বান্দরবান:- মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে নতুন করে ১৭৭ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির তত্ত্বাবধানে বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাদের রাখা হয়েছে। গত সোমবার বিকেল থেকে তাদের এখানে রাখা হয়। ফলে ওই স্কুলের ৩৬২ জন শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে মঙ্গল ও বুধবার।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘যদিও অত্র স্কুলের বন্ধের বিষয়ে অফিশিয়াল সিদ্ধান্ত নেই, তবুও মানুষ্যদুর্যোগ হিসেবে মানবিক দিক বিবেচনা করে ১১ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ নোবেল, বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো. মুজাহিদ উদ্দিন স্যারের সঙ্গে কথা বলে অত্র স্কুলে আশ্রয় দিয়েছেন।’ তিনি শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে অন্য কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
এদিকে ১১ বিজিবি কর্তৃপক্ষ আজ বুধবার সকালে গণমাধ্যমকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছেন, মিয়ানমার অভ্যন্তরে সে দেশের জান্তা সরকার ও তাদের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে চলমান সংঘর্ষের জেরে গত ১১ মার্চ নতুন করে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিজিপির ১৭৭ জন সদস্য প্রাণভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।
নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদে আশ্রয় প্রদান করেছে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা হবে।
জানা গেছে, গত ৪ ও ৭ ফেব্রুয়ারি সে দেশের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এবং কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিপরীতে মিয়ানমার সরকারের বিভিন্ন স্থাপনায় আক্রমণ করলে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি, মায়ানমার সেনাবাহিনী, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনসহ ৩৩০ জন সদস্য প্রাণভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির কাছে হস্তান্তর করা হয।
ফের প্রকট বিস্ফোরণে ঘুমভাঙ্গে
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৪৮ নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকা দিয়ে আজ বুধবার ভোর ৪টা ৩০ মিনিটের সময় মিয়ানমারের অল্প ভেতর থেকে বড় বিস্ফোরণের একটি আওয়াজ এসেছে। সেহেরি খেতে ওঠা রোজাদারদের মাঝে সাময়িক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. বাবু এবং মো. আলম বলেন, ‘মিয়ানমারের ভেতর থেকে আসা বিস্ফোরণের শব্দটি হয়তো মাইন, নয়তো মর্টারশেল বিস্ফোরণের আওয়াজ হতে পারে।’
ধারণা করা হচ্ছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে কয়েকটি বিদ্রোহী গ্রুপ এবং জান্তা বাহিনীর সঙ্গে চলে আসা যুদ্ধের প্রভাব মাঝে মধ্যেই সীমান্ত এলাকায় আসে। এটি তারই অংশ।