শিরোনাম
৩ কোটির ক্যাশ চেক দিয়ে ডিসির পদায়নের বিষয়টি ভিত্তিহীন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সাম‌নে ৩৫ প্রত্যাশীদের অবস্থান, টিয়ারশেল নিক্ষেপ উন্নয়নের অংশীদার হলেও ১৫ বছরে শ্রমিকরা ন্যায্য পারিশ্রমিক পাননি— দেবপ্রিয় ৩ বছরে উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করা প্রায় ১৯ লাখ শিক্ষার্থীর অধিকাংশই বেকার দুই সচিব ও ৬ অতিরিক্ত সচিবকে ওএসডি ২০ হাজারের বেশি বাংলাদেশির পাসপোর্ট ফেরত দিলো ভারত সচিবালয়ে হট্টগোল,শাস্তি পাচ্ছেন ১৭ উপসচিব সাভারে শ্রমিকদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ একজনের মৃত্যু বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা নিয়ে অবস্থান জানাল ভারত ‘পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সেনাবাহিনী সরকারকে সহযোগিতা করছে’

রাঙ্গামাটিতে এক বছরে নিহত ৫১, সড়ক দুর্ঘটনায় পর্যটক আহত ৪১

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ১৯৫ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- দেখতে দেখতে শেষ হয়ে গেলো আরো একটি বছর, ২০২৩ সাল। বছরটি নানা কারণেই ছিল আলোচিত। পাহাড়, লেক আর জীববৈচিত্র্যসহ নানা কারণেই আলোচিত আয়তনের দিক থেকে দেশের সর্ববৃহৎ জেলা রাঙ্গামাটি। ২০২৩ সালে বেশ কিছু ঘটনার কারণে আলোচিত ছিল এই জেলা। বিশেষ করে বছরের শেষ সময়ে এসে আলোচিত ঘটনার মধ্যে একটি হলো রাঙ্গামাটিবাসীর সাথে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়ালি বৈঠক। বৈঠকে তিনি রাঙ্গামাটিবাসীর কাছ থেকে নৌকা মার্কায় ভোট চান। পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর পাহাড়ে যে উন্নয়ন হয়েছে তা অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

জেলায় বছরে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ঘটনার স্থান হলো বাঘাইছড়ি উপজেলার অর্ন্তগত সাজেক ইউনিয়ন। অর্থাৎ পর্যটন নগরী সাজেক। পুরো বছর ধরে সাজেক আলোচনায় ছিলো।

২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর পর্যটকবাহী গাড়ি লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। কয়েকটি গাড়ি ভাংচুরও করা হয়। পরে স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি সামাল দিলেও বাইরে থেকে আগত পর্যটকদের মাঝে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে। সুধীজনরা বলছেন, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কার্যক্রম পর্যটন খাতের জন্য বিশাল ক্ষতি।

পুরো বছরে সাজেকে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন পর্যটকসহ ৬ জন। পর্যটকবাহী পরিবহন পাহাড়ি খাদে পড়ে পুরো বছরে আহত হয়েছে ৪১ জন। সাজেকে ডায়রিয়া এবং নিউমোনিয়ায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

পুরো জেলায় কাপ্তাই হ্রদে ডুবে, আত্মহত্যা, বৈদ্যুতিক শকসহ ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অজ্ঞাত ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জেলায় এবার ২টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। বন্য হাতির আক্রমণে কিশোর, বৃদ্ধ মিলে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

জেলায় এইবার সীমান্ত সড়কে কাজ করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় শ্রমিকরা হতাহতের শিকার হয়েছেন। সাজেকের উদয়পুর এবং রাজস্থলী উপজেলায় সীমান্ত সড়কে দুর্ঘটনা, জেলার অন্যান্য এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা, স্পিটবোট দুর্ঘটনা, বোট ডুবিতে এ জেলায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন।

তবে এবার রাঙ্গামাটিতে সশস্ত্র গ্রুপ গুলোর মধ্যে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত কম হয়েছে। পুরো বছরে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে মাত্র একজন নিহত হয়েছে। বছরের শুরুতে ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে অবিস্ফোরিত গ্রেনেডের যন্ত্রাংশ কুড়িয়ে বাড়িতে নেয়ার পর বিস্ফোরিত হয়ে বাবা ও ছেলে নিহত হয়েছিল। এবার বজ্রপাতে জেলায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ৭ আগস্ট বরকল উপজেলায় কাপ্তাই হ্রদে ডুবে এক যুবক নিখোঁজ হন। তার মরদেহ এখনো পাওয়া যায়নি।

গত ১৬ জুলাই কাপ্তাই সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর কম্পিউটার সায়ন্সে এন্ড টেকনোলজি ডিপার্টমেন্টের ৫৫তম ব্যাচের ৫ম সেমিস্টারের ছাত্র শেখ সাদিকুর রহমান ছাত্রাবাসের দোতলা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে আইসিউতে থাকা অবস্থায় গত ১৯ জুলাই সকাল ১০টায় মৃত্যুবরণ করে। শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার ৯ দিন পর ২৪ জুলাই কাপ্তাই থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে শিক্ষার্থীর পরিবার।

২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর রাঙ্গামাটি সদরের মানিকছড়ি এলাকায় চাঁদা আদায়ে কাঠের গাড়িকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে সন্ত্রাসীরা। এতে চালক গুলিবিদ্ধ হয়। এর আগে একই বছরে ২৫ জানুয়ারি একই ঘটনা ঘটে।

২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আলোচিত আরেকটি ঘটনা হলো রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে বন্ধুদের সাথে বেড়াতে যাওয়ার পথে সিজুগ ছড়া সার্জেন্ট কামাল চত্বর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী দ্বিপিতা চাকমাকে অপহরণ করে সন্ত্রাসীরা। ওইদিন সাত ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে যৌথবাহিনী। সে ঘটনায় তার পিতা স্মৃতেন্দু বিকাশ চাকমা (৬৮) বাদী হয়ে কয়েকজনকে আসামি করে ফৌজদারি অপরাধে ১৫৪ ধারায় থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে হতবাক করার মতো ঘটনা হলো অপরহরণের শিকার ছাত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান, সাবেক শান্তিবাহিনীর কমান্ডার সন্তু লারমার বোনের ঘরের নাতনী।

তবে ২০২৩ সালের বছরের মাঝমাঝিতে বৃষ্টিপাত কম হলেও হঠাৎ করে আগস্ট মাসের টানা ভারি বৃষ্টিতে পুরো জেলায় আতঙ্ক বিরাজ করে। জেলার ১৯৭টি স্থানে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি পরিসরে পাহাড় ধস হয়েছে। এ ঘটনায় জেলায় ৩৮১টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারের দেয়া ৯টি আশ্রয়ন ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৮টি সড়কে ধস হয়েছে। ৪টি ব্রিজ এবং ২০টি বিদ্যুতের খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অতি বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে জেলার কাপ্তাই হ্রদ বেষ্টিত নি¤œাঞ্চল ডুবে যায়।

পুরো জেলায় ৬৮৩.৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪৩টি পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ভ‚মি ধসের কারণে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় গত ৮ আগস্ট সাজেকে ১৫০ জন পর্যটক আটকা ছিল।

এছাড়া ২০২২ সালের ন্যায় ২০২৩ সালেও বছরের শুরুতে কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নিয়ে মাতামাতি ছিল। তবে শেষ সময়ে এসে শান্তি কমিটির সাথে আলোচনা শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি শান্ত আছে।পার্বত্য নিউজ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions