ডেস্ক রির্পোট:- আওয়ামী লীগ সরকারের ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মেয়াদে সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ২৩৭ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, ২০১৯-২০২৩ সাল মেয়াদে সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ২৩৭টি পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। গত ৫ বছরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০ হাজার ২৬৪ জনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। এ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সর্বোচ্চ চট্টগ্রাম থেকে ১ হাজার ৩৪১ জন, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঢাকায় ১ হাজার ২৩৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সর্বনিম্ন বান্দরবান থেকে ৩৪ জন, দ্বিতীয় সর্বনিম্ন জনপ্রশাসন মন্ত্রীর জেলা মেহেরপুর থেকে ৬৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি বাড়াতে রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নেবেন
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিচারপতি নিয়োগের জন্য সংবিধানে একটি আইন করার কথা বলা আছে। চলতি সংসদে বিচারপতি নিয়োগের জন্য আইন আনা হবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, আপিল বিভাগে সাতজন বিচারপতি থাকতে হবে, সংবিধানে এমন কোনো বিধান নেই। আগে ১১ জন বিচারপতিও ছিলেন। খুব শিগগির আপিল বিভাগে বিচারপতি নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নেবেন। একই ভাবে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি বাড়ানোর বিষয়েও রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নেবেন বলে তিনি আশা করেন।
চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিচার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিচারকের নতুন পদ সৃজনে বর্তমান সরকার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সরকারের আন্তরিক উদ্যোগের কারণেই অধস্তন আদালতে বিভিন্ন পদমর্যাদার ২৫৯টি বিচারকের পদ সৃজন করা হয়েছে। আদালতসমূহ যাতে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারে, সে জন্য ১ হাজার ৯৯৯টি সহায়ক পদ সৃজন করা হয়েছে। অপর দিকে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে চারদলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে মাত্র ২৫টি বিচারকের পদ এবং ১৩৩টি সহায়ক জনবলের পদ সৃজন করা হয়।
আইনমন্ত্রী জানান, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অধস্তন আদালতে ১ হাজার ৪২৬ জন বিচারক (সহকারী জজ) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চারদলীয় বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে অধস্তন আদালতে মাত্র ১৯০ জন বিচারক নিয়োগ করা হয়েছিল। এছাড়াও ১৬০০ বিজেএসের মাধ্যমে ১০৪ জন বিচারক নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সুপারিশ প্রদান করছে। আরও ১০০ জন বিচারক নিয়োগ পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ভাড়াটিয়াদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত এবং বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে সংঘাত নিরসনের জন্য ‘বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯১’ বর্তমানে বিদ্যমান রয়েছে। এ অবস্থায় বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত নতুন কোনো আইন প্রণয়ন করার পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। তবে প্রয়োজনে বিদ্যমান আইনের বিধানসমূহ পর্যালোচনা করা হবে।
ভোলা-৩ আসনের সরকার দলীয় এমপি নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ১৯৯৬ সালে আইন কমিশন গঠিত হওয়ার পরে প্রতি বছর বিভিন্ন আইন ও বিধি প্রণয়নের জন্য সরকারকে এ পর্যন্ত কমিশনের সুপারিশ সংবলিত ১৬৭টি সুপারিশ (সংশোধনীসহ খসড়া, আইন, বিলের খসড়া, বিশেষ প্রতিবেদন, আইনগত মতামত) প্রেরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৮টি সুপারিশ ইতিমধ্যে পূর্ণভাবে/আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে।
দেশে নিবন্ধিত জেলে ১৮ লাখ ৩ হাজার ৪১৮ জন
গাইবান্ধা-৩ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতির প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী আবদুর রহমান বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরাধীন প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান, মহাখালী থেকে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির ১৫টি মারাত্মক সংক্রামক রোগের ১৭ ধরনের টিকা উৎপাদন করা হয়ে থাকে। এ সকল টিকা প্রান্তিক খামারিদের মাঝে সরকার নির্ধারিত ভর্তুকি মূল্যে বিতরণ করা হয়ে থাকে। সরকার টিকার সহজলভ্যতা অর্জনে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩২ কোটি ৮৬ লাখ ৭৪ হাজার ডোজ গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির টিকা উৎপাদন করে বিশেষ করে প্রান্তিক খামারিদের মাঝে বিতরণ করেছে।
বাগেরহাট-৪ আসনের সরকার দলীয় সংসদ এইচ এম বদিউজ্জামানের প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী জানান, উপকূলীয় এলাকার জেলেসহ সারা দেশে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১৮ লাখ ৩ হাজার ৪১৮ জন। এর মধ্যে ১৪ লাখ ২০ আইডি কার্ড প্রদান করা হয়েছে।