স্পোর্টস ডেস্ক:- ইতিহাস গড়ার ম্যাচে বেঞ্চে বসে শুরুতেই দলকে দুই গোল হজম করতে দেখেলেন লিওনেল মেসি। তিন মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোলে দলকে লড়াইয়ে ফেরালেন লুইস সুয়ারেজ। পরে বদলি নেমে ভোজবাতির মতো ম্যাচের চিত্র পাল্টে দিলেন মেসি। ১১ মিনিটের ব্যবধানে করলেন হ্যাটট্রিক। নিউ ইংল্যান্ড রেভুলেশনকে উড়িয়ে তাদেরই গড়া রেকর্ড ভেঙে মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) এক মৌসুমে সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনের রেকর্ড গড়ল ইন্টার মায়ামি।
ঘরের মাঠ ফ্লোরিডার চেস স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রোববার ভোরে লিগ মৌসুমে নিজেদের শেষ ম্যাচে নিউ ইংল্যান্ডকে ৬-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে মায়ামি। দলের জয়ে অন্য গোলটি করেন বেঞ্জামিন ক্রিমাচি।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আর্জেন্টিনার হয়ে বলিভিয়ার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করার চার দিনের মাথায় ক্লাবে ফিরেই আবারও হ্যাটট্রিক করলেন মেসি। মায়ামির হয়ে এটি তার প্রথম হ্যাটট্রিক।
মায়ামির ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলও এখন ফুটবল জাদুজরের, ৩৩টি। এখানে তিনি ছাড়িয়ে গেছেন জাতীয় দলের সারেব সতীর্থ গনসালো হিগুয়াইনকে।
এ নিয়ে তিনটি ভিন্ন দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা মেসি। বার্সেলোনার হয়ে ৬৭২টি, আর্জেন্টিনার হয়ে ১১২টি ও মায়ামির হয়ে করেছেন ৩৩ গোল।
কিছু বুঝে উঠার আগেই গোল হজম করে বসে মায়ামি। ম্যাচের ৯০ সেকেন্ডের মাথায় লুকা লাঙ্গনির গোলে এগিয়ে যায় নিউ ইংল্যান্ড। স্বাগতিক সমর্থকদের স্তব্ধ করে ৩৪তম মিনিটে ব্যবধান ২-০ করে দেন ডিলান ব্যারেরো। এই গোলে অবশ্য একই সাথে মায়ামি গোলরক্ষক ও ডিফেন্ডারদের ভুল ছিল হাস্যকর। কাছ থেকে নেওয়া ডিলানের শট গোলরক্ষক ড্রাক ক্যালেন্ডারের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যায়। তবে পিছনেই গোললাইনে ছিলেন এক ডিফেন্ডার, বল ফেরাতে পারেননি তিনিও।
৪০তম মিনিটে ব্যবধান কমান সুয়ারেজ। তিন মিনিটের মাথায় দারুণ ফিনিশিংয়ে স্কোরলাইনে টানেন সমতা। মায়ামির হয়ে মৌসুমে এটি উরুগুয়ান তারকার ২০তম গোল। লিগ মৌসুমে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
৫৬তম মিনিটে দুইবার গোলবঞ্চিত হন সুয়ারেজ। প্রথমে সেট পিস থেকে নেওয়া হেড ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক, সেই বলই ডি বক্সে জটলায় কয়েকজনের পা হয়ে পেয়ে যান উরুগুয়ান তারকা। এবার তার শট পোস্টে বাধা পায়।
পরের মিনিটে হুলিয়ান গ্রেসেলের বদলি নামেন মেসি। নেমেই রাখেন প্রভাব। মূলত তার গড়ে দেওয়া বলেই জর্দি প্রথমবারের মতো এগিয়ে যায় মায়ামি।
ডি বক্সের ঠিক বাইরে থেকে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের মাথার উপর দিয়ে জর্দি আলবাকে পাস দেন মেসি। আলবার ব্যকপাস থেকে সহজ ফিনিশিংয়ে দলকে এগিয়ে নেন ক্রিমাচি।
৭৮তম মিনিটে মেসি-সুয়ারেজ যুগলবন্দীতে বল নিয়ে এগিয়ে যায় মায়ামি। ডি বক্সের বাইরে থেকে মেসির কোনাকুনি শটে ব্যবধান হয়ে যায় ৪-২।
দুই মিনিটের মাথায় আলবার থ্রু বল পেয়ে দুই ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে গোলরক্ষককেও ফাঁকি দেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার।
৮৯তম মিনিটে সুয়ারেজের দুর্দান্ত ব্যাক ভলি পাস থেকে টোকায় হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন মেসি। লিগ মৌসুমে ১৯ ম্যাচে মেসির এটি ২০তম গোল। মৌসুমে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সাথে ১৬টি অ্যাসিস্টও আছে এই ৩৭ বছর বয়সী মহাতারকার।
মৌসুমে সুয়ারেজের গোলও ২০টি, ২৭ ম্যাচে অ্যাসিস্ট ৯টি। ম্যাচ বেশি খেলায় মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় তিনি তিনে। ডিসি ইউনাইটেডের ক্রিস্তিয়ান বেনতেকে ২৩ গোল করে আছেন এই তালিকায় সবার উপরে।
এক মৌসুমে আগে সর্বোচ্চ ৭২ পয়েন্টে রেকর্ড ছিল নিউ ইংল্যান্ডের। তাদের হারিয়েই এবার মায়ামি রেকর্ড ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে মৌসুম শেষ করল।
সব মিলিয়ে ৩৪ ম্যাচে ২২ জয় ও ৮ ড্রয়ে ইস্টার্ন কনফারেন্সের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দল মায়ামি।