ডেস্ক রির্পোট:- চেলসির আক্রমণের ধার কয়েক দফায় কমল-বাড়ল। সেই তুলনায় লিভারপুল কিছুটা ধারাবাহিক রইল। চলল আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ; কিন্তু গোলের দেখা আর মেলে না। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে ব্যবধান গড়ে দিলেন ভার্জিল ফন ডাইক। আরও একবার লিগ কাপে চ্যাম্পিয়ন হলো ইয়ুর্গেন ক্লপের দল।
লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ফাইনালে ১-০ গোলে জিতে রেকর্ড দশমবার লিগ কাপে চ্যাম্পিয়ন হলো লিভারপুল। মঞ্চ যেটাই হোক না কেন, এই দুই দলের মুখোমুখি লড়াই মানেই যেন নির্ধারিত সময়ে বিজয়ীর দেখা মেলা ভার। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এদিনের আগের আটবারের মুখোমুখি লড়াইয়ে সাতটিই হয়েছিল ড্র। একমাত্র জয়টি আসে গত মাসে, প্রিমিয়ার লিগে ৪-১ গোলে জিতেছিল ‘অল রেড’ নামে পরিচিত দলটি।
দুই বছর আগে এই মঞ্চেই মুখোমুখি হয়েছিল দল দুটি। গোলশূন্য ১২০ মিনিটের পর টাইব্রেকারে জিতেছিল লিভারপুল। প্রতিশোধ নেওয়ার স্বপ্ন ছিল চেলসির, কিন্তু পারল না তারা। দলের সেরা স্ট্রাইকার মোহামেদ সালাহ, ফরোয়ার্ড দারউইন নুনেস, অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার ট্রেন্ট অ্যালেকজ্যান্ডার-আর্নল্ড, গোলরক্ষক আলিসন সহ আরও অনেক খেলোয়াড় চোট পেয়ে বাইরে। তাদেরকে ছাড়াই আক্রমণাত্মক পারফরম্যান্স উপহার দিল লিভারপুল। জিতে নিল মৌসুমের সম্ভাব্য চার শিরোপার প্রথমটি।
ম্যাচের শুরুতে বেশ ভুগতে দেখা যায় মাওরিসিও পচেত্তিনোর দলকে। সেই সুযোগে তাদের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করে লিভারপুল। টানা আক্রমণও করতে থাকে, যদিও তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না তারা। বরং আচমকাই ২০তম মিনিটে দারুণ একটা সুযোগ পেয়ে যায় চেলসি। গোলরক্ষককে একা পেয়েছিলেন কোল পালমার। তবে তার জোরাল শট দারুণ নৈপুণ্যে রুখে দেন লিভারপুলের দ্বিতীয় সেরা গোলরক্ষক কুইভেন কেলাহার।
৩২তম মিনিটে নিকোলাস জ্যাকসনের পাস ধরে বল জালে পাঠান চেলসির রাহিম স্টার্লিং; তবে সঙ্গে সঙ্গে অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। জ্যাকসন কিঞ্চিৎ ব্যবধানে অফসাইডে থাকায় ভিএআরেও সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। ধীরে ধীরে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে উঠতে শুরু করে লড়াই। ৪০তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত লিভারপুল, কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। কোডি হাকপোর হেড বাধা পায় পোস্টে।
৬০তম মিনিটে ফন ডাইক হেডে বল জালে পাঠালে এগিয়ে যাওয়ার উল্লাসে মাতে লিভারপুল। তবে তাদের উদযাপন মুহূর্তেই হতাশায় রূপ নেয়। ওয়াতারু এন্দো অফসাইডে থাকায় ভিএআরের সাহায্যে গোল দেননি রেফারি।
চেলসিও দুর্ভাগ্যের ফেরে গোলবঞ্চিত হয়। ৭৬তম মিনিটে কনর গ্যালাহারের শট পোস্টে লাগে। ৮৫তম মিনিটে এই ইংলিশ মিডফিল্ডার গোলরক্ষককে একা পেয়েছিলেন, কিন্তু শট নিতে দেরি করে সুবর্ণ সুযোগটি নষ্ট করেন। ঠিক সময়ে দ্রুত এগিয়ে তার শট নেওয়ার জায়গা ছোট করে দেন কেলাহার।
অতিরিক্ত সময়ের চতুর্থ মিনিটে গোলরক্ষকের নৈপুণ্যে জাল অক্ষত থাকে চেলসির। জেইডেন ড্যানসের হেড কোনোমতে এক হাত দিয়ে বাইরে পাঠান পেত্রোভিচ। নির্ধারিত সময়ের শেষভাগে দারুণ আক্রমণাত্মক খেলা চেলসি অতিরিক্ত সময়ে ফের ছন্দ হারিয়ে ফেলে। এই ৩০ মিনিটে তেমন কিছুই করতে পারেনি দলটি।
দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ম্যাচ যখন টাইব্রেকারে গড়ানোর পথে, ঠিক তখনই দলকে উৎসবের উপলক্ষ এনে দেন ফন ডাইক। কর্নারে উড়ে আসা বল লাফিয়ে হেডে ঠিকানা খুঁজে নেন ডাচ ডিফেন্ডার। ম্যাচের ভাগ্য গড়া হয়ে যায় ওখানেই। বাকিটা সময় জাল অক্ষত রেখে উৎসব শুরু করে লিভারপুল। চলতি মৌসুম শেষে বিদায়ের ঘোষণা আগেই দিয়েছেন ক্লপ। শেষের যাত্রায় আরও একটি ট্রফি জিতলেন এই জার্মান কোচ।