ভারত ও বাংলাদেশের সঙ্গে আচরণে ভিন্নতা মিয়ানমারের

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৮০ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ঘটনা একই রকম। কিন্তু আচরণে ভিন্নতা। বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে মিয়ানমার, বাংলাদেশের সঙ্গে তা করতে চাইছে না। ভারত থেকে বিমানযোগে এসব নাগরিককে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেও বাংলাদেশে আশ্রিতদের ফিরিয়ে নিতে চায় নৌপথে। যদিও এতে রাজি নয় ঢাকা।

ঢাকার কর্মকর্তারা বলছেন, নৌপথে নিয়ে গেলে এতে নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এখনো তীব্র যুদ্ধ চলছে। ভারত থেকে বিমানযোগেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাহলে বাংলাদেশের সঙ্গে কেন অন্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে? এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকেও বিমানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির ধাওয়া খেয়ে গত ২৯ ডিসেম্বর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরামে পালিয়ে যান মিয়ানমারের প্রায় দেড় শ সৈন্য। এরপর ভারত সরকারের তৎপরতায় চার দিনের মাথায় তাদের ফিরিয়ে নিয়ে যায় মিয়ানমার। গত ২ জানুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দুটি বিশেষ বিমান এসে মিজোরামের রাজধানী আইজলে অবতরণ করে। বিমান দুটিতে করেই সৈন্যদের সবাইকে নিজ দেশে ফেরত নিয়ে যায় মিয়ানমার।

এর কিছুদিন আগে আশ্রয় নেওয়া আরও একটি দলকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টারে করে মণিপুরের মোরে সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এভাবে যদি ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয় তাহলে জটিলতা বাড়তে পারে। ভারত মাত্র চার দিনের মাথায় ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে ফেরত পাঠায়।

এ প্রসঙ্গে চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমেদ বলেন, ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়াটা দ্রুত হওয়া উচিত। ভারত তো খুব দ্রুত ফেরত পাঠিয়েছে। দ্রুত না করলে নানা আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।

এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার ঢাকায় নিযুক্ত মায়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব করে বাংলাদেশ স্পষ্ট বলে দিয়েছে যে নিজ নাগরিকদের অবশ্যই আকাশপথে নিতে হবে মিয়ানমারকে। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমারের প্রশাসনিক রাজধানী নেপিদোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনোয়ার হোসেনও বৈঠক করেছেন দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনসহ নতুন করে আশ্রয় নেওয়া এসব সেনাকে ফেরত পাঠাতে জটিলতা তৈরি হলে সেটা ভারতের জন্যও বিপজ্জনক বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এটা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যের নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখছেন তারা। এ পটভূমিকায় গতকাল ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন নয়াদিল্লি সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করা বুদ্ধিমানের মতো কাজ হয়েছে। কারণ এগুলো ভারতেরও নিরাপত্তা ইস্যু।

ফেরত নেওয়ার আলোচনার মধ্যেই নতুন করে অনুপ্রবেশ

জানা যায়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, বিজিপি, পুলিশ, ইমিগ্রেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার ২৬৪ জন পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। গতকালও বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, মিয়ানমারের বিজিপির আরও ৬৩ সদস্য বাংলাদেশে ঢুকেছেন। এ নিয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, বিজিপি ও পুলিশের মোট ৩২৭ সদস্য গতকাল বুধবার পর্যন্ত বাংলাদেশে ঢুকেছেন।

বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদ এ প্রসঙ্গে বলেন, যুদ্ধ তো সব সময় সীমা মেনে নাও হতে পারে। এ ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। যারা বাংলাদেশে ঢুকছে তারা তো আক্রান্ত, অনেকেই অসুস্থ। তারা তো বাংলাদেশে সারেন্ডার করে ঢুকেছে। হয়তো সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এসব সদস্য শিগগিরই ফেরত যাবে।খবরের কাগজ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions