শিরোনাম
রাঙ্গামাটিতে বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন কাপ্তাই লেক দেশের সম্পদ, একে রক্ষা করতে হবে : ফরিদা আখতার ইউপিডিএফ নিষিদ্ধের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে মহাসমাবেশ এনবিআর ভেঙে হলো দুই বিভাগ, অধ্যাদেশ জারি এনবিআর বিলুপ্ত করে অধ্যাদেশ জারি হাসিনার সীমান্ত সড়কে তিন পার্বত্য জেলা এবং বিশেষ করে বৃহত্তর চট্টগ্রাম নিয়ে নতুন করে জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ক্ষমতা চান সিভিল সার্জনরা বিপুল অর্থপাচারে ‘সেভেন স্টার’ গ্রুপ হাসিনাই ‘নির্দেশদাতা’ জুলাইয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত

রাঙ্গামাটিতে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতাব্বর ও সাংগঠনিক সম্পাদক ছাওয়াল উদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত টর্চার সেল ও আয়না ঘরের সন্ধান

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১১৮২ দেখা হয়েছে

রাঙ্গামাটি:- রাঙ্গামাটিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের টর্চার সেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। কথিত এ আয়না ঘর বা টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে ব্যবসায়ী, শ্রমিক থেকে সাধারন মানুষের কাছ থেকে চাঁদা দাবী করতো আর চাঁদা না দিলে চলতো অমানসিক নির্যাতন। এলাকাবাসী ও ভূক্তভোগীরা ছাত্রলীগের এসব চাদাঁবাজ,সন্ত্রাসী গ্যাংদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন। তবে পুলিশ বলছে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
জানা গেছে, ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের আগে রাঙ্গামাটি শহরের আলম আলম ডক ইয়ার্ড এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ব, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল এলাকাবাসী। ভয়ে এলাকাবাসীরা কেউই মুখ খুলতে চাইতেন না। এলাকাবাসীদের অভিযোগ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান বাপ্পীর নেতত্বে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন কায়সার, ছাত্রলীগ নেতা মো. রাব্বী ও মো. রাকিব,কলিম উল্লাহসহ একটি সিন্ডিকেট চাঁদাবাজী ও আমানসিক নির্যাতন চালাতেন। আলম ডক ইয়ার্ড এলাকায় ছয় তলা ভবনের নিচ তলায় একটি কক্ষে টর্চার সেল বানিয়ে ছাত্রলীগের এই সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ী, শ্রমিক থেকে সাধারন মানুষের কাছ থেকে চাঁদা দাবী করতো। আর চাঁদা না দিলে কথিত এ আয়না ঘরে নিয়ে গিয়ে অমানসিক নির্যাতন চলাতো তারা। তাদের ভয়ে সাধারণ মানুষ তটস্থ থাকতো। যারা প্রতিবাদ করার চেষ্টা করতেন তাদেরকেও জানে মেরে ফেলার হুমকি দিতো। এসব অপকর্মের মুল হোতা হচ্ছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতাব্বর ও সাংগঠনিক সম্পাদক ছাওয়াল উদ্দিন। এ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শুধু চাঁদাবাজি নয় তারা স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের ইভটিজিং, প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি, গ্যাংদের নিয়ে আড্ডাবাজি, সীমান্ত পথ ব্যবহার করে ভারতীয় সিগারেট বিক্রিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন। তবে এর মধ্যে আনোয়ার হোসেন কায়সার সম্প্রতি চট্টগ্রাম থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। অপর অভিযুক্তরা সরকার পতনের পর পর এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। রোববার সকালে আলম আলম ডক ইয়ার্ড এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের টর্চার সেলের স্থানটি সরেজমিনে দেখাতে গণমাধ্যম কর্মীদের নিয়ে যান ভূক্তভোগী ও এলাকাবাসীরা। তবে সরেজমিনে ছাত্রলীগের টর্চার সেলের বা কথিত আয়না ঘরের কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে। কক্ষের মধ্যে শুধু টেবিল চেয়ার ও বেঞ্চ দেখা গেছে।


ভক্তভোগী ও ভ্যান চালক মোঃ জাহাঙ্গীর জানান, আওয়ালীগ সরকার পতনের আগে হাবিবুর রহমান বাপ্পী, তার দুই ভাই ও আনোয়ার হোসেন কায়সার তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে টর্চার সেলের কক্ষে তাকে গামছা দিয়ে বেধে রাখে ফেলে রাখে। রাত দুটার দিকে চার লাখ টাকা দেওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেয়। অপর ভুক্তভোগী রেজাউল করিম জানান, আলম ডক ইয়ার্ডের নির্মানাধীন ভবনের শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল হাতিয়ে নেয় ছাত্রলীগের কায়সার ও রাকিব। পরে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে ও তাকে নানান হয়রানী করে। ভূক্তভোগী ও দোকানদার আব্দুল হক জানান, মোদির দোকানের মালামাল নষ্ট করে দেওয়াসহ নানান হয়রানী করেছে ছাত্রলীগের কায়সার ও রাকিব। যার কারণে দোকান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। ভবিষ্যতে যাতে আর যেনো কেউই এ ধরনের ঘটনার সম্মুখীন না তার জন্য প্রশাসনের কাছে বিচার দাবী জানান তিনি। ঠিকাদার রবিউল হোসেন বাবলু জানান, গত বছর এপ্রিল মাসে কায়সার,বাপ্পীসহ ১০ থেকে ১২ জনের একটি গ্যাংক তার নির্মানাধীন ভবনের শ্রমিকদের মারধর ও টাকা পয়সা কেড়ে নিয়েছে। এসবের অপকর্মের মুল হোতা হচ্ছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ছাওয়াল উদ্দীন। তার নেতৃত্বে এসব চাঁদাবাজীসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড হতো। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলেও কোন বিচার পাননি। আরেক ভূক্তভোগী বদীউল আলম জানান,২০১৬ সালের দিকে আলম ডক ইয়ার্ডের তার বাড়ী নির্মাণের সময় বাপ্পী, কায়সার,রাকিবসহ অন্যান্যরা তার কাছ থেকে ৫লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কাজ বন্ধ করে দেয় ও তিন শতাংশ জায়গাও কেড়ে নেয়। তিনি ছাত্রলীগের এসব চাঁদাবাজদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।
রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহম্মেদ বলেন, দেশ ব্যাপী আইন-শৃংখলা সমন্নুত রাখতে জন্য বিশেষ অভিযান চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাঙ্গামাটিতেও বিশেষ অভিযান চলমান অবস্থায় বিভিন্ন আসামী গ্রেফতার ও তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের হয়েছে। তিনি আরো জানান, এসব ঘটনার বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions