বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তে ফের পড়লো মর্টারশেল,স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক পরিদর্শনে ডিসি ও এসপি

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৫৬ দেখা হয়েছে

বান্দরবান:- বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্ত জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মিয়ানমার সরকারি বাহিনী ও স্বাধীনতাকামী গ্রুপের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে ফের ওপার থেকে নিক্ষেপ করা ৩টি মর্টারশেল এসে পড়েছে তুমব্রু কোণারপাড়া ও পশ্চিমকুল এলাকায়। তবে মাটিতে পড়ায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সীমান্তে ব্যাপক তৎপর রয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি। আজ বুধবার সকালে সীমান্তের চলমান সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন, সহকারী পুলিশ সুপার মো. আমজাদ হোসেন, নাইক্ষ্যংছড়ি নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাকারিয়া, সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট রাজেস কুমার বিশ্বাস, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিসার ত্রিরতন চাকমা, ঘুমধুম তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মাহাফুজুর রহমানসহ প্রশাসন, আইনশৃংখলা বাহিনী ও শিক্ষা কর্মকর্তারা।

জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, সীমান্তের চলমান সার্বিক পরিস্থিতি, ঘুমধুম ইউনিয়নে নির্মাণাধীন রোহিঙ্গা ট্রানজিট পয়েন্ট, সীমান্তবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করেছি আমরা। এপারের পরিস্থিতি এখনো পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে। এই পর্যন্ত সীমান্তে বেশ কয়েকটি মর্টারশেল বিষ্ফোরণের খবর রয়েছে। আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে ভাবা হচ্ছে, প্রয়োজন পড়লে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে পরীক্ষা কেন্দ্র।

এদিকে বাংলাদেশ–মিয়ানমার দুদেশের সীমানা চিহ্নিত হয়েছে ছোট্ট একটি পাহাড়ি ছড়ার মাধ্যমে। যেটি তুমব্রু খাল নামে পরিচিত। আর নোম্যান্স ল্যান্ড পার হয়ে কাঁটা তার দুদেশেকে ভাগ করেছে। সেই কাঁটা তারের ওপারে দূর থেকে দেখা যায় ব্যাপক তৎপর সেদেশের বিদ্রোহী বা স্বাধীনতাকামী দলের সদস্যদের। আর এপারের সীমানা পাহারায় টহল দিচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি। এমন চিত্র বলে দেয় দুদেশের সীমান্তে উত্তেজনার কথা। এই সীমান্ত এলাকায় দিনে কিছুটা কম থাকলেও রাতের আঁধারে বাড়ছে ব্যাপক গোলাগুলি। সবশেষে বুধবার ভোররাতে বিকট শব্দে কেপে উঠেছে তুমব্রু–ঘুমধুম সীমান্ত অঞ্চলের মানুষ। অনেকে রাতে ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে ভোরে ফিরেছে ঘরে। সীমান্তের এমন ভয়ংকর উত্তেজনায় শিশু ও বয়ষ্কদের মাঝে আতংক দেখা দিয়েছে। তবে অনেকে গোলার এমন শব্দের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জুলফিকার ভুট্টো বলেন, সীমান্তের ওপারে মঙ্গলবার ও বুধবার দুদিনে ১৮ টি মর্টারশেলের আওয়াজ শুনেছেন সীমান্তবাসীরা। বুধবারও সীমান্তের এপারে ৩টি মর্টারশেল এসে পড়েছে। তবে মাটিতে এসে পড়ায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সীমান্তে বিজিবির জোয়ানরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন। ভয়ের তেমন কিছু না থাকলেও আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে দূরদূরান্তে আত্মীয়স্বজনদের বাসা বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছে সীমান্ত অঞ্চলের মানুষ।

সীমান্তের তুমব্রু পশ্চিম কূলের বাসিন্দা আবদুর রহিম প্রকাশ বাহাদুল্লাহ বলেন, আমার বাড়ির আঙ্গিনায় মর্টারশেলের গোলা এসে পড়ে। বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায় সবার। আতঙ্কে ছোটাছুটি করে আশপাশের মানুষ। সপ্তাহ দশদিন ধরে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী বাহিনীর মধ্যে সংঘাত চলে আসছে। কয়েকদিন ধরে গোলাগুলি ও মর্টারশেল নিক্ষেপের শব্দ জোরালো হয়েছে। মাঝেমধ্যেই গুলি ও মর্টারশেল এসে পড়ছে বাংলাদেশ সীমান্তে। আতঙ্কে সন্তানদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন অভিভাবকরা।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions