঙ্গামাটির বরকলের দুর্গম পাহাড়ে কোন অজ্ঞাত রোগে কেউ মারা যায়নি। এটা সম্পূর্ণ গুজব। গত দেড় মাসে যে পাঁচজন মারা গেছেন তাদের সবাই স্বাভাবিক রোগে আক্রান্ত হয়ে এবং স্থানীয় কবিরাজ বৈদ্যের অপচিকিসায় মারা গেছেন।
গত দুই দিন রাঙ্গামাটির সীমান্তবর্তী বরকল উপজেলার ভুষণছড়া ইউনিয়নের ঠেগা চান্দবীঘাট এলাকায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে ফিরে এসেছে বরকল স্বাস্থ্য বিভাগের ৭ সদস্যের মেডিকেল টিম ।
বৃহস্পতিবার বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মংক্যসিং রাখাইন সাগরের নেতৃত্বে ৭ জনের একটি মেডিকেল টিম চান্দবীঘাট এলাকায় যান । এলাকাটি অতি দুর্গম।
ফিরে এসে বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মংক্যসিং রাখাইন জানান এলাকাটি অতি দুর্গম। যারা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তারা সবাই স্বাভাবিক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাদের কেউ কেউ হার্ট, লিভার ও কিডনী আক্রান্ত রোগী ছিলেন। তাদের বেশির ভাগই বয়স্ক ব্যক্তি । একটি শিশু মেয়ে যে মারা গেছে তাকে কবিরাজী ওষুধ হিসাবে বিভিন্ন পাতার রস খাওয়ানো হয়েছে যাতে করে শিশুটির দীর্ঘ সময় অতিরিক্ত বমি হয় এবং তাকে খাবার খেতে না দেয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি ।
বর্তমানে গ্রামে যে কজন আক্রান্ত রোগী আছেন তারা সবাই নরম্যাল স্বর্দি কাশি ও জ্বর আক্রান্ত রোগী । তাদেরও কবিরাজী ওষুধ খা্ওয়ানো হয়। মেডিক্যাল টিম যাওয়ার পর তাদের সকলের চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হয় এবং প্রযোহনীয় ওষুধ পত্র দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান গ্রামের মানুষকে আশ্বস্ত করা হয়েছে এটা কোন অজ্ঞাত রোগ নয়, আক্রান্তরা সকলেই স্বাভাবিক রোগ স্বর্দি কাশী ও জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন । গ্রামের পাশে দুটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে উল্রেখ করে তিনি জানান এলাকায় স্বাস্থ্য কমীরা রয়েছেন । যে কোন সময় তারা স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
উল্লেখ্য বরকলের চান্দবীঘাট এলাকায় প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসার অভাবে তীব্র জ¦র, পেট ব্যথা ও বমির সঙ্গে রক্ষকরণে গত দেড় মাসে এক শিশুসহ ৫ ব্যক্তি মারা যান।
তারা হলেন চিত্তি মোহন চাকমা (৬০) বিমলেশ্বর চাকমা (৫৫) ডালিম কুমার চাকমা (৩৫), পত্ত রঞ্জন চাকমা (২৫), সোনি চাকমা (৮)। এরমধ্যে ডালিম কুমার চাকমা ও সোনি চাকমা বাবা-মেয়ে।
ওই এলাকায় আরো ১৪ জনের পেটব্যথা, জ¦র দেখা দেয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং এলাকায় অজ্ঞাত রোগের গুজব ছড়িয়ে পড়ে । পেট ব্যথা ও জ¦র দেখা দিলেই মৃত্যুর ভয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন আক্রান্ত রোগী ও তাদের স্বজনরা।
সর্বশেষ গত ১৭ মার্চ ডালিম কুমার চাকমার মেয়ে সোনি চাকমা জ¦র, পেট ব্যথা ও বমির সঙ্গে রক্তক্ষরণে মারা যান। এর দুদিন আগে ১৫ মার্চ চিত্তি মোহন চাকমা (৬০) একই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি ডালিম কুমার চাকমা, ৭ ফেব্রুয়ারি বিমলেশ^র চাকমা এবং সর্বপ্রথম গত ১০ জানুয়ারি পত্ত রঞ্জন চাকমা পেট ব্যথা, জ¦র ও বমির সঙ্গে রক্তক্ষরণে মারা গেছেন।