রাঙ্গামাটি:- পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার ‘আদিবাসী’ স্বীকৃতি দাবি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন ২০১০ সংশোধনপূর্বক জাতি বৈচিত্র্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রণয়নের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের(পিসিসিপি) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে শহরের কাঁঠালতলী থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বনরূপা সিএনজি স্টেশন চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে পিসিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা সভাপতি মো. আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলার সভাপতি মোহাম্মদ সোলায়মান। আরো বক্তব্য রাখেন পিসিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক রবিউল ইসলাম, বরকল উপজেলা সভাপতি তসলিম উদ্দিন, লংগদু উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, বরকল উপজেলা সভাপতি তসলিম উদ্দিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
এসময় বক্তারা বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ‘আদিবাসী’ পরিচয়ের দাবি জানিয়ে সংবিধানবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। একটি দায়িত্বশীল পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তির এমন বক্তব্য প্রদান শুধু অনভিপ্রেতই নয়, বরং তা জাতিগত উত্তেজনা এবং বিভাজনের রাজনীতিকে উৎসাহিত করতে পারে বলে বক্তারা হুঁশিয়ারি দেন।
বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশ একটি একক ও অভিন্ন জাতিসত্তাভিত্তিক রাষ্ট্র। বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অধিকারকে সরকার দীর্ঘদিন ধরে সম্মান জানিয়ে আসছে। কিন্তু এই অধিকার চর্চা যদি একক জাতিসত্তার বিপরীতে সংবিধানবিরোধী রাজনৈতিক দাবিতে রূপ নেয়, তাহলে তা ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত। আমরা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন যে, সভায় ৭(ঘ) ধারা সংশোধনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীভুক্ত ৬ জন প্রতিনিধির প্রস্তাব সংসদীয় প্রতিনিধিত্বের কাঠামোতে একপাক্ষিকতা তৈরি করতে পারে। এতে পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালি জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিত্ব সংকুচিত হবে এবং দীর্ঘদিনের সহাবস্থানের চর্চা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
পিসিসিপি নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এর আগে বিভিন্ন বরাদ্দে অনিয়ম ও সাম্প্রদায়িকতা করেছেন, তাই সুপ্রদীপ চাকমাকে বিতর্কিত কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে আহবান জানাচ্ছে পিসিসিপি। পাহাড়ে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখতে হলে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া বন্ধ করতে হবে পার্বত্য উপদেষ্টা ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার। তারা যদি বিতর্কিত কোন সিদ্ধান্ত নেয় পাহাড়ের বিষয়ে তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতাকে নিয়ে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলবে।