ডেস্ক রির্পোট:- সাদা পোশাকধারী কয়েকজন ব্যক্তি ধানম-ি এলাকা থেকে এক যুবককে তুলে নিয়ে তার ঠোঁট অবশ করা ছাড়াই সেলাই করে দেয়। এক ব্যক্তিকে আটক করে যৌনাঙ্গ এবং কানে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়। এক ভিকটিম নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে উদ্ধার করে সেখানেই হত্যা করা হয়। নির্যাতনের ভয়াবহ এসব বর্ণনার খবর উঠে এসেছে গুম কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে।
গত শনিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের কাছে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দেয় গুম সম্পর্কিত তদন্ত কমিশন। সেই প্রতিবেদনের প্রকাশযোগ্য অংশ গণমাধ্যমকে সরবরাহ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। সেখানে গুম ও নির্যাতনের চিত্র পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গুমের ঘটনা শুধু অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়, বরং আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ বিশেষ করে ভারতীয়দের জড়িত থাকার কথা কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
কমিশনের তদন্ত, ঘটনায় সম্পৃক্ত কর্মকর্তা ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের বয়ানে উঠে এসেছে গুম ও নির্যাতনের নানা লোমহর্ষক বর্ণনা। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত গত ১৫ বছরের এক হাজার ৬৭৬টি জোরপূর্বক গুমের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে কমিশন পর্যালোচনা করেছে ৭৫৮টি অভিযোগ।
অভিযোগের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ ১৩০টি গুমের ঘটনা ঘটেছে এবং ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত ২১টি অভিযোগ জমা পড়েছে। প্রতিটি অভিযোগে অন্তত চারটি বৈশিষ্ট্য থাকায় এসব ঘটনাকে গুম হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে কমিশন। সেগুলো হলো, ভিকটিমের স্বাধীনতা হরণ, রাষ্ট্রীয় বাহিনী বা কর্তৃপক্ষের ঘটনার সাথে জড়িত থাকা, ভিকটিমের অবস্থান সম্পর্কে তার পরিবার বা সমাজকে না জানানো এবং ভুক্তভোগীকে কোনো আইনি সুরক্ষা না দেওয়া। অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যা ও মুক্তি এই পাঁচটি ভাগে সুপরিকল্পিত ও সুশৃঙ্খল উপায়ে গুমের ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাউকে গুম করার ক্ষেত্রে দুই ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হতো। অনেক সময় প্রথমে কাউকে আটক করে নির্যাতন করে অন্যদের নাম আদায় করা হতো। এরপর তাদেরও ধরে এনে নির্যাতন করা হতো। পরে এদের সবাইকে গুম করা হতো। এছাড়া রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি বা নেতার সরাসরি নির্দেশেও গুম ও নির্যাতন করা হতো। উদাহরণ হিসেবে নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার সময় তৎকালীন র্যাব কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদের স্বীকারোক্তির কথা তুলে ধরা হয়েছে।
গুমের ক্ষেত্রে ভিকটিমদের অবস্থান চিহ্নিত করতে মোবাইল প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হতো বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই)-এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ন্যাশনাল মনিটরিং সেন্টার (এনএমসি) এবং পরবর্তীতে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) মোবাইল নজরদারি পরিচালনা করেছে বলে কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে আসে।
এরপর টার্গেট করা ব্যক্তিকে অপহরণ করা হতো। অপহরণকারীরা নিজেদের প্রশাসনের লোক বা আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর সদস্য হিসেবে পরিচয় দিতেন বলে তদন্তে দেখতে পেয়েছে কমিশন। সাধারণত সাদা পোশাকে ভুক্তভোগীদের তুলে নেওয়া হতো এবং নিজেদের পরিচয় গোপন করার জন্য এক সংস্থা আরেক সংস্থার নাম ব্যবহার করতো বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) অভিযান চালিয়ে নিজেদের র্যাব বলে দাবি করতো বা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব) নিজেদের ডিজিএফআই হিসেবে পরিচয় দিতো।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অপহরণের ঘটনা ঘটত সাধারণত রাতের বেলা। ভিকটিমের বাড়ি বা রাস্তা থেকে তাদের জোরপূর্বক ‘হায়েস’ ধরনের বড় গাড়িতে তুলে নেওয়া হতো। গাড়িতে তোলার পরপরই ভিকটিমদের চোখ বাঁধা হতো এবং হাতকড়া পরানো হত। অপহরণের পুরো ঘটনাটি এতটাই দ্রুত ঘটত যে আশপাশে থাকা মানুষ বুঝতেও পারতে না যে কাউকে অপহরণ করা হয়েছে।
