উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হওয়ার পরে শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয়

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৩৫৫ দেখা হয়েছে
bdj

মো. শাকিলুর জামান শাকিল:- শিক্ষাজীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো উচ্চমাধ্যমিক। এই স্তরে একজন শিক্ষার্থী সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে নিয়মিত অধ্যবসায় আর নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে এগোতে পারলে তবেই সাফল্যের সোনালি শিখরে আরোহণ করতে পারে। এ সম্পর্কিত কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হলো।

শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জনের সর্বোৎকৃষ্ট ও কার্যকর মাধ্যম হলো ক্লাস বা শ্রেণি কার্যক্রম। নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিতির ফলে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পড়াশোনার মানোন্নয়নের পাশাপাশি ইতিবাচক মনো-জাগতিক পরিবর্তন সাধিত হয়। তাই কোনোভাবেই শিক্ষার্থীদের ক্লাস ফাঁকি দেওয়া উচিত নয়। তা ছাড়া মানসম্পন্ন শ্রেণি কার্যক্রম নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরও আন্তরিক ও সহযোগিতামূলক মনোভাব থাকা দরকার।

সিলেবাসের পরিধি
উচ্চমাধ্যমিকের সিলেবাসের পরিধি সময়ের সঙ্গে তুলনায় অনেক ব্যাপক। স্বল্প সময়ে শিক্ষার্থীদের সিলেবাসের সব বিষয়ের খুঁটিনাটি জানতে হয়। এ ছাড়া একাদশের পরে দ্বাদশ শ্রেণিতে সময়টাও অনেক কম থাকে। আবার পড়াশোনার চাপটা অনেক বেড়ে যায়। সুতরাং শুরু থেকেই সময় ভাগ করে নিয়ে সিলেবাসের সবগুলো টপিকের ওপর ভালো দখল অর্জন করা উচিত। কোনো টপিকে দুর্বলতা রেখে অধ্যায়টি শেষ করলে সেই দুর্বলতা পূরণের জন্য দ্বিতীয়বার সময় পাওয়া কঠিন।

ইন্টারনেট বা অনলাইন
অনেক শিক্ষার্থী মনে করে ইন্টারনেটেই তো সব বই-পুস্তক বা লেকচার রয়েছে। তারা পাঠ্যপুস্তক রেখে ইন্টারনেট নিয়ে পড়তে বসে। ধীরে ধীরে মনোযোগ পড়াশোনা থেকে সরে অন্যদিকে ধাবিত হয়। সময় শেষ হয় ঠিকই, কিন্তু পড়া আর শেষ হয় না। সুতরাং পড়াশোনার জন্য ইন্টারনেটনির্ভর না হয়ে পাঠ্যপুস্তকনির্ভর হতে হবে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তুকে সহজবোধ্য করার জন্য ইন্টারনেটের তথ্যভান্ডার ব্যবহার করা যেতে পারে। শুধু যোগাযোগ রক্ষার্থে সীমিত পরিসরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা যেতে পারে।

সময়ের সদ্ব্যবহার
উচ্চমাধ্যমিকের একজন শিক্ষার্থীর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সময়ের সদ্ব্যবহার করা। শিক্ষার্থীরা জীবনে কে কী হতে চায় তার অনেকটাই নির্ভর করে তারা উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সময়কে কীভাবে কাজে লাগাল তার ওপরে। তাই শুরু থেকেই এ বিষয়ে সজাগ থাকা উচিত।

আত্মবিশ্বাস
শহরের অনেক সচেতন পরিবারের শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষা শেষ করে সঙ্গে সঙ্গেই এইচএসসির বইপত্র নিয়ে পড়া শুরু করে এবং কলেজে ভর্তির আগেই সিলেবাসের একটা অংশ শেষ করে ফেলে। গ্রামের শিক্ষার্থীরা তাদের শহুরে বন্ধুদের এ অবস্থায় দেখে অনেকটাই হীনম্মন্যতায় ভুগতে থাকে। তবে কখনোই হতাশ হওয়া যাবে না, মনে রাখতে হবে, ‘Slow and steady wins the race’। নিরলস পরিশ্রম আর নিয়মিত অধ্যবসায়ের মাধ্যমে গ্রামের পিছিয়ে পড়া ছাত্রটাও হয়ে উঠতে পারে আত্মবিশ্বাসী এবং পৌঁছাতে পারে তার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে।

সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও পরিকল্পনা
উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সাফল্য-ব্যর্থতার ওপর নির্ভর করে একজন শিক্ষার্থীর জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চলে আসে, যা আর পাল্টানো যায় না। সুতরাং এইচএসসিতে ভর্তির সময়েই একজন শিক্ষার্থীর উচিত তার জীবনের লক্ষ্যকে সুনির্দিষ্ট করা। এর ফলে তারা সেই লক্ষ্য অনুযায়ী নিজেকে পরিকল্পনামাফিক প্রস্তুত করতে পারে। তা ছাড়া সিলেবাসের কোন বিষয়ে কেমন গুরুত্ব দেওয়া দরকার, তা-ও নির্ধারণ করা যায়।

মেধা বনাম পরিশ্রম
পৃথিবীতে অনেক মেধাবী ব্যক্তি রয়েছেন, যাঁরা সফল হতে পারেননি, কিন্তু কোনো পরিশ্রমী ব্যক্তি নেই যিনি পরাজিত হয়েছেন। সুতরাং মেধা যা-ই হোক না কেন পরিশ্রম করলে এর ফল মিলবেই।

লেখক: প্রভাষক (রসায়ন), দিনাজপুর সরকারি কলেজ, দিনাজপুর

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions