ডেস্ক রির্পোট:- আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধনী-২০২৪ অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ থেকে গত রোববার রাতে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়।
সংশোধনীতে অভিযুক্ত, আসামি ও সাক্ষীর অধিকার সংরক্ষণ, ক্ষতিপূরণ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অপরাধের বিরুদ্ধে বিচারের বিধান থাকলেও রাখা হয়নি রাজনৈতিক দলের বিচার বিধান। এতে ‘মেম্বার অব দ্য ডিসিপ্লিনারি ফোর্স’ কথাটি সংযুক্ত করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ট্রাইব্যুনালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সংশোধনীর সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম।
তিনি জানান, সংশোধনীতে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এখানে সব বিষয় আন্তর্জাতিক মানের করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নতুন সংশোধনের মাধ্যমে ন্যায়বিচারের স্বার্থে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভুক্তভোগী ও সাক্ষীর সুরক্ষার মানদণ্ড উন্নীত করার পাশাপাশি তাদের জন্য ক্ষতিপূরণের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে এ আইনের অধীনে অপরাধী কিংবা রাষ্ট্রীয় সম্পদ থেকে সরকার ভুক্তভোগী, সাক্ষী কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ দিতে পারবেন।’
তিনি বলেন, সংশোধনীর মাধ্যমে ‘মেম্বার অব দ্য ডিসিপ্লিনারি ফোর্স’ কথাটি সংযুক্ত করা হয়েছে, যার অধীনে থাকবে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী ছাড়াও পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, গোয়েন্দা বাহিনী, আনসার বা আইনের দ্বারা সৃষ্ট অন্য কোনো ফোর্স। সেই সঙ্গে নতুনভাবে গুম বা এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, এখন থেকে বিদেশে থেকেও এ আইনের অপরাধ করলে বিচার করা যাবে। আবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থেকে যদি কোনো বিদেশিও এ অপরাধ করে থাকে, তার বিচার করা যাবে। এ আইনের অধীনে বিচারযোগ্য অপরাধগুলোর বিচারই কেবল এই ট্রাইব্যুনালে বিচার করা হবে। আর যদি কোনো অপরাধ এই আইনের অধীনে বিচারযোগ্য না হয়, সে ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল আদেশ দিয়ে তা সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠাতে পারবেন।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এ বি এম সুলতান মাহমুদ বলেন, সংশোধনীতে গণহত্যার অর্থ থেকে রাজনৈতিক দল বাদ দিয়ে প্ররোচনা বা উস্কানি শব্দটি যুক্ত হয়েছে। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলতে নতুন কিছু বিষয় যোগ হয়েছে, যেমন– জনসংখ্যার জোরপূর্বক স্থানান্তর, যৌন শোষণ, জোরপূর্বক গুম, মানব পাচার, যৌন দাসত্ব, জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তি, জোরপূর্বক গর্ভধারণ, জোরপূর্বক বন্ধ্যত্বকরণ ইত্যাদি। এ ছাড়া অপরাধের দায়ভারের বিষয়ে বিশদ ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ধারা ৯-এ অডিও ভিজ্যুয়াল শুনানি এবং ধারা ১১-এ অপরিহার্য পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল শুনানির বিধান বর্ণিত হয়েছে। সংশোধনীতে বিদেশি পর্যবেক্ষক থাকার অনুমতির বিষয় এবং ডিজিটাল ডিভাইস ও মাধ্যম ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা যাবে কিনা, সে বিষয়েও উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে ২০ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আইসিটি আইনের সংশোধনীর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।