ডেস্ক রির্পোট:-বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের বড় প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রামের অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপোগুলোয় (আইসিডি)। বেসরকারি এসব ডিপোয় কনটেইনার থেকে পণ্য খালাস ও কনটেইনার বোঝাইয়ের কাজ কমেছে। বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আয়েও। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা।
আইসিডি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে আইসিডিগুলোয় রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনার বোঝাইয়ের কাজ (হ্যান্ডলিং) হয়েছে ৬ লাখ ৬১ হাজার টিইইউ। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ৮২ হাজার টিইইউয়ের বেশি বা ১১ দশমিক ১০ শতাংশ রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনার হ্যান্ডলিং কমেছে।
বিকডা জানায়, বেসরকারি আইসিডিগুলোয় স্বাভাবিক সময়ে প্রতি মাসে আয় হতো প্রায় ১৩০ কোটি টাকা; এখন তা নেমে এসেছে ৯০ কোটি টাকায়। ব্যবসা কমে যাওয়ায় এখন আয়ের পরিমাণ কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ।
বৈদেশিক মুদ্রা সংকট ও বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের। দেশের সর্ববৃহৎ এই কাস্টম হাউসের প্রথম ছয় মাসে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৮ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩৩ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ ঘাটতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও গত বছরের তুলনায় এ বছর ১০ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। যদিও আদায় বৃদ্ধির ভিন্ন কারণ জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মুখপাত্র এবং ডেপুটি কমিশনার মো. বদরুজ্জামান মুনশি বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব ঘাটতি থাকলেও সার্বিক রাজস্ব আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি রয়েছে। চোরাচালান, জালিয়াতি এবং শুল্ক ফাঁকি রোধে নানামুখী উদ্যোগের কারণে রাজস্ব আদায় বেড়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে জট কমাতে সব ধরনের আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার ১৯টি বেসরকারি ডিপোতে সরিয়ে নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এসব অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনালের ধারণক্ষমতা প্রায় ৭৬ হাজার টিইইউ। এতে বিনিয়োগ করা হয়েছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারে করে আমদানি হওয়া মোট পণ্যের প্রায় ২৩ শতাংশ খালাস দেওয়া হয় এসব ডিপোয়। আর রপ্তানি পণ্যের ৯৫ শতাংশ কনটেইনারই বোঝাই হয় এসব বেসরকারি আইসিডিতে। ১৯টি ডিপোয় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে কাজ করেন প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক। রপ্তানিকারক এবং আইসিডি খাতসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যিক মন্দা, মার্কিন ডলার-সংকট, তৈরি পোশাকের ফরমাশ কমে যাওয়ায় পণ্যবাহী কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণও কমেছে।
২০২৩ সালে আইসিডিতে আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার টিইইউ। ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৩৯ হাজার টিইইউ।
কনটেইনার হ্যান্ডলিং কমে যাওয়ায় আর্থিক খাতে সরাসরি প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন বিকডা সভাপতি নুরুল কাইয়ুম খান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইসিডির আয় কমে যাওয়ায় ব্যাংকঋণ পরিশোধের ওপর প্রভাব পড়বে। সুদসহ ব্যাংকঋণের পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে। আজকের পত্রিকা