ডেস্ক রির্পোট:- দেশের নদ-নদী, খাল, জলাশয় ও হাওর সরকার অনুমোদিত ড্রেজারের মাধ্যমে খনন করতে হবে। অন্যথায় খননকাজ অবৈধ বলে গণ্য হবে। সম্প্রতি প্রণীত ‘ড্রেজিং ও ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা, ২০২৫’ এ এমন শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে।
দেশের নদ-নদী, খাল, জলাশয় ও হাওর সরকার অনুমোদিত ড্রেজারের মাধ্যমে খনন করতে হবে। অন্যথায় খননকাজ অবৈধ বলে গণ্য হবে। সম্প্রতি প্রণীত ‘ড্রেজিং ও ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা, ২০২৫’ এ এমন শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো প্রণীত এ ড্রেজিং ব্যবস্থাপনা মানতে হবে সরকারি-বেসরকারি সব পক্ষকে।
দেশের নদ-নদীর প্রবাহ রক্ষার পাশাপাশি কৃষিজমি সুরক্ষা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের অংশ হিসেবে পানিসম্পদ মন্ত্রণলায় গত জুলাইয়ে ‘ড্রেজিং ও ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা, ২০২৫’ প্রণয়ন করেছে। গত জুলাইয়ে ড্রেজিং ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সমন্বিত ও পরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনা ও ড্রেজড ম্যাটেরিয়ালস ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নদী খনন, নৌরুট সৃষ্টি/পুনরুদ্ধার, মৎস্য-কৃষি ও সেচ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, জলাভূমির জীববৈচিত্র্য, বিভিন্ন জলজ প্রজাতির প্রজনন ও আবাসস্থল সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তনগত প্রভাব মোকাবেলাসহ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার উদ্দেশ্যে সর্বজনীন ব্যবহারের জন্য ‘ড্রেজিং ও ড্রেজড ম্যাটেরিয়ালস ব্যবস্থাপনা নীতি, ২০২৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে এবং উপদেষ্টা পরিষেদ বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এ নীতিমালা মানতে বাধ্য থাকবে। জারি হওয়ার দিন থেকেই নীতিমালা কার্যকর ধরা হবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, যেকোনো ড্রেজিং কার্যক্রম গ্রহণের আগে নদী বা প্রবহমান জলধারার পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণপূর্বক ‘ড্রেজিং মাস্টারপ্ল্যান’ প্রণয়ন করা হবে, যা আন্তঃমন্ত্রণালয় পর্যালোচনার মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেয়া হবে।
সম্ভাব্য সমীক্ষায় ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল ব্যবস্থাপনার দিকনির্দেশনা, ড্রেজিং সংক্রান্ত ব্যয়, ড্রেজড ম্যাটেরিয়ালের পরিকল্পিত ব্যবহার, ড্রেজিং কার্যক্রমের স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ও তা থেকে উত্তরণের বিষয়ে সুস্পষ্ট সুপারিশমালা প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে স্বল্প প্রবাহ বা প্রবাহহীন নদী ও জলাশয়ে পূর্বাবস্থা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক অন্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়া নদ-নদী অবৈধ দখলমুক্ত করা ও নদীর গতিপথ পুনরুদ্ধারে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ড্রেজিংয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।
কোনো নদ-নদীতে ড্রেজিং পরিকল্পনাধীন এলাকায় সরকার ঘোষিত বালুমহাল থাকলে সেক্ষেত্রে বালুমহালাধীন এলাকায় ‘বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ (সংশোধন ২০২৩)’-এর ৭ (৩) ধারা প্রযোজ্য হবে। এছাড়া নদ-নদী, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড়, জলাশয় থেকে সরকারের অনুমোদনবিহীন মেশিনচালিত যন্ত্র ব্যবহার করে ড্রেজিং করা যাবে না। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী কোনো স্থান বা এলাকা বা পানিপ্রবাহ প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় ড্রেজিং করা যাবে না। একই সঙ্গে ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল উত্তোলন বা ড্রেজিংয়ের ফলে কোনো নদীর তীর অথবা তীরবর্তী স্থান ভাঙনের শিকার হতে পারে এমন ক্ষেত্রে ড্রেজিং করা যাবে না।