খাগড়াছড়ি:- জাতীয় সংসদের ২৯৮ (খাগড়াছড়ি) নম্বর আসনের দীঘিনালা উপজেলায় ৫টি ইউপিতে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ২৯ টি। এখানে বাঙালি এবং পাহাড়ি-বাঙালি মিশ্রিত ভোটার অধ্যুষিত কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের সরব উপস্থিতি দেখা গেলেও পাহাড়ি অধ্যুষিত কেন্দ্রগুলোর চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।
পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ (প্রসিত) নিয়ন্ত্রিত এলাকার ভোটকেন্দ্র ছিল একেবারেই ফাঁকা। কোনো কোনো কেন্দ্রে ছিল না নৌকার এজেন্ট। এ রকম ৩টি কেন্দ্রে কোনো ভোটই পড়েনি নৌকায়; আর ৫টি কেন্দ্রে ভোট পরেছে মাত্র ২১ টি; যার মধ্যে নৌকা পেয়েছে ১৮ ভোট। অথচ এই ৮ কেন্দ্রে ভোটার রয়েছেন ২৪ হাজার ৮৯৩ জন।
আজ রোববার ভোটের দিন সরেজমিনে দুপুর ১২টার দিকে বানছড়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, কোনো ভোটারের উপস্থিতি নেই।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা দেবপ্রিয় বড়ুয়া জানান, কেন্দ্রটিতে ভোটার সংখ্যা ৪ হাজার ৩০ জন, ভোট দিতে আসেননি কেউ। এমনকি কেন্দ্রটিতে নৌকার কোনো এজেন্টও ছিল না।
দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে বড়াদম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে একই চিত্র দেখা যায়। এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. মাইন উদ্দিন জানান, কেন্দ্রটিতে ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৯৪৮ জন; সোয়া ১২টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন মাত্র ১১ জন। বিকেলে ভোট গণনার সময় সে কেন্দ্রে ১টি ভোট লাঙ্গল প্রতীকে, বাকি ১০ ভোট নৌকা প্রতীকে।
১২টা ২০ মিনিটে উদাল বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়েও দেখা যায় একই চিত্র। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম জানান, সেখানে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৬৭৫ জন, কিন্তু তখন পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন মাত্র একজন ভোটার। বিকেলে সে ভোটটি নৌকা প্রতীকের বলে গণনা হয়েছে।
সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের মিলনায়তনে ফলাফল ঘোষণা কেন্দ্রে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহেনশাহ লতিফুল খায়ের ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, পাবলাখালী শান্তিপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩ হাজার ৭৩ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র ৪ জন। সেখানে ১টি ভোট বাতিল হয়েছে এবং বাকি ভোট নৌকা প্রতীকে। কাটারুংছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪ হাজার ৩১৮ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র ৩ জন মাত্র, ১ ভোট নৌকা প্রতীকে, ১ ভোট সোনালী আঁশ এবং বাতিল হয়েছে ১ ভোট। এর বাইরে ৩টি কেন্দ্রে একটি ভোটও পড়েনি। সেগুলো হলো নুনছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৫১৩), জারুলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৮৯) এবং ২ নম্বর বাঘাইছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র (ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ২৪২)।
সরেজমিনে দুপুরে ভোটার শূন্য কেন্দ্রগুলোর সংশ্লিষ্ট ভোটারদের সঙ্গে কথা বললেও কেউ মুখ খোলতে রাজি হননি। তবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভোটার জানিয়েছেন, আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ ভোট বর্জনের ডাক দেওয়াতে তাঁরা ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বিরত রয়েছেন।