খাগড়াছড়ি:- খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশের মূল্যবান গাছ কেটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। সাম্প্রতিক সময়ে হরতাল ও অবরোধে এসব গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করাসহ স্থানীয়দের বিরুদ্ধে গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। তবে এসবের জন্য সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন অনেকে। এদিকে এসব কাটা গাছের একটি অংশ বেচা-কেনায় খোদ সড়ক ও জনপথের চালক-সহকারীর জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, স্থানীয় একাধিক চক্র বিভিন্ন সময় সড়কের এসব গাছ কেটে নেয়। গত এক-দুই বছরে সড়কের পাশের প্রায় ২০০ শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধী ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের ডাকা হরতাল ও অবরোধে একসঙ্গে বেশি গাছ কাটায় বিষয়গুলো প্রকাশ্যে আসে। সব শেষ ১৮ ডিসেম্বর একটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের ডাকা হরতালে ১১টি গাছ কেটে রাস্তা অবরোধ করে দুর্বৃত্তরা।
অভিযোগ পর্যালোচনা ও সরেজমিনে দেখা গেছে, খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কের স্বাগতম এলাকা থেকে মানিকছড়ি উপজেলার শেষাংশ পর্যন্ত ১৪-১৫ কিলোমিটার রাস্তাসহ জেলার পুরো সড়কের দুই পাশ সেগুন, মেহগনি, রেইনট্রি গাছ, কড়াই, গামারী, কৃষ্ণচূড়া, সোনালুসহ বিভিন্ন মূল্যবান গাছ-গাছালিতে ভরপুর। প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে নানা সময়ে সৃজিত এবং প্রাকৃতিকভাবে এসব গাছ বড় হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে হরতাল ও অবরোধে রাতের আঁধারে সড়কের পাশের এসব মূল্যবান গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করা হয়।পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সড়কে ফেলা গাছ সরিয়ে দিলেও কাটা গাছগুলো সড়কের পাশেই অরক্ষিত থেকে যায়। পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে সড়ক ও জনপথের কিছু কর্মচারী এসব গাছ বিনা টেন্ডারে বিক্রি করে দেন।
এদিকে সম্প্রতি মানিকছড়ি সড়ক ও জনপথ অফিসের চালক-সহকারী মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে সড়কের মূল্যবান গাছ, পুরোনো বেইলি ব্রিজের সরঞ্জামাদি বিক্রি অভিযোগ উঠে। মো. কামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সড়ক ও জনপথ বিভাগে জনবলের অভাবে নানা সময়ে দুর্বৃত্তদের কাটা গাছ সংগ্রহের অভাবে বেহাত বা চুরি হয়।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের মানিকছড়ি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী জুয়েল দে বলেন, ‘নানা সময়ে হরতাল, অবরোধে দুর্বৃত্তরা সড়কের পাশের মূল্যবান গাছ অবাধে কেটে ফেলে। জনবলের অভাবে সড়ক বিভাগ এসব গাছ যথাসময়ে সংরক্ষণ করতে না পারায় তা গাছ ব্যবসায়ী সংশ্লিষ্টরা সেসব কাটা গাছ সরিয়ে নেয়। তবে অফিসের কোনো কর্মচারী এ ধরনের কাজে জড়িত থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন থেকে সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় সড়ক ও জনপদ বিভাগকে আরও সচেতন করা হবে।’