ডেস্ক রির্পোট:- চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রোগীদের বিনামূল্যের ওষুধ সরবরাহের হিসাবে গরমিল খুঁজে পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত চলা অভিযানে এ অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হকের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি টিম অভিযানটি পরিচালিত করা হয়।
দুদকের হট লাইন-১০৬ নম্বরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিচালিত অভিযানে সরকারি ওষুধ চুরিতে জড়িত সাতজনকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করেছে দুদক টিম। দুদকের ছদ্মবেশে চালানো অভিযানে ধরা পরে নানা অসঙ্গতি। দুদক টিম প্রথমে হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগ থেকে অভিযান শুরু করে। পরে হাসপাতালের ১৩ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডে অভিযান চালায়। ২০২২ সালের মার্চেও দুদকের উপপরিচালক মো. নাজমুছ সাদাতের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে ওষুধ সরবরাহে গরমিলের প্রমাণে পেয়েছিল দুদক টিম।
জানা যায়, চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে উল্লেখ না থাকলেও ওয়ার্ড রেজিস্ট্রার খাতায় দামি ওষুধের নাম লিখে স্টোর থেকে ওষুধ তুলে নেওয়া, হাসপাতালের ইমারজেন্সি কেয়ার ইউনিটে রোগীকে ওষুধ না দিলেও তা নার্সের রেজিস্ট্রার খাতায় লেখা থাকা, শয্যায় রোগী ভর্তি না থাকার পরও রোগীর নাম দেখিয়ে ওষুধ সরিয়ে নেওয়া, সরকারি ওষুধ রোগীদের না দিয়ে বাইরে বিক্রি করা ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ওষুধ না পেলেও বরাদ্দকৃত সেই ওষুধ বাইরে বিক্রি করার প্রমাণ পায় দুদক টিম। হাসপাতালের ১৩নং ওয়ার্ডে অভিযান চালানোর সময় দেখা যায়, রোগীর ব্যবস্থাপত্রে ওষুধের নাম উল্লেখ না থাকলেও নার্সের রেজিস্ট্রার খাতায় তা লেখা আছে। এ নিয়ে ওয়ার্ডের নার্স ইনচার্জকে জিজ্ঞেস করা হলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে বিষয়টি ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্সকে জিজ্ঞেস করলে তিনিও কোনো উত্তর দিতে পারেনি।
অভিযান শেষে দুদক কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, হট লাইনে অভিযোগ পেয়ে হাসপাতালে ছদ্মবেশে অভিযান চালানো হয়। এসময় ওষুধ নিয়ে নয়-ছয়ের প্রমাণ মেলে। ধারণা করছি, ওষুধ নিয়ে এসব অনিয়মের সঙ্গে নার্সরাই জড়িত। আমাদের অভিযানের সময় হাসপাতালের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও সঙ্গে ছিলেন। তিনি দেখেছেন ওষুধ নিয়ে অনিয়ম হচ্ছে হাসপাতালে। বিষয়টি হাসপাতালের পরিচালককে অভিহিত করলে তিনিও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। তাছাড়া, ওষুধের গরমিলের বিষয়ে আমরা নথিপত্র সংগ্রহ করেছি। এগুলো যাচাই-বাছাই করে দুদকের সদর দপ্তরে একটি প্রতিবেদন পাঠাব।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, দুদকের অভিযানে পাওয়া অনিয়ম নিয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। আমি সব সময় সকল প্রকার অনিয়মের বিপক্ষে। কোন অনিয়মকেই প্রশ্রয় দেই না। গত দুইদিন আগে এক দালালকে আটক করে পুলিশ। যেই অপরাধ করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।