আটক করার পর ভুক্তভোগীদের সাধারণত গোপন অন্ধকার কক্ষে রাখা হতো এবং সেখানেই তাদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন চালানো হতো বলে অভিযোগ করেছে কমিশন। আটকের সময়কাল কখনো ৪৮ ঘণ্টা থেকে কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাস পর্যন্ত হতো বলে কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এমন কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে কমিশন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে এমন আটটি গোপন কারাগারের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছে। যেগুলো ডিজিএফআই, র্যাব, কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) পরিচালনা করত।
কমিশন ইতিমধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অফিস পরিদর্শন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে র্যাব ইউনিট, ডিবি সদর দপ্তর এবং অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অফিস। এসব আটককেন্দ্রের মধ্যে কাঠামোগত মিল পাওয়ার কথা জানিয়েছে কমিশন। এ ধরনের মিল থেকে কমিশন ধারণা করছে যে, পুরো বিষয়টি কোনো একটি কেন্দ্র থেকে পরিকল্পনা ও তদারকি করা হতো। কমিশনের তদন্তে বলা হয়েছে, কিছু কারাগার এখনো অক্ষত রয়েছে, অনেকগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।
আটক অবস্থায় ভুক্তভোগীদের ওপর নানা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বর্ণনা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। কিছু নির্যাতনের ধরন ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ, যেমন পেটানো, বৈদ্যুতিক শক দেওয়া। সাধারণত র্যাব ও ডিজিএফআইয়ের বিভিন্ন স্থাপনায় এসব নির্যাতনের সব বন্দোবস্ত ছিল বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। বিশেষ করে তবে সেনাবাহিনীর পরিচালিত বন্দিশালাগুলোয় নির্যাতনের জন্য বিশেষ যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হতো, যার মধ্যে ছিল সাউন্ডপ্রুফ কক্ষ এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের জন্য ডিজাইন করা বিভিন্ন যন্ত্র।
কমিশন দুটি নির্যাতনের উদাহরণ দিয়েছে। ২০১০ সালে, ঢাকার ধানম-ি থেকে র্যাব এক যুবককে অপহরণ করে কোনো অ্যানেসথেসিয়া ছাড়া ঠোঁট সেলাই করে দেয়। আরেক ভুক্তভোগীর ওপর নানা শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়, বিশেষ করে তার কানে ও যৌনাঙ্গে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়। গুমের শিকারদের বেশিরভাগ সময় হয় মেরে ফেলা হতো, না হলে অপরাধী হিসাবে বিচার ব্যবস্থায় সোপর্দ করা হতো। আবার অনেক ভিকটিমদের কোনো অভিযোগ ছাড়াই ছেড়ে দেওয়া হতো। গুমের শিকার অনেকেই হত্যার শিকার হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে গুম কমিশন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভিকটিমদের মাথায় গুলি করে মেরে ফেলা হতো। এরপর মৃতদেহ সিমেন্টের ব্যাগের সাথে বেধে নদীতে ফেলে দেওয়া হতো যেন মৃতদেহ ডুবে যায়। যেসব নদীতে এসব লাশ গুম করা হতো, তার মধ্যে রয়েছে বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদী। সেজন্য কাঞ্চন ব্রিজ ও পোস্তগোলা ব্রিজ ব্যবহার করা হতো।
এক সাক্ষীর বরাতে কমিশন জানিয়েছেন, র্যাবের একটি ্রওরিয়েন্টেশনগ্ধ সেশনে তাকে দুজন ভিকটিমকে গুলি করে হত্যার ঘটনা দেখানো হয়েছিল। এক সেনা সদস্য, যিনি র্যাবের গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত ছিলেন, তার বরাতে গুম কমিশন জানিয়েছে যে এক ভুক্তভোগী নদীতে ঝাঁপিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাকে উদ্ধারের পর, সেখানেই গুলি করে হত্যা করা হয়। আরেকটি ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে, এক সেনা সদস্য জানান, তাকে একটি লাশ নিয়ে ঢাকার রেললাইনের ওপরে রেখে ট্রেনের অপেক্ষা করতে বলা হয় যেন ট্রেনের চাপায় লাশটি ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এমনকি আরেক ভুক্তভোগীকে সড়কে চলন্ত গাড়ির সামনে ফেলে দেওয়ার হলেও গাড়িটি পাশ কেটে যাওয়ায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
গুমের ঘটনাগুলো বিভিন্ন বাহিনী আলাদাভাবে ও সুসংগঠিত উপায়ে পরিচালনা করতো বলে গুম কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে অর্থাৎ, এক দল অপহরণ করলে, অন্য দল আটকের কাজ করতো এবং তৃতীয় দল হত্যা বা মুক্তি দিতো। অনেক সময় যারা এসব কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন তারা জানতেনও না তারা কাকে এবং কেন হত্যা বা নির্যাতন করছে। একজন ভিকটিমের ফোন রেকর্ডের বরাতে প্রতিবেদনে জানানো হয়, তাকে প্রথমে ডিজিএফআই-এর একটি সেলে রাখা হয়, এরপর ঢাকার র্যাবের বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষে তাকে চট্টগ্রামে র্যাব-৭-এ গ্রেফতার দেখানো হয়। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব কিছুর পেছনে একটাই উদ্দেশ্য ছিল ভিকটিমদের নির্মূল করা এবং লাশ এমনভাবে সরানো যেন সেগুলো পুনরুদ্ধার বা শনাক্ত করা না যায়। তবে যারা গুম হওয়ার পর ফিরে এসেছেন তাদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আরো নানা তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে কমিশন। কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গুমের শিকারদের মধ্যে ৭৩% আবার জীবিত ফিরে এসেছেন, তবে ২৭% এখনো নিখোঁজ।
