ডেস্ক রির্পোট:- প্রশ্ন: আমার বড় বোনের বিয়ে হয়েছে দুই বছর হলো। গত মাসে বোনজামাই বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। বোনের সঙ্গে তিনি কোনো ধরনের যোগাযোগ করছেন না। তাঁকে দেশে ফেরত আনব কীভাবে? বিদেশে যাওয়ার পর তাঁকে কি দেশে ফেরত আনতে পারব? আমাদের এখন কী করণীয়?
ঝুমুর, পটিয়া
উওর: আপনার বোনজামাই কোন দেশে গেছেন, সেটা যদি জানতে পারেন, তবে সেই দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসে অভিযোগ করতে পারবেন। এর আগে অবশ্যই থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। পুলিশ তাঁকে খুঁজে বের করতে পারবে। বাংলাদেশ দূতাবাস ফৌজদারি অপরাধের আসামিকে ফেরত পাঠানোর জন্য পদক্ষেপ নিতে পারে।
প্রশ্ন: আমি কর্মজীবী নারী। পেশায় আর্কিটেক্ট। বিয়ে হয়েছে পাঁচ বছর আগে। বিয়ের পর প্রথম ১০ মাস স্বামীর কথামতো আমি একাই বাড়িভাড়া ও নিজের খরচ চালাই। করোনার সময় চাকরি ছেড়ে দিই। এক বছর বাড়িতে থেকে টুকটাক ফ্রিল্যান্সের কাজ করি। সে সময় সে খুবই বিরক্ত ছিল আমার ওপর। কারণ আমি আয় করি না। আর এ কারণে মানসিক নির্যাতন করত। ২০২১ সালে আমি নতুন করে কাজ শুরু করি। আমাদের দাম্পত্যজীবনে যখন সমস্যা হয়, তখন সে ফোন করে আমার বাবা-মাকে ডেকে আনে। একদিন আমার বুকের ওপর বসে গলা চেপে ধরেছিল, তখন ওকে আমি লাথি মেরে সরিয়ে দিই। ও এই কথাটা সবাইকে বলে বেড়ায়। একবার আমার শারীরিক নির্যাতনের রক্তাক্ত ছবি বাড়িতে পাঠাই, কিন্তু কোনো ধরনের সাড়া পাইনি।
কিছুদিন আগেও আমার পরিবারকে ডেকে এনে ডিভোর্সের হুমকি দিয়েছে। ওর অভিযোগ, ঝগড়া করে আমি নিজেকেই নিজে আঘাত করে বাড়িতে ছবি পাঠাই। হুমকি দিচ্ছে, আমার বিরুদ্ধে থানায় জিডি করবে। আমি সব সময় সংসারটা টিকিয়ে রাখতেই চেয়েছি। কারণ বাবার বাড়ির আবদ্ধ পরিবেশে আমার পক্ষে মানসিকভাবে সুস্থ থেকে কাজ করা সম্ভব নয়। কিন্তু যদি সেপারেশন হয়, সে ক্ষেত্রেও আমি আলাদা করে আমার মতো থাকতে চাই। আমি একটা জব করে হাসিমুখে স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে চাই। পুরো পরিস্থিতিতে আমি কোন ধরনের আইনি সহায়তা পেতে পারি? যদি সে ডিভোর্স দেয়, তাহলে কি নিজেকে প্রমাণ করতে পারব যে আমি নির্দোষ? যদি হ্যাপিলি ডিভোর্সও হয়, তাহলে কি আমাকে জোরপূর্বক কেউ বাবার বাড়িতে ফেরত নিয়ে যেতে পারবে? যদি নিয়ে যেতে চায়, তাহলে কি আইনত কোনো সহায়তা পাব, যাতে আমি আমার মতো কর্মজীবী হোস্টেলে থেকে ক্যারিয়ার গুছিয়ে নিতে পারি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ঢাকা
উওর: আপনি প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষ। আপনি নিজে রোজগার করেন। আপনার অভিভাবক আইনত আপনি নিজে। কাজেই আপনি কোথায় থাকবেন না থাকবেন, সংসার করবেন কি করবেন না, তা পুরোটাই আপনার ওপর নির্ভর করে। বাংলাদেশের কোনো নাগরিককে জোরপূর্বক আটকে রাখার বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোথাও বাস করতে বাধ্য করতে পারে না। এটা আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। ডিভোর্স হলেও আপনি আপনার মতো করে যেকোনো জায়গায় থাকতে পারবেন।
পরামর্শ দিয়েছেন: আইনুন নাহার সিদ্দিকা, অ্যাডভোকেট, সুপ্রিম কোর্ট