ডেস্ক রির্পোট:- একের পর এক সংঘাত-সংঘর্ষে অস্থিরতা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এসব সংঘাত-সংঘর্ষের বেশির ভাগই হচ্ছে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তারকে ঘিরে। গত দু’দিন ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকদফা সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন। তারা সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রলীগের কর্মীরা বিরোধে জড়িয়ে আছেন। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে এই সংঘর্ষ। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা দূর করতে ভাইস চ্যান্সেলরকে অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হাসনাত মাহমুদ জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার বিকালে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সামনে প্রকাশ্যেই সংঘর্ষে জড়ান তাদের অনুসারীরা। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার আনুমানিক রাত ১২টার পর ‘ধাক্কাধাক্কির’ মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানা যায়। রাতে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ।
এরপর শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এ দুই নেতার সামনে আবারো সংঘর্ষে জড়ান তাদের অনুসারীরা।
জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বলেন, রাতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৩-৪ জন আহত হয়েছেন। আমি তাদের রাতেই দেখে এসেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। হলেও ভাঙচুর হয়েছে- সাধারণত হামলায় যা যা হয়। একজন লাফ দিয়েছে। তাকেও দেখে এসেছি। সে আপাতত সুস্থ আছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সুমন বাইজিদ জানান, টানা তিন দিনে কয়েক দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের তিন উপ-গ্রুপ। এতে পুলিশসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার টানা ৪ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ২ জন পুলিশসহ ১৩ জন আহত হয়েছে। তুচ্ছ বিষয়ে সংঘর্ষ শুরু হলেও প্রশাসন থেকে অর্থ না পাওয়ায় আধিপত্য বিস্তারের জন্যই এই সংঘর্ষ বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত দুই দিনে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি উপপক্ষ। বুধবার রাতে প্রথম সংঘর্ষে জড়ায় বিজয় ও সিক্সটি নাইন। পরে আবারো বৃহস্পতিবার দুপুরে সংঘর্ষে জড়ায় গ্রুপ দুটি। এদিন রাতে সিএফসি’র সঙ্গে সংঘর্ষ হয় সিক্সটি নাইনের। শুক্রবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ফের সংঘর্ষ হয় সিক্সটি নাইন ও সিএফসি’র মধ্যে। এসব সংঘর্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল, ককটেল নিক্ষেপ এবং রামদা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মহড়া দেয় নেতাকর্মীরা।
অভিযোগ রয়েছে, প্রতিবছর ভর্তি পরীক্ষাসহ বড় কোনো ইভেন্টে শাখা ছাত্রলীগের উপপক্ষগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে ‘পার্সেন্টেজ’ দিয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরীক্ষার সময় ছাত্রলীগের সংঘর্ষ বা কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে এটি দেয়া হয়। তবে এসব বিষয়ে সরাসরি মুখ খুলতে চান না কেউই।মানবজমিন