ফিরে আসা ভুক্তভোগীদের অনেক জানিয়েছেন যে, গুম নির্যাতন ও বন্দি রাখার পর তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে মধ্যে রয়েছে: সন্ত্রাসবাদ, অস্ত্র আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন বা ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অধীনে বিভিন্ন মামলা। আবার গণমাধ্যমে নেতিবাচক খবরের কারণে ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবার সমাজে চরম অবমাননার শিকার হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। কমিশন বর্তমানে এই বিষয়গুলোর ওপর গভীর তদন্ত ও সঠিক তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের কথা জানিয়েছে। যা ভবিষ্যতে আরো বিস্তারিত আকারে প্রকাশ করা হবে।
ভারতের সম্পৃক্ততা
কমিশনের তদন্তে উঠে এসেছে যে জোরপূর্বক গুমের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে র্যাব, পুলিশের ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ (ডিবি), এবং সিটিটিসি (কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) ইউনিটগুলো প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। অনেক ক্ষেত্রেই জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এবং ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স)-এর নামও উঠে এসেছে। নি¤œপদস্থ নিরাপত্তাকর্মীদের দাবি অনুযায়ী, তারা অনেক ক্ষেত্রেই জানতেন না যে, তারা কাকে আটক করেছে বা কেন করেছে। অপরদিকে, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, পুরো অপারেশন তাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়েছে। দেশের এবং আন্তর্জাতিক আইনে এক্ষেত্রে শাস্তির বিধান থাকলেও অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা দেশের বাইরে পালিয়ে গিয়ে জবাবদিহিতা এড়ানোর চেষ্টা করেছেন বলে কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশে গুমের ঘটনা শুধু অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়, বরং আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ- বিশেষ করে ভারতীয়দের জড়িত থাকার কথা কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সুখরঞ্জন বালি এবং বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে গুমের পর ভারতে স্থানান্তরের ঘটনা এখানে উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে। এছাড়া বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হাম্মাম কাদের চৌধুরী তার বন্দিশালায় হিন্দি ভাষাভাষী লোকদের কথা শোনার কথা কমিশনকে জানিয়েছেন।
তার দাবি মুক্তির সময় তাকে বলা হয়েছিল, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে দ্বিতীয় সুযোগ দিচ্ছেন, তবে কিছু শর্ত রয়েছে। আপনাকে অবশ্যই রাজনীতি থেকে বিরত থাকতে হবে, দেশ ত্যাগ করতে হবে।
অন্যদিকে সালাহউদ্দিন আহমেদকে ২০১৫ সালে ঢাকার উত্তরা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং পরবর্তীতে তাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তার অভিজ্ঞতা থেকে জানা গেছে, তাকে যে নির্জন স্থানে রাখা হয়েছিল সেখানে টিএফআই (টাস্ক ফোর্স অব ইন্টারোগেশন) লেখা কম্বল ছিল, সেই সময়ে র্যাব সদর দপ্তরের তত্ত্বাবধানে টিএফআই পরিচালিত হতো। কমিশনের দাবি, র্যাব গোয়েন্দা শাখা যারা এ ধরনের অভিযানে সক্রিয় ছিল তারা জানিয়েছে যে ভারত ও বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বন্দি বিনিময় করত। বাংলাদেশের গুমের ঘটনা যে আন্তর্জাতিক ও সুসংগঠিত চক্রের অংশ এসব ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, রিপোর্টটি জমা দেওয়ার পর র্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বাহিনীটি বিলুপ্তির সুপারিশ করে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। এছাড়া আওয়ামী লীগের শাসনামলে ‘গুমের নির্দেশদাতা’ হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছে তারা।
গুম বিষয়ক কমিশনের প্রধান মইনুল ইসলাম চৌধুরী সামনের বছরের মার্চে আরো একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে কমপক্ষে আরো এক বছর সময়ের প্রয়োজন বলে তিনি জানিয়েছেন।